ছবি: সংগৃহীত
সুস্থ থাকতে হলে পর্যাপ্ত ঘুমের বিকল্প নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। তবে অনেকেরই ঘুমের সমস্যা হয়, যা শরীর ও মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ভালো ঘুম নিশ্চিত করতে কিছু বিষয় মেনে চলা জরুরি। আসুন জেনে নিই, ভালো ঘুমের জন্য কী করবেন।
নিশ্চিত করুন আপনি সত্যিই ক্লান্ত
আপনি যদি সত্যিই ক্লান্ত হয়ে বিছানায় যান, তাহলে সহজেই ঘুম চলে আসবে। তবে একজনের ঘুমের স্বাভাবিক সময় অন্যজনের জন্য উপযোগী নাও হতে পারে। যদি আপনার ঘুম আসতে দেরি হয়, তাহলে দিনের বেলায় যতটা সম্ভব প্রাকৃতিক আলোতে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন। ঘুম থেকে ওঠার পর থেকেই সূর্যালোক গ্রহণ করা ভালো। এছাড়া দিনের বেলা নিয়মিত ব্যায়াম করুন, তবে ঘুমানোর অন্তত চার ঘণ্টা আগে ব্যায়াম করা এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে নিঃসৃত অ্যাড্রিনালিন ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
খাবারের দিকে নজর দিন
ঘুমানোর আগে গুরুপাক ও চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। ভালো ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি বিছানায় যাওয়ার অনেক আগেই শুরু হয়। ঘুমানোর অন্তত ৬ ঘণ্টা আগে থেকে ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় (যেমন- চা, কফি, কোক-পেপসি) পরিহার করুন, কারণ ক্যাফেইন শরীরে প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে থাকতে পারে।
অনেকেই খালি পেটে ঘুমাতে পারেন না, আবার ভরপেট খেলে ঘুমের অসুবিধা হয়। তাই ঘুমানোর প্রায় চার ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিন এবং ভারী বা চিনি-যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। এতে রাতে জেগে ওঠার সমস্যা কমবে।
ঘুমের আগে রিল্যাক্স করুন
ঘুমানোর আগে শরীর ও মনকে চাপমুক্ত করা জরুরি। প্রতিদিন ঘুমানোর আগে এমন কিছু করুন, যা আপনার মনকে শিথিল করবে। এটি নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত করুন, যাতে আপনার শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবে বুঝতে পারে যে ঘুমানোর সময় হয়েছে। ধ্যান, হালকা সংগীত শোনা বা বই পড়া এই প্রক্রিয়ায় সহায়ক হতে পারে।
ঘুমের জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করুন
ঘুমানোর উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান, ঘুমের আগে চা-কফি পরিহার করুন এবং ঘরের পরিবেশের দিকে খেয়াল রাখুন। ঘর অন্ধকার, ঠান্ডা ও নিরিবিলি রাখার চেষ্টা করুন। শোবার ঘরে অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না রাখাই ভালো।
ঘুমের এক ঘণ্টা আগে থেকে টিভি, স্মার্টফোন ও অন্যান্য স্ক্রিনযুক্ত ডিভাইস ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। কারণ এসব ডিভাইস থেকে নীল আলো নিঃসৃত হয়, যা মস্তিষ্ককে সজাগ রাখে এবং ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়।
ঘুমকে অগ্রাধিকার দিন
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। নিয়মিত পাঁচ ঘণ্টার কম ঘুম হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, কম ঘুম দীর্ঘমেয়াদে আয়ুষ্কালও কমিয়ে দিতে পারে। তাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান এবং নিশ্চিত করুন যেন প্রতি রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম হয়।
ভালো ঘুম নিশ্চিত করতে এই অভ্যাসগুলো গড়ে তুলুন এবং সুস্থ জীবন উপভোগ করুন।
তাবিব