ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯ মাঘ ১৪৩১

 চা খাওয়ার আগে যেসব খাবার ভুলেও খাবেন না!

প্রকাশিত: ০৮:৪৭, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

 চা খাওয়ার আগে যেসব খাবার ভুলেও খাবেন না!

সংগৃহীত

চা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু, আপনি জানেন কি? চা খাওয়ার আগে বা পরে কিছু খাবার খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সঠিক সময়ে চা খাওয়া এবং কিছু খাবারের সঙ্গে একসাথে চা না খাওয়ার মাধ্যমে আপনি অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারেন। 

হয়তো আপনার দেহে এমন কিছু রোগ হয়েছে যা আপনার চায়ের সঙ্গে খাওয়া খাবারের কারণেই হচ্ছে। আবার চা কখন খেতে হবে, কোন সময়ে চা খেলে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয় এ সম্পর্কে কি আপনার পরিপূর্ণ তথ্য জানা আছে?

এবার আমরা জানাবো চা খাওয়ার আগে কোন খাবারগুলো কখনোই খাবেন না, যাতে আপনি সুস্থ ও সতেজ থাকতে পারেন।

প্রথমেই বলে রাখি, হয়তো আপনি সকালবেলা নাস্তা খাওয়ার পরে এক কাপ চা খেয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু এই নাস্তা খাওয়ার পর এই চা খাওয়া আপনার দেহের জন্য অনেকটাই ক্ষতিকর। অনেক নিউট্রিশনিস্টরা এটাকে স্লো পয়জনও বলে থাকেন।

আবার অনেকে খালি পেটে কিছু না খেয়ে এক কাপ চা খাচ্ছে। আবার কেউ কেউ আছেন যারা খালি পেটে দুধ চা পর্যন্ত খেয়ে নিচ্ছেন। খালি পেটে দুধ চা খাওয়া এতটাই ক্ষতিকর যে তা আপনার দেহের বিভিন্ন রোগের জন্ম দেবে।

প্রাথমিকভাবে আপনার শরীরে অ্যাসিডিটি, আলসার পর্যন্ত নিয়ে যাবে। বদহজম, টক ঢেকুর, হাত-পায়ের জয়েন্টের ব্যথা সৃষ্টি করবে। বিভিন্ন সময় ব্যথার কারণে ভালোভাবে হাঁটতে না পারার সমস্যাটা এই খালি পেটে চা খাওয়ার কারণে হয়ে থাকে। তো প্রশ্ন আসতে পারে, চা টা খাবো কখন?

এ জন্য বলে রাখি, চা খাওয়ার ভালো সময় হল নাস্তা খাওয়ার ১ ঘণ্টা পরে আপনাকে চা টা খেতে হবে এবং কোনভাবেই নাস্তা করার আধা ঘণ্টার মধ্যে চা খাবেন না। এতে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আপনার কিডনি সমস্যা হবে, হার্টের সমস্যা হবে। হার্টে ব্লক ধরা পড়তে পারে। এছাড়াও বহুবিধ জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

দুধ হল ক্যালসিয়াম এবং আয়রন সমৃদ্ধ একটি খাবার। এই ধরনের ক্যালসিয়াম ও আয়রন সমৃদ্ধ খাবার এর সাথে কখনোই চা খাওয়া যাবে না। কারণ চায়ের মধ্যে এমন কিছু যোগ রয়েছে যা অক্সালেট নামে পরিচিত। এই ধরনের যোগ আপনার ক্যালসিয়াম ও আয়রনের শোষণে বাধা দিয়ে থাকে, সেই সঙ্গে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে থাকে।

তাই অনেকেই দুধ চা খেয়ে ভাবেন, দুধের পুষ্টি পেলাম, চায়ের গুণাগুণ পেলাম। আসলে একদম ভুল ধারণা। চা এবং দুধ একসাথে মিশ্রিত হওয়ার পরে যে বিক্রিয়াটা হয়, তাতে দুধ এবং চায়ের কোনও পুষ্টি উপাদানই থাকে না, বরং সেটা বিষাক্ত হয়ে যায়।

এছাড়া চায়ের সঙ্গে অনেকে বাদাম খেয়ে থাকে। হয়তো চিনাবাদাম ভাজা বা যে কোনো বাদাম ভাজা আমরা চায় সঙ্গে খেয়ে থাকি। কিন্তু আপনি যদি চায়ের পাশাপাশি বাদাম খান তাহলে কিন্তু বাদামের গুণগত মান আপনার শরীরে প্রবেশ করবে না। বরং উল্টো ফল হবে। এর সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে এই খাবারগুলো চায়ের পাশাপাশি খেলে গ্যাস, অ্যাসিডিটি, বদহজম হতে পারে। এমনকি থাইরয়েডের মতো রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

তাই এই খাবারগুলো অন্তত আধাঘণ্টা গ্যাপ দিয়ে খাওয়া উচিত। মনে রাখবেন, আপনি চায়ের পাশাপাশি এই খাবারগুলো খেলে চা আপনার দেহের অভ্যন্তরে খাবার থেকে প্রাপ্ত জিঙ্ক শোষণে বাধা দিয়ে থাকে। শুধুমাত্র আয়রন ক্যালসিয়াম নয়, যখন আপনার শরীর জিন শোষণে বাধা প্রাপ্ত হবে তখন কিন্তু এমনিতে আপনি দুর্বল হয়ে পড়বেন।

এ ছাড়া বিভিন্ন রোগ আপনার দেহে প্রবেশ করবে। কারণ জিংক আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়। তার পাশাপাশি এটি আমাদের শরীরকে অনেক বেশি মজবুত করে তোলে। পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি আপনি চা খেতে গিয়েই চা যদি আপনার শরীরে পুষ্টিকর খাবার থেকে প্রাপ্ত জিঙ্কের শোষণ বন্ধ করে দেয় তাহলে কখনওই আপনার চায়ের পাশাপাশি এই খাবারগুলো না খেয়ে বরং আধা ঘণ্টা গ্যাপ দিয়ে চা টা খাওয়া উচিত।

সকালে নাস্তা খাওয়ার ১ ঘণ্টা পরে চা খাবেন। বিকেল বেলায় যখন অপেক্ষাকৃত আপনার পেট খালি থাকে তখন চাইলে আপনি এক কাপ চা খেয়ে নিতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি আপনি গ্রিন টি খেতে পারেন। আর দুধটা বোল্ড করে শুধু লাল চা খেতে পারেন। মনে রাখবেন, গ্রিন টি খেলে আপনার হার্টের রোগ হবে না। এছাড়া গ্রিন টি ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, কিডনির সমস্যা থেকে শুরু করে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি, হার্ট, জয়েন্ট, পেশীর ব্যথা, বুড়িয়ে যাওয়া এই ধরনের সমস্যার বিরুদ্ধেও গ্রিন টি কাজ করে।

আর চা খাওয়ার ক্ষেত্রে মিষ্টি চা খাবেন না। চায়ের সঙ্গে চিনি মিশালে চায়ের গুণাগুণ একদমই থাকে না। এটা মারাত্মক ক্ষতিকর। চায়ের সাথে দুধ খাবেন না এবং চা খাওয়ার একঘণ্টার মধ্যে অন্য কোনও খাবার খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।

ব্যাস, এই নিয়মগুলি পালন করলেই আপনি দেখবেন আপনার শরীর থেকে সর্বপ্রথম যে রোগটা বিদায় হবে সেটা হচ্ছে অ্যাসিডিটি। টক ঢেকুর এবং পেটের বিভিন্ন ধরণের সমস্যা থেকে আপনি মুক্তি পেয়ে যাবেন। আর দীর্ঘমেয়াদি আপনার হার্ট ভালো থাকবে। ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং ব্লাড কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে আসবে। চেষ্টা করুন প্রতিদিন কমপক্ষে এক কাপ গ্রিন টি করে খেতে। এতে করে আপনি সারা জীবন অপেক্ষাকৃতভাবে রোগের হাত থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।

সূত্র:https://tinyurl.com/2wzus2t 

 

আফরোজা

×