ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমে সম্প্রতি একটি বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। বিখ্যাত টিকটকার অপু ভাইয়ের ল্যাম্বোরগিনি গাড়ি কেনা নিয়ে তরুণ প্রজন্মের একটি অংশ হতাশা এবং বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছে। অনেক তরুণ এখন মনে করছে, টিকটক বা শর্ট ভিডিও তৈরি করাই তাদের জন্য সহজ আয়ের পথ। এই মানসিকতা তরুণদের সৃজনশীলতা এবং বাস্তবসম্মত লক্ষ্য অর্জনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
তরুণদের মধ্যে হতাশার কারণ হলো, শিক্ষার প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়া এবং সৃজনশীল বা প্রোডাকটিভ কোনো কাজের চেয়ে দ্রুত সফলতার পেছনে ছুটে চলা। অপু ভাইয়ের মতো কয়েকজন সোশ্যাল মিডিয়া তারকার সহজ অর্থ উপার্জনের গল্প দেখে অনেকেই ভাবছে, এই পথেই সাফল্য আসবে।
তবে এই ভাবনা বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খায় না। টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মে যেসব কনটেন্ট ভাইরাল হয়, সেগুলোর পেছনে তেমন কোনো সৃজনশীলতা বা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকে না। টিকটকের সাময়িক জনপ্রিয়তা তরুণদের আসল দক্ষতা বা কর্মজীবনের উন্নতির কোনো নিশ্চয়তা দেয় না। বরং এতে সময়ের অপচয় এবং সামাজিক ও পেশাগত জীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
বিশ্বব্যাপী ফ্রিল্যান্সিং জগতে বাংলাদেশি তরুণদের ব্যাপক সুনাম। অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন, এবং কন্টেন্ট রাইটিংয়ের মতো কাজ করে প্রতি মাসে ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করছে অনেকেই। শুধু তাই নয়, নতুন নতুন স্টার্টআপ গড়ে তোলার মাধ্যমেও সাফল্যের নজির তৈরি করছে তরুণরা।
এ ছাড়া, গেম ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং এবং অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের মতো ক্ষেত্রগুলোতেও বাংলাদেশি তরুণদের চাহিদা বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় গড়ে ওঠা আইটি ট্রেনিং সেন্টার এবং অনলাইন কোর্সগুলোর জনপ্রিয়তাও তরুণদের এ খাতে আগ্রহী করে তুলছে।
একই সঙ্গে, কৃষিভিত্তিক স্টার্টআপ বা গ্রামীণ উদ্যোক্তাবৃত্তি তরুণদের জন্য খুলে দিচ্ছে নতুন দিগন্ত। হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদন করে প্রতি মাসে ভালো আয় হচ্ছে, যা শহরের চাকরির তুলনায় অনেক ভালো।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তরুণরা যদি ডিজিটাল স্কিল ডেভেলপমেন্টে মনোযোগ দেয় এবং নতুন নতুন সৃজনশীল কাজে নিজেদের জড়িত করে, তবে টিকটক বা অন্যান্য অবান্তর মাধ্যমে সময় নষ্ট না করে বড় অর্থ উপার্জনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
নাহিদা