ছবি: সংগৃহীত
বোবা ধরা বা স্লিপ প্যারালাইসিস হল ঘুমানোর সময় বা ঘুম থেকে জাগার সময় অস্থায়ীভাবে নড়াচড়া বা কথা বলার অক্ষমতা। এটি সাধারণত ১ থেকে ২ মিনিট স্থায়ী হয় এবং ভীতিকর হতে পারে, তবে এটি শারীরিকভাবে ক্ষতিকর নয়। তবে, একটি পর্ব চলাকালীন এটি মানসিক চাপের কারণ হতে পারে।
২০২০ সালে আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শিক্ষার্থীদের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা যায়, তিন জনের মধ্যে একজন কমপক্ষে জীবনে একবার স্লিপ প্যারালাইসিসের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তবে, এর জীবনব্যাপী প্রাদুর্ভাব নির্ধারণ করা জটিল। গবেষণা অনুসারে, প্রাদুর্ভাবের হার ৫% থেকে ৬২% পর্যন্ত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের একটি ছোট শহরে এই হার পাওয়া গেছে। তবে, সাম্প্রতিক গবেষণাগুলি স্নাতক শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই হার প্রায় ৩০-৪০% বলে উল্লেখ করেছে। এই বৈচিত্র্যের মূল কারণ হতে পারে ভিন্ন ভিন্ন জনসংখ্যা, আকার এবং সংস্কৃতিতে স্লিপ প্যারালাইসিসের ভিন্ন ভিন্ন প্রকাশ।
কারণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিরা
স্লিপ প্যারালাইসিস সাধারণত নারকোলেপসি বা স্লিপ অ্যাপনিয়া থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি ঘটে। তবে এটি যে কারও ক্ষেত্রে হতে পারে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুমের অভ্যাস, এবং ঘুমানোর সময় ভাঙা ঘুম এর অন্যতম কারণ।
স্লিপ প্যারালাইসিস এড়াতে ঘুমের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস
বিশেষজ্ঞরা সুস্থ ঘুমের অভ্যাস বজায় রাখার পরামর্শ দেন, যা স্লিপ প্যারালাইসিস প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।
নিয়মিত ঘুমের সময়সূচি: প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
আরামদায়ক ঘুমের পরিবেশ: একটি শান্ত এবং অন্ধকার ঘুমের ঘর নিশ্চিত করুন যেখানে কোন বাধা বা বিভ্রান্তি নেই।
ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুন: ঘুমানোর আগে চা, কফি বা ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় পরিহার করুন।
ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার কমান: স্মার্টফোন, ট্যাবলেট বা টিভি ব্যবহার ঘুমের সময়কে পিছিয়ে দিতে পারে। তাই ঘুমানোর আগে এগুলোর ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
মানসিক চাপ কমানো: নিয়মিত মেডিটেশন বা যোগব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে, যা ঘুমের মান উন্নত করতে পারে।
স্লিপ প্যারালাইসিসের সময় অনেকেই অদ্ভুত অনুভূতি, যেমন বুকের ওপর ভারী চাপ বা আশেপাশে কারও উপস্থিতি টের পান। এটি মূলত মস্তিষ্কের বিভ্রান্তির কারণে ঘটে।
পর্যাপ্ত ঘুম (প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৭-৮ ঘণ্টা) নিশ্চিত করা স্লিপ প্যারালাইসিস প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ। যদি স্লিপ প্যারালাইসিস নিয়মিত ঘটে, তাহলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
আপনার ঘুমের অভ্যাস উন্নত করে মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখুন। ভালো ঘুম মানেই ভালো স্বাস্থ্য!
নাহিদা