ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১

কেউ বিশ্বাসভঙ্গকারী হবে, তার কোন আচরণে বুঝবেন?

প্রকাশিত: ০১:২৪, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫

কেউ বিশ্বাসভঙ্গকারী হবে, তার কোন আচরণে বুঝবেন?

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বাস মানুষের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি গড়ে তোলে। তবে এমনও হতে পারে, যাঁদের প্রতি আপনি অগাধ আস্থা রাখছেন, তাঁরা একদিন এই আস্থার অমর্যাদা করবেন।

অনেক সময় ছোট ছোট ইঙ্গিত এড়িয়ে যাওয়ার ফলে, আমরা বিশ্বাসভঙ্গের ঝুঁকিতে পড়ি। মনোবিজ্ঞান বলছে, কিছু নির্দিষ্ট আচরণ বা বৈশিষ্ট্য আগাম সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করতে পারে।

বিশ্বাসভঙ্গকারী হওয়ার সম্ভাবনা থাকা মানুষের আচরণগুলো কীভাবে চিহ্নিত করবেন? চলুন, মনোবিজ্ঞানী এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে সেই লক্ষণগুলো জেনে নেওয়া যাক।

বিশ্বাসভঙ্গের প্রথম লক্ষণ হলো ধারাবাহিকতার অভাব। কারও কথার সঙ্গে কাজের মিল না থাকা বা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আচরণে বৈপরীত্য দেখা গেলে, তা অবহেলা করবেন না। এমন ব্যক্তি প্রায়ই আপনাকে বিভ্রান্ত করে তুলবেন।

দ্বিতীয়ত, আপনার অনুভূতিকে উপেক্ষা করা। যদি কেউ আপনার অনুভূতি বা উদ্বেগকে গুরুত্ব না দেন এবং বিষয়গুলো হালকাভাবে নেন, তবে সেটা একটি সতর্কবার্তা হতে পারে। এটি সম্পর্কের প্রতি তাদের অসংবেদনশীল মনোভাবের প্রমাণ হতে পারে।

তৃতীয়ত, স্বার্থপর আচরণ। যাঁরা সব সময় নিজেদের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেন এবং অন্যের স্বার্থ বা অনুভূতিকে অবহেলা করেন, তাঁদের প্রতি সতর্ক থাকা উচিত। এ ধরনের আচরণ বিশ্বাস ভঙ্গের পথে নিয়ে যেতে পারে।

চতুর্থত, অতীত সম্পর্কে গোপনীয়তা। কেউ যদি তাদের অতীত সম্পর্কে কথা বলতে না চান বা নির্দিষ্ট বিষয় এড়িয়ে যান, তবে এটি তাঁদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে। যদিও কিছু গোপনীয়তা স্বাভাবিক, তবে বারবার বিষয়টি ঘটলে সতর্ক থাকা জরুরি।

পঞ্চমত, সহানুভূতির অভাব। যারা অন্যের কষ্ট বা অনুভূতির প্রতি উদাসীন, তারা সম্পর্কের প্রতি সঠিক মূল্যায়ন করতে পারেন না। এ ধরনের আচরণ বিশ্বাস ভঙ্গের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

ষষ্ঠত, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ। ছোট-বড় প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারা ব্যক্তি সম্পর্কের প্রতি তাঁদের দায়বদ্ধতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি করেন। এই আচরণ দীর্ঘমেয়াদে সম্পর্কের ক্ষতি করতে পারে।

সপ্তমত, মিথ্যা বলার প্রবণতা। যারা নিয়মিত মিথ্যা বলেন, তাঁদের প্রতি আস্থা রাখা কঠিন। এমনকি ছোট মিথ্যাও বড় বিপদের ইঙ্গিত দিতে পারে।

অষ্টমত, দায় এড়িয়ে অন্যকে দোষারোপ করা। যারা নিজেদের ভুল বা ব্যর্থতার দায় নিতে চান না এবং অন্যকে দোষারোপ করেন, তাঁদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এটি দীর্ঘমেয়াদে সম্পর্কের ভাঙন সৃষ্টি করতে পারে।

যদি উপরের লক্ষণগুলো কারও মধ্যে দেখেন, তবে নিজের অনুভূতিকে উপেক্ষা করবেন না। সতর্ক থাকুন এবং বিশ্বাসের জায়গায় আঘাত লাগার আগেই সম্পর্ক নিয়ে সিদ্ধান্ত নিন।

বিশ্বাসের ভিত্তি হলো পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়া। বিশ্বাসভঙ্গের ঝুঁকি কমানোর জন্য সম্পর্কের মধ্যে এই বিষয়গুলো তৈরি করার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, সঠিক সময়েই সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াই সুস্থ সম্পর্কের চাবিকাঠি।

এম.কে.

×