ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১

বাসি রুটির গুণাগুণ:জেনে নিন এর চমকপ্রদ উপকারিতা

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ১১ জানুয়ারি ২০২৫

বাসি রুটির গুণাগুণ:জেনে নিন এর চমকপ্রদ উপকারিতা

রুটি বা ভাত অনেক সময় মাপে তৈরি করা কঠিন হয়, ফলে তা থেকে যায়। 
এই বাসি রুটি কি ফেলে দেওয়া উচিত? উত্তর হলো, একেবারেই না! বাসি রুটির স্বাস্থ্যগুণ আপনার ধারণার চেয়েও বেশি। বাসি রুটির গুণাগুণ সম্পর্কে জানলে আপনি বিস্মিত হবেন। স্বাস্থ্যকর হওয়ার পাশাপাশি, এটি নানাভাবে শরীরের জন্য উপকারী।


গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকার সুবিধা
গরম রুটির তুলনায় বাসি রুটির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক কম। ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা হওয়ার পরে, বাসি রুটি পুনরায় গরম করলে এর কার্বোহাইড্রেটের গঠন বদলে যায়। ফলে এটি হজমে সময় নেয় এবং রক্তে শর্করা দ্রুত বাড়তে দেয় না। এটি বিশেষত ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। সকালে বাসি রুটি খেলে কর্মক্ষমতা ও মনোযোগ দুই-ই বাড়ে।

ব্যাকটেরিয়ার উপকারিতা
রাতে ফ্রিজে রাখা বাসি রুটিতে ভালো ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়। গাঁজন (ফার্মেন্টেশন) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জন্ম নেওয়া এই ব্যাকটেরিয়া হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এটি অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমের ভারসাম্য রক্ষা করে, যা গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অন্যান্য পেটের সমস্যার সমাধানে ভূমিকা রাখে।

পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকে
গরম রুটির মতো বাসি রুটিতেও ফাইবার, বি-ভিটামিন, এবং আয়রনের মাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকে। সামান্য কিছু পুষ্টি কমলেও বাসি রুটি একটি পুষ্টিকর খাবার হিসেবেই বিবেচিত হয়। তাই এটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে।

বিশেষ উপকারিতা
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ:
যারা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন, তারা ঠান্ডা দুধের সঙ্গে বাসি রুটি খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। ঠান্ডা দুধ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং শরীরকে শীতল রাখে।

অ্যাসিডিটি কমায়:
মশলাদার খাবারের কারণে অ্যাসিডিটির সমস্যা হলে বাসি রুটি কার্যকর সমাধান হতে পারে। এটি পাকস্থলীর অম্লতা কমিয়ে স্বস্তি দেয়।

ওজন নিয়ন্ত্রণ:
বাসি রুটিতে থাকা ডায়েটারি ফাইবার দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে।ক্ষুধা কমিয়ে এটি অতিরিক্ত খাওয়া প্রতিরোধ করে, যা ওজন কমাতে সহায়ক।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী:
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বাসি রুটি একটি চমৎকার খাবার।পুষ্টিবিদরা সকালে ঠান্ডা দুধের সঙ্গে বাসি রুটি খাওয়ার পরামর্শ দেন, যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

পেটের ফোলাভাব দূর করে:
বাসি রুটি অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়িয়ে হজম শক্তি উন্নত করে।এটি পেট ফোলাভাব কমায় এবং হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক করে তোলে।

 

বাসি রুটি খাওয়ার সঠিক উপায়
ঠান্ডা দুধের সঙ্গে: রুটির পুষ্টিগুণ বজায় থাকে এবং এটি সহজপাচ্য হয়।
সবজি দিয়ে: সকালের নাশতায় পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু বিকল্প।
পুনরায় গরম করে: ফ্রিজ থেকে বের করে রুটিকে হালকা গরম করে খেলে এটি বেশি উপকারী হয়।

বাসি রুটি ফেলে না দিয়ে সকালের নাশতায় ব্যবহার করুন।এটি শুধু স্বাস্থ্যকর নয়, বরং সময় এবং অর্থ দুটোই সাশ্রয় করে। ব্যস্ত জীবনে এটি একটি আদর্শ খাবার হতে পারে।
তাই পরের বার রুটি বাসি হলে, ফেলে না দিয়ে এর অসাধারণ স্বাস্থ্যগুণ উপভোগ করুন।এটি একটি সহজলভ্য, সাশ্রয়ী, এবং পুষ্টিকর খাবার।

 

আফরোজা

×