ছবি: প্রতীকী
অনেক সময় আমরা জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অন্যের ওপর নির্ভর করতে শুরু করি। এটি হতে পারে আর্থিক পরিকল্পনা, আত্মসম্মান গড়ে তোলা, বা আমাদের সুখ নির্ধারণ করা। তবে মনোবিজ্ঞান বলছে, কিছু বিষয় এমন আছে যা কখনোই অন্যের ওপর নির্ভর করে করা উচিত নয়।
নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্যের ওপর নির্ভরতা আপনাকে দুর্বল করে তুলতে পারে। যখন আমরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা অন্যের হাতে তুলে দেই, তখন নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। এটি কেবল আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয় না, বরং আমাদের পরিচয় সংকটে ফেলে।
সুখ নির্ধারণের ক্ষেত্রেও অন্যের ওপর নির্ভর করা একটি বড় ভুল হতে পারে। সম্পর্ক বা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো আমাদের আনন্দ দেয়, তবে এই আনন্দের মূল উৎস হওয়া উচিত নিজের অভ্যন্তরীণ তৃপ্তি। নিজের আগ্রহ, মূল্যবোধ, এবং স্বতন্ত্র জীবনযাত্রা থেকে যে সুখ আসে, সেটি অন্য কারও ওপর নির্ভর করে আসে না।
আত্মসম্মান গড়ে তোলা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। অনেকেই অন্যের প্রশংসা বা সমালোচনার ওপর ভিত্তি করে নিজের মূল্যায়ন করেন। তবে এটি দীর্ঘমেয়াদে মানসিক স্বাস্থ্য এবং আত্মবিশ্বাসের জন্য ক্ষতিকর। গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ আত্মসম্মান মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয় এবং জীবনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলে।
নিজের মানসিক ক্ষত সারানো একটি ব্যক্তিগত প্রক্রিয়া। অন্যরা সহানুভূতি দেখাতে পারে বা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারে, তবে ভেতরের ব্যথা এবং কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে নিজেকেই নিজের সঙ্গে কাজ করতে হবে।
নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করাও একটি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়। অন্য কারও লক্ষ্যকে নিজের লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করলে তা কখনোই প্রকৃত তৃপ্তি আনতে পারে না। আপনার স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা এবং লক্ষ্য আপনার নিজস্ব হওয়া উচিত।
যতই ব্যস্ত জীবন হোক, নিজের যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যের সাহায্যের অপেক্ষায় না থেকে নিজের মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য সময় ব্যয় করুন। নিজের যত্ন নেওয়া মানে নিজের শক্তি ধরে রাখা।
অবশেষে, জীবনের আসল উদ্দেশ্য খুঁজে বের করা একটি ব্যক্তিগত যাত্রা। এটি অন্য কেউ আপনার জন্য ঠিক করতে পারে না। নিজের মূল্যবোধ, আগ্রহ এবং ইচ্ছার সঙ্গে তাল মিলিয়ে জীবনের অর্থ খুঁজে পাওয়া উচিত।
এম.কে.