খাবার
এক, দুই কিংবা উৎসবের জন্য একাধিক দিনের ছুটি মানেই নিজের মতো থাকা, প্রিয়জনদের সঙ্গে আনন্দ করা আর মন মতো খাওয়া।
আর এই খাবার থেকেই কখন যে বেড়ে যাচ্ছে পেটের মেদ সেই বিষয়ে খেয়ালও থাকে না। ছুটির দিনগুলো বন্ধু বা আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে পেটে খিদা নিয়েই হয়ত যেতে হয়। ফলে বেশিরভাগ সময় খাওয়া হয়ে যায় বেশি।
এই মন্তব্য করে ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ‘নিউ ইয়র্স ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি’স স্কুল অফ হেল্থ প্রফেশনস’য়ের সহকারী ডিন ও পুষ্টিবিদ মিন্ডি হার বলেন, “ছুটির দিনগুলোতে ক্যালারি গ্রহণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাই যেকোনো দেখা সাক্ষাতে যাওয়ার আগে স্বাস্থ্যকর নাস্তা করে যাওয়া উপকারী।”
একই প্রতিবেদনে মিশিগান’য়ের পুষ্টিবিদ অ্যালেক্স এভিঙ্ক বলেন, “অল্প পরিমাণে তবে পেট হালকা ভরে এমন নাস্তা করে যাওয়া হবে বুদ্ধিমানের কাজ। প্রোটিন ও আঁশ সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে টক দই আপেল এবং পিনাট বাটার খেয়ে যেত পারলে রাক্ষশের মতো খিদা লাগনে না দাওয়াতে গিয়ে।”
বিভিন্ন ‘অ্যাপিটাইজার’ ধর্মী খাবার আপাত দৃষ্টিতে স্বাস্থ্যকর মনে হলেও, আসলে সেটা সত্যি নয়। হার পরামর্শ দেন, “ছুটির দিনে কোনো রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার কথা থাকলে, সেই প্রতিষ্ঠানের খাবারের তালিকা অনলাইনে পারলে আগেই দেখে যাওয়া উচিত। এত অন্তত উপাদানগুলো সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।”
আর বেশি না খেয়ে, বন্ধুদের সঙ্গে খাবার ভাগ করে খাওয়া বা খাবার বাঁচিয়ে বাসায় এনে পরদিন খাওয়ার পদ্ধতি অনুসরণ করলে, ক্যালরি গ্রহণ কমানো যায়।
ছুটির দিনে বেশি খাওয়া হয়েছে তাই বেশি ব্যায়াম করে ক্যালরি পুড়িয়ে ফেলবো- এই ধরনের অতিমূল্যায়নের কারণেও পেটে মেদ জমে।
হার বলেন, “কারণ পরিপূর্ণ সময় ধরে হাঁটা, দৌঁড়ানো বা সাইকেল চালিয়ে হয়ত খরচ হবে ৩শ’ থেকে ৪শ’ ক্যালরি। তবে ছুটিতে এর চেয়েও বেশি ক্যালরি গ্রহণ করা হয়ে যায়। আর দাওয়াত থাকলে তো কথা-ই নেই।”
হার ব্যাখ্যা করেন, “ছুটির দিনগুলোতে দাওয়াতে বা উৎসবে নানান ধরনের খাবারের আয়োজন থাকে। সবগুলো খাবার পরখ করতে গিয়ে অনেক সময় দ্রুত খাওয়া হয়। ফলে মনভরা আগেই দেখা যায় বেশি খাওয়া হয়ে গেছে। কারণ পেটভরা অনুভূতি মস্তিষ্কে পৌঁছাতে ২০ মিনিট সময় লাগে। তাই দ্রুত খেলে পেটভরা অনুভূতি পাওয়ার আগেই খাওয়া হয়ে যায় বেশি।”
“নিজেই সিদ্ধান্ত নিলেন ছুটির দিনগুলোতে কম খাবেন, বরং এই প্রতিজ্ঞা হিতে বিপরীত হিসেবে কাজ করে”- বলেন পুষ্টিবিদ হার।
কারণ মস্তিষ্ক তখন মনে করতে থাকে ছুটির দিন শেষ হয়ে গেলে আর খাবার পাওয়া যাবে না। ফলে একটু বেশি খেলে ক্ষতি কি! ফলে প্রতিজ্ঞাতে কাজ হয় না, খাওয়া বেশি হতেই থাকে।
তাই পুষ্টিবিদ বলেন, “ধারাবাহিক অভ্যাস গড়া উপকারী। বেশি খাব না- এই প্রতিজ্ঞা না করে বরং যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু খাব এরকম সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সঠিক রুটিন মেনে ভারসাম্য বজায় রেখে খাবার খাওয়া চালিয়ে যেতে হবে ছুটির দিনে। তাহলেই বাড়তি খাওয়ার হাত থেকে বাঁচা যাবে।”
শহীদ