ছবি সংগৃহীত
সুস্থ থাকতে খাবার ও বিশ্রামের সমান গুরুত্ব রয়েছে। তবে, অনেকের ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্ট বা নাক ডাকার সমস্যা দেখা যায়। যা উপেক্ষা করলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এই সমস্যাগুলো মূলত স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ। এটি এমন একটি ঘুমজনিত সমস্যা, যেখানে শ্বাসনালি সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। যার প্রভাবে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
স্লিপ অ্যাপনিয়া কী?
স্লিপ অ্যাপনিয়া হচ্ছে ঘুমের সময় শ্বাসনালির সাময়িক বন্ধ হওয়া। এতে শরীরে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। নিয়মিত অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্ক, হার্টসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ
জাতীয় নাক-কান-গলা ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ স্লিপ অ্যাপনিয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ চিহ্নিত করেছেন:
- অস্বাভাবিক নাক ডাকা, কখনো জোরে, আবার থেমে গিয়ে ভিন্ন স্বরে নাক ডাকা।
- ঘুমের মধ্যে দম আটকে যাওয়ার অনুভূতি, বিশেষত চিত হয়ে ঘুমালে।
- ঘুম ভেঙে বারবার জেগে ওঠা এবং হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া।
- দীর্ঘসময় ঘুমানোর পরও ক্লান্তি অনুভব করা।
- দিনের বেলায় ঝিমুনি, খিটখিটে মেজাজ এবং কাজে মনোযোগহীনতা।
- ওষুধে নিয়ন্ত্রণে না থাকা রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস।
করণীয়
স্লিপ অ্যাপনিয়া প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তবে চিকিৎসা না করলে জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। কিছু পদক্ষেপ:
-
সি-প্যাপ যন্ত্রের ব্যবহার:
এই যন্ত্রটি ঘুমের সময় শ্বাসনালি খোলা রাখে এবং শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করে। -
অপারেশন বা ডিভাইস ব্যবহার:
- টনসিল বা নাসার পেশি বড় হলে তা অপসারণ।
- ম্যান্ডিবুলার অ্যাডভান্সমেন্ট ডিভাইস (MAD) ব্যবহার, যা শ্বাসনালি খোলা রাখতে সাহায্য করে।
-
জীবনযাত্রার পরিবর্তন:
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।
- ধূমপান ও মদপান বর্জন।
- কাত হয়ে ঘুমানো।
- সুষম খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়াম।
সতর্কতা অবলম্বন করুন
স্লিপ অ্যাপনিয়াকে অবহেলা করলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক বা ডিপ্রেশনের মতো জটিল সমস্যা তৈরি হতে পারে। জীবনযাত্রার উন্নয়ন ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এই সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।
আশিকুর রহমান