রজনীকান্ত ও তার স্ত্রী
রজনীকান্ত একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত তামিল সিনেমা 'অপূর্ব রাগাঙ্গাল'-তে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে তার অভিষেক হয়, ১৯৭৫ সালে।
রজনীকান্ত শেয়ার করেছিলেন কিভাবে তার স্ত্রী লতা তাকে একজন মানুষ হিসেবে পরিবর্তন করেছিলেন। লতার সাথে পরিচিত হওয়ার পর রজনীকান্তের জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছিল যার পুরো কৃতত্ব সে লতাকে দেন।
কিভাবে পরিচয় হয়েছিল রজনীকান্ত ও লতার?
সুপারস্টার রজনীকান্ত এবং তার স্ত্রী লতার প্রেমের গল্প সত্যিই অসাধারণ। বলা হয়, এই দম্পতির প্রথম দেখা হয়েছিল একটি ছবির সেটে। যখন লতা একজন উদীয়মান সাংবাদিক এবং রজনীকান্তের সাক্ষাৎকার নিতে এসেছিলেন।
সাক্ষাৎকার চলাকালীন, দুজনেই এক আকর্ষনীয় অনুভূতি অনুভব করেছিলেন। রজনীকান্ত, লতার প্রতি গভীরভাবে আকৃষ্ট হন, সেই মুহূর্তে এতটাই প্রভাবিত হয়েছিলেন যে সাক্ষাৎকারের শেষে তিনি তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। সেই মুহূর্ত থেকেই তারা একে অপরের থেকে আলাদা হতে পারেনি এবং ধীরে ধীরে তাদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে।
একটি হৃদয়স্পর্শী পুরনো ছবির আলাপচারিতায়, রজনীকান্ত তার জীবনের একটি ব্যক্তিগত অধ্যায় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন, যেখানে তিনি জীবনের সাথে লড়াই করেছিলেন। এই অভিনেতা স্বীকার করেছেন যে, একটা সময় তিনি মদ্যপান, ধূমপানের প্রতি অত্যন্ত আসক্ত ছিলেন, যা তার ক্যারিয়ারের প্রথম দিকের বছরগুলোতে তাকে ভুগিয়েছিল। বর্তমানে যিনি তার শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাপন এনে দিয়েছেন সে তার স্ত্রী লতা । এসব আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে লতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি তার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য লতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
রজনীকান্ত এবং তার স্ত্রী লতার প্রেমের গল্প
ওয়াই জি মহেন্দ্রনের নাটক ’চরুকেশী'র ৫০তম দিন উদযাপনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রজনীকান্ত মহেন্দ্রনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছিলেন, মহেন্দ্রন তাকে লতার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন । অভিনেতা মন্তব্য করেছিলেন, "আমার স্ত্রী লতার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য আমি ওয়াই জি মহেন্দ্রনের প্রতি চিরঋণী।"
রজনীকান্ত তার অতীত নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শেয়ার করেছিলেন যে, যখন তিনি একজন বাস কন্ডাক্টর ছিলাম, তখন তার কিছু অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ছিল। প্রতিদিন মদ্যপান করতাম, আর প্রতিদিন কতগুলো সিগারেট খেতাম তার কোনো হিসাব ছিল না। দিন শুরু হতো আমিষ দিয়ে এবং দিনে দুবার আমিষ খেতাম। সব নিরামিষভোজীদের দেখে খারাপ লাগত।
অভিনেতা আরও বলেন যে এই অভ্যাসগুলো শরীরের উপর কীভাবে প্রভাব ফেলে, বিশেষ করে বয়স বাড়ার সাথে সাথে। যারা মদ্যপান করেন, ধূমপান করেন এবং আমিষ আহার করেন, তারা প্রায়ই ৬০ বছর পেরিয়ে সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন না। রজনীকান্ত তার জীবনে পরিবর্তন আনার পুরো কৃতিত্ব তার স্ত্রী লতার কাছে দিয়েছেন। তিনি বলেন, "আসলে, আমার স্ত্রী লতা আমাকে তার ভালোবাসা দিয়ে বদলে দিয়েছে। তিনি আমাকে শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত করেছে।"
রজনীকান্তের জীবনের শুরুর দিনগুলি
রজনীকান্তের অতীত জীবন সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনা করেছেন এবং তার স্ত্রী লতার ভূমিকা তুলে ধরে বলেছেন যে,তাকে সুস্থ জীবনযাপনের পথে নিয়ে গিয়েছিলেন লতা । তিনি অভিনয় দক্ষতার জন্যই নয়, তার শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাত্রার জন্যও পরিচিত হয়ে উঠেছেন ।যার জন্য তিনি লতার প্রভাবকে কৃতিত্ব দেন।
তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলার পাশাপাশি রজনীকান্ত দর্শকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্যে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য উৎসাহিত করেন। তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে ধূমপান এবং মদ্যপান ত্যাগ করার আহ্বান জানান, কারণ এই অভ্যাসগুলো দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে ।
রজনীকান্তকে সুপারস্টার হতে সাহায্যে লতার ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, লতা আমাকে শুধু তার অভ্যাস পরিবর্তন করতেই সাহায্য করেনি, বরং তিনি আজকের রজনীকান্ত হয়ে উঠতে আমাকে সহায়তা করেছেন।
সাইদুর