ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১

সতর্ক হোন! এই ৭ টি অভ্যাস আপনাকে বানাচ্ছে অপ্রিয়

প্রকাশিত: ১৮:০০, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪

সতর্ক হোন! এই ৭ টি অভ্যাস আপনাকে বানাচ্ছে অপ্রিয়

আমরা সবাই চাই কারো সাথে প্রথম দেখায় ভালো প্রভাব ফেলতে। কিন্তু অনেক সময় এমন কিছু ছোট বিষয় আমাদের অজান্তেই আমাদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে।

আপনি হয়তো মনে করতে পারেন, সঠিক কথা বলা বা পরিপাটি দেখানোর মধ্যেই মূল বিষয়। কিন্তু মনোবিজ্ঞান বলছে, ছোট ছোট অভ্যাস, যেগুলো আমরা হয়তো সচেতনভাবে লক্ষ্যও করি না, সেগুলোই অন্যদের ওপর বড় প্রভাব ফেলে।

ভালো খবর হলো, একবার এই অভ্যাসগুলো সম্পর্কে সচেতন হলে সেগুলো শুধরানো সহজ। আসুন জেনে নেওয়া যাক, এমন সাতটি অভ্যাস সম্পর্কে যা মানুষকে প্রায় সঙ্গে সঙ্গে বিরক্ত করতে পারে এবং কীভাবে সামান্য পরিবর্তনে আপনি ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারেন।

১) বারবার ফোন দেখা
আমরা সবাই মাঝেমধ্যে কথোপকথনের মাঝখানে ফোন দেখি। এটি নির্দোষ মনে হলেও, মনোবিজ্ঞানের মতে এটি একটি বিরক্তিকর অভ্যাস।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের মতে, মাত্র ৩৮% মানুষ মনে করে রেস্টুরেন্টে ফোন ব্যবহার গ্রহণযোগ্য, এবং মাত্র ৫% মানুষ মিটিংয়ে ফোন ব্যবহারের পক্ষে।

ফোনের প্রতি এই নির্ভরতা অন্যদের মনে করে আপনি তাদের কথায় আগ্রহী নন। এটি বিরক্তিকর ও অসম্মানজনক মনে হতে পারে।

সমাধান: পরবর্তীবার যখন কারো সঙ্গে কথা বলবেন, ফোনটি দূরে সরিয়ে রেখে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিন। এতে মানুষ আপনার প্রতি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাবে।

২) সবকিছুর সঙ্গে একমত হওয়া
সবসময় কারো সঙ্গে একমত হলে মনে হয় তারা আপনাকে পছন্দ করবে। কিন্তু বাস্তবে এটি খোলামেলা ও সত্যিকারের সম্পর্ক তৈরির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

মনোবিজ্ঞানী নাটালি লু বলেছেন, “আপনার নিজের চিন্তাভাবনা প্রকাশ করা না হলে এটি কৃত্রিম মনে হতে পারে এবং মানুষ আপনাকে অপ্রত্যাশিত বা সুযোগসন্ধানী মনে করতে পারে।”

সমাধান: নিজের মতামত শেয়ার করতে দ্বিধা করবেন না। এটি আপনাকে আরও খোলামেলা, আন্তরিক এবং চিন্তাশীল ব্যক্তিত্ব হিসেবে তুলে ধরবে।

৩) শরীরের ভাষা উপেক্ষা করা
কথোপকথনের সময় আমাদের শরীরের ভাষাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মনোবিজ্ঞানের গবেষণায় দেখা গেছে, আমাদের যোগাযোগের ৫৫% শরীরের ভাষার মাধ্যমে হয়।

দেহভঙ্গি, চোখের যোগাযোগ, বা শরীরের দিকে মনোযোগ না দিলে এটি অসন্তুষ্টি বা অনাগ্রহের ইঙ্গিত দেয়।

সমাধান: কথোপকথনের সময় খোলা ভঙ্গিতে বসুন, চোখের দিকে তাকান এবং মনোযোগ দিয়ে শুনুন। এতে মানুষ আপনাকে আরও আন্তরিক ও মনোযোগী মনে করবে।

৪) অন্যের কথা মাঝপথে কেটে দেওয়া
কথার মাঝে অন্যকে থামিয়ে দেওয়া অসম্মানজনক বলে মনে হয়। এটি দেখায় আপনি অন্যের চেয়ে নিজের কথা বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন।

সমাধান: অন্যের কথা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন এবং তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিন। এতে সম্পর্ক আরও গভীর হবে।

৫) অতিরিক্ত প্রতিযোগিতা
কথোপকথনের সময় প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব দেখানো অন্যদের বিরক্ত করে।

যদি আপনি সবসময় অন্যদের ছাড়িয়ে যেতে চান বা তাদের সাফল্যকে ছোট করে দেখেন, এটি ক্লান্তিকর এবং সম্পর্ক নষ্ট করতে পারে।

সমাধান: অন্যের সাফল্য উদযাপন করুন এবং সহযোগিতামূলক মনোভাব বজায় রাখুন।

৬) ব্যক্তিগত পরিসরের প্রতি অসম্মান
মানুষ ব্যক্তিগত পরিসরকে গুরুত্ব দেয়। এটি শারীরিক দূরত্ব থেকে শুরু করে সময় বা গোপনীয়তা পর্যন্ত বিস্তৃত।

সমাধান: অন্যের ব্যক্তিগত পরিসর ও সময়ের প্রতি সম্মান দেখান। এতে তারা আরও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে।

৭) প্রতিশ্রুতি পূরণ না করা
প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা পূরণ না করলে এটি আপনার প্রতি নেতিবাচক ধারণা তৈরি করতে পারে।

সমাধান: আপনি যা প্রতিশ্রুতি দেবেন, তা পূরণ করুন। যদি কোনো কারণে তা সম্ভব না হয়, তবে স্পষ্ট ও খোলামেলা ব্যাখ্যা দিন। এতে বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা বাড়বে।
সম্পর্ক উন্নত করা এবং ভালো প্রভাব ফেলার জন্য নিজের আচরণের প্রতি সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

এই ছোট ছোট অভ্যাস বদলানোর মাধ্যমে আপনি আরও মধুর এবং ফলপ্রসূ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবেন। তাহলে কেন আজ থেকেই চেষ্টা শুরু করবেন না?

নাহিদা

×