খোলা খাবারের দোকান।
শহরের আনাচে - কানাচে রাস্তার পাশেই প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর খাবার। এসব স্ট্রিট ফুডে মাছি ও পোকামাকড় বসছে হরহামেশা। নোংরা পরিবেশেই চলে খাবার ও রান্নাবান্না। এগুলো এদেশের মানুষের চোখেও সয়ে গেছে। নজরদারির অভাবে স্কুল - কলেজ ও মাদ্রাসার সামনে, খোলা মাঠ এবং বিভিন্ন স্টেশনের পাশে ব্যাপকভাবে বাড়ছে খোলা খাবারের দোকান।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অধিকাংশ খোলা খাবারেই রয়েছে অনেক ধরনের জীবানু। এসব খাবার খেয়ে ডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েড, হেপাটাইটিসসহ হতে পারে ক্যান্সারের মতো মারাত্নক ব্যাধি। বিশ্বের আর কোনো দেশে খাবার তৈরি ও বিক্রির পরিবেশ নিয়ে এত অসচেতনতা আর দেখা যায় না বললেই চলে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো আমরা সজ্ঞানে একজন আরেকজনের ক্ষতি করছি। তবু শোধরানোর কোনো মনোভাব বা উদ্যোগ একেবারেই দৃষ্টিগোচর হয় না।
একবার রিক্সাযোগে যাওয়ার পথে চোখে পড়লো এক মা তার দুই বা তিন বছরের সন্তানকে নিয়ে রাস্তার পাশে দাড়িয়ে ঝালমুড়ি খাচ্ছে। ছোট্র শিশুটি মায়ের সঙ্গে বেশ আনন্দ নিয়ে মুখে দিচ্ছে। স্বভাবত যারা সচেতন তারা স্ট্রিট ফুড খান না। আবার অনেক শিক্ষিত মানুষেরাও খুব স্বাচ্ছন্দ্যে খাচ্ছে এসব খাবার। আমরা জানি, রান্না করার জন্য যে তেল একবার ব্যবহার করা হয় তা আর পুনরায় ব্যবহার করা ঠিক নয়। কিন্তু হরহামেশা একই তেল দিয়ে একাধিক খাবার তৈরি হচ্ছে স্ট্রিট ফুড ও রেস্টুরেন্টগুলোতে। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ অনেক কিছু শুনলেও তা মানতে নারাজ। তাই প্যাকেজিং খাবার থেকে শুরু করে ছোট-বড় রেস্টুরেন্ট সর্বত্র ভেজাল খাবারে সয়লাব। এগুলো নিয়ন্ত্রনে আনার ক্ষেত্রে হিমশিম খাচ্ছে ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও। এক্ষেত্রে লোকবল আরো বাড়াতে হবে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আরো সক্রিয় ভূমিকা দরকার।
শুধু জরিমানা করে কি খাবারের মান ঠিক করা সম্ভব? মোটেই না। বাধ্যতামূলক করতে হবে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাকে। স্ট্রিট ফুড হোক বা যে কোনো রেস্টুরেন্ট খাবরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার আগে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। যা সরকারিভাবে বিনামূল্যে করানো প্রয়োজন। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা খুবই ব্যয়বহুল। তাই অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে কোনো অসুখে পরলে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর কাছে হার হানতে হয় অনেক অসহায়দের। আমাদের মধ্যে বিবেকবোধ জাগ্রত করতে ভেজাল খাবার বিষয়ে ব্যাপক প্রচারণা প্রয়োজন। ব্যবসার নামে অধিক লাভের আশায় একজন আরেকজনের ক্ষতি না করে সত্যিকারের মানুষ কবে হবো আমরা?
রিয়াদ