ছবি: সংগৃহীত।
বিয়ে আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলেও এটি একমাত্র লক্ষ্য নয়। যখন জীবনকে শুধু বিয়ের মাধ্যমেই পরিপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়, তখনই সমস্যার সৃষ্টি হয়। সমাজের একটি বড় অংশে, বিশেষ করে মেয়েদের, প্রায়ই শুনতে হয় "বিয়ে কেন করছ না?" এই প্রশ্নটি। যদিও বিয়ে না হওয়াটা কোন অপরাধ নয়, তথাপি সমাজে এর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বিদ্যমান।
মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় অনেক বেশি এই প্রশ্নের মুখোমুখি হন। তাদের মধ্যে যদি পেশাগত জীবন বা ব্যক্তিগত লক্ষ্য গুরুত্ব পায়, তবে তারা প্রায়ই এই প্রশ্নের শিকার হন। বিশেষত, যদি কোনো নারী শিক্ষার্থীর বিয়ে না হয়, তবে তার ভবিষ্যৎ বিয়ের সম্ভাবনা নিয়ে অনেকেই কটাক্ষ করে। তাছাড়া, বিয়ের না হওয়ার জন্য অনেকেই নারীকে তার পেশার জন্য দায়ী করেন, যা একটি প্রচলিত ও ভুল ধারণা।
অনেক সময় দেখা যায়, মেয়েরা স্নাতক, স্নাতকোত্তর শেষে ভালো ক্যারিয়ার গড়তে মন দিয়েছেন, কিন্তু তখনও তাদের পরিবার, আত্মীয়স্বজন বা প্রতিবেশীরা প্রশ্ন করেন, "তোমার বিয়ে হচ্ছে না কেন?" এসব নেতিবাচক মন্তব্য তাদের মানসিক অশান্তি তৈরি করে এবং এই ধরনের প্রশ্নের কারণে অনেকেই সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে চান।
যেভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করবেন
যখন এমন প্রশ্ন করবেন কেউ, তখন আপনার উত্তরের ধরন প্রেক্ষাপট অনুযায়ী হওয়া উচিত।
যদি আপনার বন্ধু হন, তবে হাসিমুখে উত্তরে বলুন, "গত ২০ বছর ধরে তো একজন ভালো মনের মানুষ খুঁজছি, পাচ্ছি কই! তুমিই একটু সাহায্য করো!" অথবা, "তোমার কি মনে হচ্ছে আমার স্বাধীন জীবন দেখে তোমার হিংসে হচ্ছে?"
অন্যদিকে, যদি সেই ব্যক্তি হয়ে থাকেন পার্শ্ববর্তী ফ্ল্যাটের আন্টি বা দূরসম্পর্কের আত্মীয়, তখন উত্তর দেওয়ার সময় কিছুটা ভেবে বলুন, "আন্টি, আপনি তো আমার অভিভাবক, আপনার চিন্তা আমাকে অনেক ভালো লাগছে। আমি বিয়ের বিপক্ষে নই, দেখা যাক... আপনি নিজেও চেষ্টা করুন।"
আরও কিছু বলা যেতে পারে, "আমাকে দেখে কি অসুখী মনে হচ্ছে? চিন্তা করবেন না, গিফট রেডি রাখুন, একদিন আমি আপনাকে দাওয়াত দেব!"
এগুলো বলার সময় অবশ্যই রাগ বা আঘাত না দিয়ে শান্তভাবে উত্তর দিন। কারণ, এই ধরনের প্রশ্নের উত্তর আমাদের ভদ্রভাবে এবং বিনয়ের সাথে দিতে হবে।
একা থাকা বা না থাকার সিদ্ধান্ত একান্তই আপনার। যদি নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে সাজানোর জন্য কিছু সময় দরকার হয়, তবে সেটা নিন। তবে, আপনির পরিবারের অনুভূতি এবং মনের দিকটাও মনে রাখুন, যাতে তারা কোনো ধরনের কষ্ট বা অস্বস্তি অনুভব না করেন।
অন্যরা কী ভাবছেন, এটা নিয়ে বেশি চিন্তা করার সময় কখনোই চাপের মধ্যে থাকবেন না। বরং নিজের জীবনকে উপভোগ করুন এবং প্রতিটি দিনকে সুন্দরভাবে কাটানোর চেষ্টা করুন।
নুসরাত