এটি শুধুমাত্র বড় সিদ্ধান্তের ব্যাপার নয়, প্রায়ই জীবনের ছোট ছোট পদক্ষেপগুলোই পার্থক্য সৃষ্টি করে।
সবার চেয়ে এগিয়ে থাকা মানে অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা নয়, বরং নিজেদের উন্নতি করা। প্রতিদিনের ছোট ছোট অভ্যাস আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে এগিয়ে নিতে পারে।
এগুলো এমন সহজ কাজ যা আপনি আপনার দৈনন্দিন রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বড় পরিবর্তন দেখতে পাবেন।
আসুন তবে এখন সেই ছোট, তবে শক্তিশালী অভ্যাসগুলো নিয়ে আলোচনা করি:
১) মনোযোগী হওয়ার অভ্যাস শুরু করুন
মনোযোগী হওয়া এমন একটি বিষয় যা আমি বারবার বলি, এবং এর যথার্থতা রয়েছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততায় ছোট ছোট বিষয়গুলো অবহেলা করা হয়। আমরা বড় ছবিতে এতটাই মনোনিবেশ করি যে আমরা বর্তমানে যা করছি, তা সম্পর্কে সচেতন থাকতে ভুলে যাই।
কিন্তু আপনি যা ভবিষ্যতে অর্জন করতে চান, তা বর্তমান মুহূর্তের দ্বারা গঠিত। মনোযোগী হওয়া শুধুমাত্র ধ্যান বা যোগব্যায়াম নয়। এটি হলো প্রতিটি মুহূর্তে সম্পূর্ণরূপে যুক্ত থাকা, আপনার চিন্তা, অনুভূতি এবং প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন হওয়া।
২) ছাড় দেওয়ার গুণ অর্জন করুন:
ছাড় দেওয়া সহজ শোনালেও এটি খুবই কঠিন। আমরা বহু সময় এমন কিছু জিনিস ধরে রাখি যা আমাদের অনেক আগেই ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল। বৌদ্ধ ভিক্ষু থিচ নাট হানহ বলেছিলেন, “ছাড় দেওয়া আমাদের মুক্তি দেয়, এবং মুক্তি হলো একমাত্র সুখের শর্ত।”
ছাড় দেওয়া মানে ভুলে যাওয়া নয়। এটি হলো গ্রহণ করে, সামনে এগিয়ে যাওয়া। এটি মানে হলো অতীতের দুঃখ বা ভবিষ্যতের উদ্বেগ ছেড়ে দেওয়া এবং নতুন সুযোগ এবং অভিজ্ঞতার জন্য জায়গা তৈরি করা।
৩) কৃতজ্ঞতা চর্চা করুন
কৃতজ্ঞতা সত্যিই এক খেলার নিয়ম পাল্টে দেয়। এটি আমাদের জীবনকে বদলে দিতে পারে। কৃতজ্ঞতার অভ্যাস শুরু করতে, প্রতিদিন তিনটি জিনিস লিখুন যেগুলোর জন্য আপনি কৃতজ্ঞ।
৪) চিরকাল শেখার জন্য বিনিয়োগ করুন
আলবার্ট আইনস্টাইন একবার বলেছিলেন, “যতক্ষণ না আপনি শিখতে থাকবেন, ততক্ষণ আপনি মরতে থাকবেন।” পৃথিবী দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে, এবং শিখতে ও মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ।
৫) ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তুলুন
হ্যাপি জীবন শুধু ব্যক্তিগত উন্নতি এবং সাফল্যের ব্যাপার নয়, এটি সম্পর্কের সম্পর্কেও। সম্পর্ক আমাদের জীবন এবং সুখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৬) নিজের যত্ন নিন
নিজের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে মনে রাখতে হবে, আপনি যদি নিজের যত্ন না নেন, তবে অন্যদের সাহায্য করতে পারবেন না।
৭) অপূর্ণতাকে গ্রহণ করুন
বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আমরা প্রায়ই নিজের প্রতি অপ্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি করি। তবে, অপূর্ণতা একটি অভ্যস্ত দৃষ্টিভঙ্গি যা আমাদের আত্মবিশ্বাস এবং মনোযোগ বৃদ্ধি করতে সহায়ক।
৮) অর্থপূর্ণ লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
ভিন্স লম্বার্ডি বলেছিলেন, “সফল ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য হল না শক্তি বা জ্ঞান, বরং ইচ্ছাশক্তির অভাব।”
৯) ‘না’ বলতে শেখা
এটি প্রথমে অস্বাভাবিক মনে হতে পারে, কিন্তু নিজের সীমা নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ‘না’ বলতে শেখার মাধ্যমে আপনি আপনার সময় এবং শক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারবেন।
১০) ধারাবাহিক থাকুন
ধারাবাহিকতা দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। এটি কোনও বড় কাণ্ডের ব্যাপার নয়, বরং ধীরে ধীরে, নিয়মিতভাবে আপনার লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে যাওয়া।
তানজিলা