ছবি: সংগৃহীত।
স্ত্রী বা জীবনের সঙ্গী একজন বিশেষ মানুষ। সম্পর্কের মধ্যে শান্তি এবং সমঝোতা বজায় রাখতে হলে কিছু কথা বলার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা জরুরি। অনেক সময় অজান্তেই আমরা এমন কিছু মন্তব্য করি, যা আমাদের সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারে। কিছু কথা সরাসরি বা পরোক্ষভাবে আমাদের সঙ্গীর মনে আঘাত দিতে পারে, যার ফলে সম্পর্কের মাধুর্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই, এখানে এমন সাতটি কথা তুলে ধরা হয়েছে, যা আপনার স্ত্রীকে কখনোই বলা উচিত নয়।
১. “তুমি তো আগের মতো নেই।”
এই ধরনের মন্তব্য কোনো মহিলার জন্য অত্যন্ত কষ্টকর হতে পারে। সবারই বয়স বাড়ে এবং জীবনযাত্রার মধ্যে পরিবর্তন আসে। আপনার স্ত্রীর শারীরিক বা মানসিক পরিবর্তন নিয়ে এমন কথা বলা তার আত্মবিশ্বাসে আঘাত করতে পারে। পরিবর্তে, তার ভাল কাজ বা গুণাবলীর প্রশংসা করুন।
২. “তুমি কখনোই ঠিকভাবে কিছু করতে পারো না।”
এই ধরনের কথা একেবারে আত্মবিশ্বাসহীন করে তোলে মানুষকে। যদি আপনার স্ত্রীর কোনো কাজ বা সিদ্ধান্ত ভুল হয়, তাহলে তাকে সহানুভূতির সাথে বোঝান এবং সমাধানের পথ দেখান। তাতে তার আত্মবিশ্বাসও বৃদ্ধি পাবে এবং সম্পর্কেও সমঝোতা থাকবে।
৩. “তুমি তো সবসময়ই অভিযোগ করো।”
আপনার স্ত্রীর অনুভূতিগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া খুবই জরুরি। এমন মন্তব্য তার অনুভূতিকে অবমূল্যায়ন করতে পারে। সম্পর্কের মধ্যে যেকোনো সমস্যার সমাধানে একে অপরকে শ্রদ্ধা এবং সহানুভূতি দিয়ে যোগাযোগ করা প্রয়োজন।
৪. “আমার মা ঠিক বলেছে।”
এটা এমন একটি মন্তব্য যা অনেক পুরুষই ভুলবশত করে থাকেন। তবে, স্ত্রীর সামনে শাশুড়ির প্রশংসা বা সমালোচনা করার আগে তার অনুভূতি সম্পর্কে ভাবুন। এটি সম্পর্কের মধ্যে নানা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
৫. “তুমি কেন এত খরচ করো?”
অর্থনৈতিক বিষয়গুলো সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ, তবে সরাসরি বা তীব্রভাবে স্ত্রীর খরচের বিষয়ে কথা বললে তা তার কাছে সমালোচনা মনে হতে পারে। আলোচনা করার সময় সহানুভূতির সাথে এবং যৌথভাবে ভবিষ্যত পরিকল্পনা করুন।
৬. “আমার প্রাক্তন-কে তুমি কখনোই ছাড়িয়ে যেতে পারবে না।”
পূর্বের সম্পর্কের তুলনা বর্তমান সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। স্ত্রীর সাথে এমন তুলনা তার প্রতি অবমূল্যায়ন হতে পারে। আপনার স্ত্রীকে তার নিজস্ব গুণাবলি এবং গুরুত্ব বোঝান।তাকে যথাযথভাবে সম্মান করুন।
৭. “এটা তোমার দায়িত্ব, তোমাকে করতেই হবে।”
এই ধরনের মন্তব্য স্ত্রীর স্বাধীনতা এবং ব্যক্তিত্বে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। সম্পর্কের মধ্যে সমান ভূমিকা এবং দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়া উচিত। সবকিছুই আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা উচিত, চাপ সৃষ্টি কোনো সমাধান নয়।
একটি সুখী ও সফল সম্পর্কের জন্য পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং সহানুভূতি অপরিহার্য। যদি আপনি আপনার স্ত্রীর অনুভূতিগুলোকে গুরুত্ব দেন এবং কিছু কথার প্রতি সতর্ক থাকেন, তবে আপনার সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। মনে রাখবেন, সম্পর্কের শক্তি শুধুমাত্র ভালো সময়ের মধ্যেই নয়, খারাপ সময়েও একে অপরকে সম্মান ও ভালোবাসা দিয়ে গড়ে তোলা হয়।
নুসরাত