ছবি: সংগৃহীত।
আপনি নিশ্চয়ই নিজের শরীরের পরিচ্ছন্নতার প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব দেন। তবে এমন কিছু অংশ রয়েছে শরীরে, যেগুলোর প্রতি আপনি হয়তো তেমন নজর দেন না, অথচ সেগুলোরও বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। এসব অংশে প্রাকৃতিকভাবে ব্যাকটেরিয়ার জন্ম হয়, এবং শরীরের অন্যান্য অংশের মতো এগুলোও নিয়মিত পরিষ্কার করা জরুরি।
তাহলে কি আপনি ভাবছেন, এমনটা কীভাবে সম্ভব? প্রতিদিন গোসলের পর, সাবান ও শ্যাম্পু ব্যবহার করেও কি কোনো অংশে নোংরা থাকতে পারে? আসলে, একটি বিশেষ শরীরের অংশ এমন রয়েছে যা প্রায়ই অবহেলিত থাকে, আর সেটি হলো নাভি। হ্যাঁ, আপনার শরীরের সবচেয়ে নোংরা অংশ এটি হতে পারে।
বিজ্ঞান অনুসারে, নাভি আসলে শরীরের একটি ক্ষতস্থল, যা জন্মের সময় শিশু মায়ের গর্ভ থেকে বের হওয়ার সময় তৈরি হয়। সাধারণত, নাভির গভীর অংশে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ বেশি হয়। প্রায় সব মানুষের নাভি ভেতরের দিকে থাকে, তবে কিছু মানুষের নাভি বাইরের দিকে থাকে। এই গভীর জায়গাটি জীবাণুদের জন্য আদর্শ পরিবেশ।
বেশ কিছু গবেষণাও নাভির নোংরার বিষয়টি পরিষ্কার করেছে। ২০১২ সালে পিএলওএস ওয়ানে প্রকাশিত একটি গবেষণায় জানা যায়, নাভিতে প্রায় ২৩৬৮ ধরনের ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। এর মধ্যে ১৪৫৮টি ব্যাকটেরিয়া এমন, যা বিজ্ঞানীদের কাছেও নতুন। ত্বক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নাভি ব্যাকটেরিয়ার জন্য আদর্শ পরিবেশ। বিশেষ করে যারা অতিরিক্ত মেদবহুল, টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অথবা যারা নাভিতে পিয়ার্সিং করেছেন, তাদের নাভিতে ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ব অনেক বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, শরীরের যেসব অংশে চামড়ার ভাঁজ পড়ে, যেখানে ঘাম জমে, সেখানে ব্যাকটেরিয়া জমে থাকে। নাভি এমন একটি স্থান।
তবে যদি কখনো আপনি নাভিতে চুলকানি, লাল হওয়া, ব্যথা, বা দুর্গন্ধ অনুভব করেন, তাহলে অবহেলা না করে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এটি হতে পারে ইনফেকশনের লক্ষণ, যা সময়মতো চিকিৎসা নেওয়ার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
পরিশেষে, শরীরের সব অংশের মতো নাভিরও পরিষ্কার রাখা জরুরি, এবং তা কোনোভাবেই উপেক্ষা করা উচিত নয়।
নুসরাত