ছবি: সংগৃহীত।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক কার্যকলাপের পরিমাণ এবং ধরণের উপর আমাদের নজর রাখা অত্যন্ত জরুরি। হাঁটা একটি সুস্থ জীবনের অন্যতম উপাদান, যা আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কিন্তু, প্রতিটি বয়সে হাঁটার সময় ও পরিমাণ আলাদা হতে পারে। চলুন দেখে নেওয়া যাক কোন বয়সে কত মিনিট হাঁটবেন:
১. বাচ্চাদের বয়স (২-৫ বছর)
বাচ্চাদের জন্য শারীরিক কার্যকলাপের গুরুত্ব অনেক। এই বয়সে শিশুরা খেলার মধ্যে হাঁটতে ও দৌড়াতে আগ্রহী থাকে। তবে হাঁটার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের প্রয়োজন নেই, বরং তারা যেন সক্রিয় থাকে, সে দিকটিই বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ ঘণ্টা শারীরিক কার্যকলাপের জন্য উৎসাহিত করা উচিত।
২. শিশু-কিশোর বয়স (৬-১৭ বছর)
এই বয়সে শরীরের বৃদ্ধির প্রক্রিয়া চলতে থাকে, এবং সঠিক শারীরিক কার্যকলাপ তাদের শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক বিকাশে সাহায্য করে। প্রাপ্তবয়স্কদের মতো এই বয়সের ছেলেমেয়েদের জন্যও প্রতিদিন ৬০ মিনিট সক্রিয় থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। হাঁটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো কিংবা খেলা — এসব কার্যকলাপের মাধ্যমে শরীর সচল রাখা উচিত।
৩. যুবক-যুবতী (১৮-৬৪ বছর)
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য হাঁটা একটি অত্যন্ত উপকারী শারীরিক কার্যকলাপ। গবেষণায় দেখা গেছে, এই বয়সের জন্য প্রতি সপ্তাহে ১৫০ মিনিট মাঝারি তীব্রতার শারীরিক কার্যকলাপ (যেমন হাঁটা) কিংবা ৭৫ মিনিট তীব্র শারীরিক কার্যকলাপের পরামর্শ দেওয়া হয়। দৈনিক ভিত্তিতে ৩০ মিনিট হাঁটতে পারেন, যা আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। তবে, বেশি সময় হাঁটলে আরও ভালো ফল পাওয়া যায়।
৪. বয়স্ক মানুষ (৬৫ বছর ও তার উপরে)
বয়স বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরের শক্তি কমতে থাকে, তাই হাঁটার সময় ও পরিমাণে কিছুটা ভিন্নতা আনা উচিত। তবে, হাঁটতে ভুললে শরীরের প্রচুর সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই বয়সে প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট হাঁটা বা তার বেশি হাঁটার পরামর্শ দেওয়া হয়। যদি শারীরিক সমস্যা থাকে, তবে হাঁটার সময় কমিয়ে আস্তে আস্তে সময় বাড়ানো উচিত। হাঁটা বা অন্যান্য শারীরিক কার্যকলাপের মাধ্যমে হাঁটু, মেরুদণ্ড ও হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের উন্নতি করা যেতে পারে।
বিভিন্ন বয়সে হাঁটার উপকারিতা
- শারীরিক স্বাস্থ্য: হাঁটার মাধ্যমে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে, হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
- মানসিক স্বাস্থ্য: হাঁটলে মস্তিষ্কে এক ধরনের রসায়ন ক্ষরণ হয় যা স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে এবং ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিত হাঁটলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমে, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- হাড়ের স্বাস্থ্য: হাঁটার মাধ্যমে হাড় শক্তিশালী হয় এবং অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি কমে।
প্রতিটি বয়সের জন্য হাঁটার সময় ও পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে, তবে যে বয়সেই থাকুন না কেন নিয়মিত হাঁটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
নুসরাত