সকালের শিশির ভেজা ঘাসে হাল্কা কুয়াশাচ্ছন্ন প্রকৃতি ইতোমধ্যে জানান দিচ্ছে শীতের বার্তা। ভোরের আকাশে হাল্কা কুয়াশা থেকে ক্রমাগত রোদের তীব্রতায় বাড়ে তাপমাত্রা। এ সময় গ্রামের মাঠজুড়ে থাকে কৃষকের ফসল সোনালি ধান। পাকা ধান ঘরে আনার আনন্দ যেন হেমন্ত ঋতুর এক অপরূপ বৈশিষ্ট্য। গন্ধরাজ, মল্লিকা, শিউলি, কামিনী, দেব কাঞ্চন, ছাতিমফুলÑ সবই আলাদা এক বৈচিত্র্য বহন করে। প্রকৃতির নানা রূপ মানব জীবনে বেশ প্রভাব ফেলে। হেমন্তের শীত আগমনে বেশি ভাবতে হয় পরিবারের ছোট সদস্যকে নিয়ে। ছোট্ট শিশু আদ্রিতা। থাকে বাবা-মায়ের সঙ্গে মালিবাগে। পড়ছে প্লে গ্রুপে। তাকে নিয়েই যত ভাবনা পরিবারের সবার। খুব আদুরে আদ্রিতার ঠান্ডা লেগে যায় সহজেই। এ জন্য আবহাওয়ায় শীতের আগমন ঘটলেই তার পোশাকে আসে পরিবর্তন। আর কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে বেশি ঠান্ডাও না, আবার গরমও না, প্রকৃতিতে থাকে নাতিশীতোষ্ণ ভাব। তাই আদ্রিতাকে এখন থেকে ফুল স্লিভের ড্রেস পরানোর কথা ভাবছেন তার বাবা-মা। এতদিন তাকে স্লিভলেস অথবা শর্ট স্লিভের ড্রেসই পরানো হতো। ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে বাঁচাতে আদ্রিতার বাবা-মায়ের মতো সবাই পরিবারের ছোট সদস্যকে নিয়ে বেশ সচেতন থাকেন। আর শীত ঋতু আসার পূর্বেই মার্কেটগুলো সজ্জিত থাকে শিশুদের নান্দনিক পোশাক দিয়ে।
শিশু ও বড়দের তাপমাত্রা থাকে ভিন্ন। এ জন্য তাদের পোশাক নিয়ে একটু বেশিই ভাবতে হয় অভিভাবকদের। এ ছাড়া যে কোনো সিজনাল ফ্লু ছোটদের সহজেই আক্রান্ত করে। বড়রা চাইলে অল্প ঠান্ডায়ও মোটা কাপড় গায়ে পরতে পারে যা শিশুদের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। কেননা গরম লেগে ঘাম হলে তা থেকেও তারা অসুস্থ হতে পারে। শিশুদের এ সময়ে একটু ভারি সুতি অথবা লিনেন কাপড়ের শর্ট বা ফুল স্লিভের ফ্রক, জামা, টি-শার্ট বেছে নিন। এ ছাড়া শর্ট প্যান্ট না পরিয়ে ফুলপ্যান্টও পরাতে পারেন। শিশুদের হাল্কা রঙের পোশাক যেমন আকাশি, হাল্কা সবুজ, হাল্কা গোলাপি, সাদা, ধূসর, বাদামি ইত্যাদির ওপর রঙিন ছাপা বা প্রিন্টের পোশাক বেছে নিতে পারেন। এতে শিশুদের দেখতে বেশ ভালো লাগে। তবে তারা যেহেতু খেলাধুলা বা ছোটাছুটি করে বেশি, তাই রঙিন পোশাক পরাতে চাইলে পাতলা সুতি পোশাক বেছে নিতে পারেন। পরাতে পারেন ফুল, পাতা, পাখি, জ্যামিতিক নকশা বা বল প্রিন্টের পোশাক। এতে শিশুদের প্রাণবন্ত ও উচ্ছল লাগে। যে ধরনের পোশাকই নির্বাচন করা হোক না কেন, তা যেন খুব বেশি আঁটসাঁট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাতাস চলাচল করতে পারে এমন ঢিলেঢালা পোশাক শিশুদের জন্য বেশি উপযোগী। হাল ফ্যাশনে ছেলে ও মেয়ে শিশুদের পোশাকে খুব একটা পার্থক্য নেই বললেই চলে। ছেলেদের জন্য বেছে নিন ঢিলেঢালা ফুল হাতার শার্ট, ফতুয়া, ট্রাউজার অথবা ফুলপ্যান্ট। মেয়েদের জন্য পাওয়া যাচ্ছে নানা রকম ডিজাইনের ফ্রক, সালোয়ার-কামিজ, স্কার্ট, টপস, প্লাজো, শার্ট ইত্যাদি। সোনামণিদের পোশাকে প্যাটার্নের দিক থেকে রয়েছে লিল্যাকজিন সিস্টেম। এতে প্রয়োজনে পোশাকটি ছোট-বড় করা যাবে আবার ঢিলেঢালা হলে টাইটও করে নিতে পারবেন। এক বছর থেকে শুরু করে দশ বছর পর্যন্ত শিশুদের নান্দনিক পোশাক রয়েছে দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলোতে।
দর-দাম ও কোথায় পাবেন : কাপড় ও মানের ওপর ভিত্তি করে শিশুদের পোশাকের দাম ৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে। একটু কম দামের কিনতে চাইলে যেতে পারেন রাজধানীর নিউ মার্কেট, মৌচাক মার্কেট, তালতলা মার্কেট অথবা এ রকম বহু ছোট-বড় মার্কেট ঢাকার ভেতরে ও বাইরে রয়েছে। গ্যাবার্ডিন ও জিন্সের প্যান্টগুলোর দাম পড়বে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং মেয়েদের ফ্রক, স্কার্ট ও টপ পাবেন ৪০০ থেকে ৮০০ টাকায়। দেশীয় ফ্যাশন হাউজ আড়ং, রঙ বাংলাদেশ, অঞ্জন’স, দেশাল, যাত্রা, ক্যাটস আই কিডস, লা রিভসহ মেনজ ক্লাব, সীমান্ত স্কয়ার, বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্কসহ যে কোনো মার্কেটে পাবেন এই পোশাকগুলো।
মডেল : অগ্নি ও আফরা
পোশাক : লেবাস