সংগৃহীত ছবি।
পেইন কিলার বা ব্যথানাশক ঔষধ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ব্যথা বা অস্বস্তি কমাতে এটি দ্রুত কার্যকর হলেও, এর অতিরিক্ত বা অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার কিডনির জন্য বিপদজনক হতে পারে।
কিডনি আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যেগুলি আমাদের শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ এবং অতিরিক্ত তরল উপাদান অপসারণের কাজ করে। তাই পেইন কিলারের অতিরিক্ত ব্যবহার কিডনির কার্যকারিতা নষ্ট করতে পারে। তবে সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে কিডনি সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।
কিডনিতে পেইন কিলারের প্রভাব
পেইন কিলার সাধারণত দুই প্রকারের হয় – অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি ড্রাগ (NSAIDs) এবং প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ। দীর্ঘদিন ধরে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি ড্রাগ ব্যবহার করলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, কারণ এই ঔষধগুলো কিডনির রক্ত সঞ্চালন কমিয়ে দেয়। প্যারাসিটামল সাধারণত কিডনির জন্য তুলনামূলকভাবে নিরাপদ, তবে অতিরিক্ত ব্যবহারে তা লিভার এবং কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। অতএব, পেইন কিলারের ব্যবহার যতটা সম্ভব সীমিত রাখা উচিত।
কিডনি সুরক্ষিত রাখতে কী করবেন?
১. সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করুন:পেইন কিলার খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং ডোজের সীমা মেনে চলুন। কখনোই নিজের ইচ্ছেমত পেইন কিলার খাবেন না।
২. পানি খাওয়া বাড়ান: পেইন কিলারের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক সময় শরীরের পানি শোষণ ক্ষমতা কমে যায়। তাই বেশি করে পানি পান করুন যাতে কিডনি সঠিকভাবে কাজ করতে পারে এবং মেটাবলিজমের মাধ্যমে বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতে পারে।
৩. পেইন কিলারের বিকল্প খুঁজুন: যদি কোনো কারণে দীর্ঘ সময় ধরে পেইন কিলার খেতে হয়, তবে আপনার ডাক্তার থেকে বিকল্প চিকিৎসা বা প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে পরামর্শ নিন। যেমন, যোগব্যায়াম, হালকা ব্যায়াম বা পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে ব্যথা কমানো যেতে পারে।
৪. খাবারের দিকে নজর দিন: খাবারের মধ্যে পর্যাপ্ত ফলমূল, শাকসবজি এবং প্রোটিন রাখুন যা কিডনির সুস্থতার জন্য উপকারী। মধু, মেথি, অ্যালোভেরা ইত্যাদি প্রাকৃতিক উপাদানও কিডনির জন্য উপকারী হতে পারে।
৫. নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করান: যারা নিয়মিত পেইন কিলার ব্যবহার করেন, তাদের কিডনি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। রক্ত এবং প্রস্রাব পরীক্ষার মাধ্যমে কিডনির স্বাস্থ্যের অবস্থা জানানো সম্ভব।
৬. অতিরিক্ত শরীরচর্চা থেকে বিরত থাকুন: কিডনি সুরক্ষিত রাখতে শরীরচর্চা বা অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম থেকে বিরত থাকুন। বেশি চাপ পড়ে শরীরে, বিশেষ করে কিডনির উপর, তা হিতে বিপরীত হতে পারে।
যদিও পেইন কিলার ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর, তবে এর অতিরিক্ত ব্যবহার কিডনির ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। সঠিক পরিমাণে এবং নিয়ন্ত্রণের মধ্যে পেইন কিলার গ্রহণ করলে আপনি কিডনিকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে জীবনযাত্রার অভ্যাস পরিবর্তন করলেই কিডনির সমস্যাগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব।
নুসরাত