ছবি : সংগৃহীত
সুখী জীবনযাপন একটি জটিল এবং বহুমাত্রিক বিষয়। কখনও কখনও, যদিও আমরা সুখী হওয়ার চেষ্টা করি, কিছু অভ্যাস আমাদের অজান্তেই সুখ থেকে দূরে রাখে। মনোবিজ্ঞান অনুযায়ী, কিছু দৈনিক অভ্যাস রয়েছে, যা মানুষকে প্রকৃত সুখ থেকে দূরে রাখে। এই অভ্যাসগুলির মধ্যে কিছু তেমন দৃশ্যমান নাও হতে পারে, তবে তা প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, এমন ৮টি অভ্যাস সম্পর্কে যা মানুষকে কখনো সত্যিকার সুখী হতে দেয় না।
১. অন্যদের সঙ্গে নিজেদের তুলনা করা
অনেকেই নিজের জীবনকে অন্যদের জীবনের সঙ্গে তুলনা করেন, বিশেষত সোশ্যাল মিডিয়া দেখে। এটা "সামাজিক তুলনা তত্ত্ব" নামে পরিচিত। এই অভ্যাসটি আমাদের মধ্যে হীনমন্যতার অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে, যা আমাদের সুখে বাধা সৃষ্টি করে।
২. নিজের যত্ন না নেওয়া
যখন আমরা কোনো কাজ বা অন্য দায়িত্বের মধ্যে এতটাই ডুবে থাকি যে নিজের যত্ন নিতে ভুলে যাই, তখন শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। নিয়মিত সঠিক ভাবে খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রামের অভাব আমাদের সুখের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
৩. অতীত ক্ষোভ ধরে রাখা
পূর্বে হওয়া ক্ষতি বা রাগ ধরে রাখা দীর্ঘমেয়াদে আমাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। মনের ক্ষোভ মুক্ত করে পরিত্রাণ পাওয়া, কেবল সুখী জীবনের জন্যই নয়, শারীরিক সুস্থতার জন্যও জরুরি।
৪. সবকিছু নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করা
অপ্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা আমাদের মানসিক শক্তি শোষণ করে। এটি নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে, যা পরর্বতী জীবনে আমাদের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন করে তোলে।
৫. অতিরিক্ত আবেগকে উপেক্ষা করা
অতিরিক্ত আবেগী যন্ত্রণাকে উপেক্ষা করার মানে হলো একটি গভীর আঘাতের ওপর পাতলা ব্যান্ডএইড লাগানো। দীর্ঘমেয়াদে এই অভ্যাস আমাদের মানসিক সুস্থতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং সুখের পথে বাধা সৃষ্টি করে। তাই নিজের আবেগকে মেনে নেওয়া ও অতিরিক্ত আবেগকে উপেক্ষা করা প্রয়োজন।
৬. পারফেকশন অর্জন করা
অবিরামভাবে পারফেকশন অর্জন করার প্রচেষ্টা হতাশা ও অস্থিরতার সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, সর্ম্পূণ পারফেকশন কখনও অর্জন করা সম্ভব নয়। কিছু ভুল বা অপ্রত্যাশিত ঘটনাও জীবনের অংশ হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।
৭. পরিবর্তনকে এড়িয়ে চলা
পরিবর্তন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। তবে, পরিবর্তনকে ভয় পাওয়া আমাদের উন্নতিকে বাধা দিতে পারে। যারা নতুন নতুন অভিজ্ঞতা গ্রহণ করতে পারে, তারা সাধারণত বেশি সুখী হন। তাই, যেকোন পরিবর্তনকে গ্রহণ করা জরুরি।
৮. অতীত বা ভবিষ্যতেকে বেশী গুরুত্ব দেয়া
অতীত বা ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা করা আমাদের বর্তমান মুহূর্তের সুখ কেড়ে নিতে পারে। যদি আমরা অতীত বা ভবিষ্যত নিয়ে বেশি ভাবি, তবে তা বর্তমানের আনন্দ থেকে আমাদের বঞ্চিত করতে পারে। তাই বর্তমানকে গুরুত্ব দেওয়া অত্যন্ত জরুরী।
এগুলো হলো এমন কিছু অভ্যাস, যা সচেতনভাবে বদলানো গেলে, মানুষ তার জীবনকে আরও সুখী এবং সার্থক করতে পারে। সঠিক মানসিকতা এবং অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে জীবনে আনা যায় ইতিবাচক পরিবর্তন, যা মানুষকে সত্যিকার সুখ অর্জনে সহায়ক হতে পারে।
নুসরাত