ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

কোন ভিটামিনের অভাবে ঠোঁট ফাটে? জানুন কীভাবে থাকবে তুলতুলে?

প্রকাশিত: ২২:৩৮, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

কোন ভিটামিনের অভাবে ঠোঁট ফাটে? জানুন কীভাবে থাকবে তুলতুলে?

ছবি: সংগৃহীত।

শীতের শুরুতেই ঠোঁট ফাটা অনেকের জন্য একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তবে, ঠোঁটের ফাটার কারণ শুধুমাত্র শীতের আবহাওয়া নয়, শরীরে ভিটামিনের অভাবও এই সমস্যা তৈরি করতে পারে। নানা কারণে ঠোঁটের ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে। আসুন জানি, কীভাবে শীতের পাশাপাশি ভিটামিনের অভাব ঠোঁটের সৌন্দর্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং ঘরোয়া উপায়ে কীভাবে এটিকে ঠেকানো যায়।

ঠোঁট ফাটার কারণ

ঠোঁটের ত্বক খুবই নরম এবং খুব অল্প সময়েই শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে। শীতে শুষ্কতা বেড়ে যায়, তবে একমাত্র আবহাওয়া নয়, শরীরে কিছু বিশেষ ভিটামিনের অভাবও ঠোঁট ফাটার জন্য দায়ী। সেই ভিটামিনগুলো হলো:

১. ভিটামিন বি২ (রিবোফ্লাভিন) এর অভাব
 এই ভিটামিনের অভাবে ঠোঁটের কোণে দাগ বা (ফিশার) তৈরি হতে পারে। এটি ঠোঁট ফাটা এবং শুষ্কতা বাড়ানোর জন্য দায়ী।

২. ভিটামিন বি৩ (নিয়াসিন)  
নিয়াসিনের অভাবে ঠোঁটের শুষ্কতা, লালচেভাব এবং ফাটা দেখা দিতে পারে। এই ভিটামিনের ঘাটতি আরও বড় সমস্যার কারণ হতে পারে, যেমন অ্যানথ্রোপ্যাথি বা "পেলাগ্রা"।

৩. ভিটামিন সি 
ভিটামিন সি ত্বকের পুনর্গঠন এবং সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর অভাবে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে, এবং সেই সঙ্গে ত্বক খুব দ্রুত বুড়িয়ে যেতে পারে।

৪. ভিটামিন এ
এই ভিটামিন ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এর অভাবে ত্বক শুষ্ক হয়ে ফাটতে পারে এবং প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে।

ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধের ঘরোয়া উপায়
এখন জানবো কিছু সহজ এবং প্রাকৃতিক উপায়, যেগুলি ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধে কার্যকর।

১. মধু ও অলিভ অয়েল  
মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে এবং ঠোঁটের শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে। অলিভ অয়েল ত্বকে গভীর আর্দ্রতা যোগায় এবং ঠোঁটকে নরম রাখে। একটি ছোট পাত্রে মধু এবং অলিভ অয়েল মিশিয়ে ঠোঁটে লাগালে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

২. গ্লিসারিন এবং গোলাপ জল  
গ্লিসারিন ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে, আর গোলাপ জল ঠোঁটের জন্য আরামদায়ক। রাতে ঘুমানোর আগে গ্লিসারিন ও গোলাপ জল মিশিয়ে ঠোঁটে লাগিয়ে রাখলে সকালে ঠোঁট হয়ে উঠবে সফট ও তুলতুলে।

৩. ক্যাস্টর অয়েল  
ক্যাস্টর অয়েল ঠোঁটের ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং ফাটা ঠোঁট দ্রুত ভালো করে তোলে। এটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।

৪. তেল ও চিনির স্ক্রাব 
চিনি প্রাকৃতিক স্ক্রাব হিসেবে কাজ করে, যা ঠোঁটের মৃত ত্বক তুলে ফেলে। তেল বা মধুর সঙ্গে চিনির পেস্ট বানিয়ে সপ্তাহে এক-দুই বার ঠোঁটে স্ক্রাব করুন।

৫. ভিটামিন ই তেল  
ভিটামিন ই তেল ঠোঁটের শুষ্কতা এবং ফাটা কমাতে সাহায্য করে। এটি ত্বককে হাইড্রেট করে এবং পুনর্গঠন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে।

ঠোঁটের যত্নে আরও কিছু সাদামাটা টিপস:

  • পানি পান করুন: শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
  • লিপ বাম ব্যবহার করুন: ভালো মানের লিপ বাম ঠোঁটকে আর্দ্র রাখে এবং ফাটা ঠোঁটের সমস্যা দূর করে।
  • সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন: ঠোঁটের ত্বককে রোদ থেকে রক্ষা করতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। 
  • লবণ বা তামাক থেকে দূরে থাকুন: এ জাতীয় কিছু জিনিস ঠোঁটের শুষ্কতা বাড়ায়, তাই এদের থেকে বিরত থাকুন।

শীত আসলেই ঠোঁট ফাটা একটি সাধারণ সমস্যা, তবে ভিটামিনের অভাব এবং সঠিক যত্নের অভাবে তা বেড়ে যেতে পারে। ভিটামিন সি, বি২, বি৩ এবং ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং উপরের ঘরোয়া উপায়গুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে ঠোঁটের ফাটা সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। 

সুতরাং, শীতকালীন ঠোঁটের যত্নে একটু সচেতনতা এবং সঠিক পুষ্টি আপনাকে দিতে পারে কোমল, মোলায়েম ঠোঁট!

নুসরাত

×