শিশুদের শৃঙ্খলা হলো বাবা-মায়ের অভ্যাসের প্রতিফলন। পজিটিভ রুটিন তৈরি এবং দায়িত্বশীল আচরণ প্রদর্শনের মাধ্যমে বাবা-মা তাদের সন্তানদের শৃঙ্খলাবদ্ধ, শ্রদ্ধাশীল এবং পরিপূর্ণ ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারেন। এখানে বাবা-মায়ের কাছ থেকে শিশুরা যে কিছু ভালো অভ্যাস শেখে, তা তুলে ধরা হলো:
নিয়ম মেনে চলে এবং তা সম্মান করে
নিয়মিত নিয়ম-কানুন পালন শিশুদের প্রত্যাশা বোঝাতে সাহায্য করে এবং তাদের মাঝে বিশ্বাস গড়ে তোলে। যখন বাবা-মা নিয়মগুলো ধারাবাহিকভাবে প্রয়োগ করেন, তখন শিশুরা নিয়ম মেনে চলতে এবং এর পরিণতি বুঝতে শেখে। এই স্থিরতা তাদের শৃঙ্খলাবোধ তৈরি করে।
তারা উদাহরণ সৃষ্টি করেন
শিশুরা যা দেখে তা-ই নকল করে। যখন বাবা-মা সময়মতো কাজ শেষ করেন বা আবেগ নিয়ন্ত্রণ করেন, তখন শিশুরা এই আচরণগুলো গ্রহণ করতে শেখে। এই উদাহরণ শিশুদের স্ব-শৃঙ্খলা গড়ে তুলতে সহায়তা করে।
তারা দায়িত্বের উদাহরণ দেয়
বয়স উপযোগী দায়িত্ব দেওয়া, যেমন খেলনা গুছানো বা ছোটখাটো কাজ করা, শিশুদের দায়িত্বশীল হতে শেখায়। বাবা-মা যখন দৈনন্দিন জীবনের অংশ হিসেবে এই অভ্যাসগুলো শেখান, তখন শিশুরা শৃঙ্খলাবোধ, স্বাধীনতা এবং আত্মবিশ্বাস অর্জন করে।
তারা সময়ের মূল্য বোঝে এবং শিশুদেরও তা শেখায়
খাবার খাওয়া, খেলার সময় বা ঘুমানোর রুটিন মেনে চলা শিশুদের সময়ের মূল্য বুঝতে শেখায়। বাবা-মা যখন সময়নিষ্ঠ এবং রুটিন মেনে চলেন, তখন শিশুরাও সময় ব্যবস্থাপনা, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিশ্রুতি পূরণের গুরুত্ব বুঝতে পারে।
তারা ভালো আচরণকে স্বীকৃতি দেয় এবং পুরস্কৃত করে
ভালো আচরণের জন্য পুরস্কার বা প্রশংসা শৃঙ্খলা বজায় রাখতে উৎসাহিত করে। বাবা-মা যখন শিশুদের প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেন, তখন এটি তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং শৃঙ্খলাকে একটি গুণ হিসেবে গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করে।
তারা গোপনীয়তা রক্ষা করে এবং সীমারেখা সম্মান করে
খোলামেলা আলোচনা শিশুদের তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে এবং নিয়ম বুঝতে সাহায্য করে। যখন বাবা-মা কোনো বিচার ছাড়াই শুনেন, এটি বিশ্বাস গড়ে তোলে এবং স্পষ্টতা এনে দেয়। এটি শিশুদের সীমারেখা সম্মান করতে ও শৃঙ্খলাবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিতে উদ্বুদ্ধ করে।
তারা অবাস্তব প্রত্যাশা চাপিয়ে দেয় না
পরিষ্কার এবং বাস্তবসম্মত প্রত্যাশা শিশুরা সহজে মেনে চলতে পারে। যখন গ্রহণযোগ্যতার সীমা নির্ধারণ করা হয়, তখন শিশুরা কম বেআইনি কাজ করে। এটি তাদের দায়িত্ববোধ তৈরি করে এবং স্ব-নিয়ন্ত্রণ শেখায়।
তারা নিজেদের অবহেলা করে না
বাবা-মা যখন নিজেদের যত্ন নেন, তখন তারা সুস্থতা, ভারসাম্য এবং চাপ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব দেখান। বাবা-মা যখন গঠনমূলকভাবে তাদের চাপ মোকাবিলা করেন, তখন শিশুরাও তাদের আবেগ দায়িত্বশীলভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে শেখে।
তারা সহানুভূতি ও সদয় আচরণে উৎসাহ দেয়
শিশুদের অন্যদের অনুভূতি বিবেচনা করতে শেখানো দায়িত্বশীল আচরণ এবং শৃঙ্খলাকে উৎসাহিত করে। বাবা-মা যখন নিজেরা সহানুভূতি ও সদয় আচরণ করেন, তখন শিশুরা স্বাভাবিকভাবে নিয়ম মেনে চলে এবং ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তোলে।
নাহিদা