মোরিঙ্গা বা সজনে পাতা এবং ডাঁটা প্রোটিনের একটি উদ্ভিজ্জ উৎস হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে যারা নিরামিষাশী, তাদের জন্য এটি একটি দারুণ বিকল্প। যদিও ইন্টারনেটে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এটি দইয়ের তুলনায় ৯ গুণ বেশি প্রোটিন সরবরাহ করে বলে দাবি করা হয়, কিন্তু এই দাবি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।
ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট ডা. সঙ্গীতা তিওয়ারি জানিয়েছেন, মোরিঙ্গাতে প্রোটিন ছাড়াও ভিটামিন এ, সি, ই, কেসহ বিভিন্ন বি ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে যা শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগ, ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘমেয়াদী রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে। অন্যদিকে, দই বা দইয়ের মতো দুগ্ধজাত খাদ্যও প্রোটিনের ভালো উৎস এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকর।
ডায়েটিশিয়ান ফাউজিয়া আনসারির মতে, এককভাবে মোরিঙ্গা ৯ গুণ বেশি প্রোটিন সরবরাহ করে এমন কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। বরং, সুস্থতার জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণ করাই সবচেয়ে ভালো।
মোট কথা, প্রোটিনের পরিমাণ বাড়াতে হলে খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাদ্য যেমন ডাল, ওটস, বাদাম, শস্য এবং ছানাকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
অন্যদিকে, বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন যে দই বা ইয়োগার্ট একটি ভালো প্রোটিনের উৎস, যা মাংসপেশির স্বাস্থ্য এবং সহনশীলতার জন্য অত্যন্ত জরুরি। মুম্বাই সেন্ট্রালের ওকহার্ট হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ চিকিৎসক ডা. রিতুজা উগালমুগলে বলেন, “দইতে প্রোবায়োটিকস থাকে, যা স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমকে সহায়তা করে, ফলে হজম ও পুষ্টি শোষণে সাহায্য করে।”
তাহলে, মরিঙ্গায় কি সত্যিই ইয়োগার্টের তুলনায় ৯ গুণ বেশি প্রোটিন রয়েছে? এই প্রসঙ্গে আলোকপাত করেন অ্যাপোলো স্পেক্ট্রা মুম্বাইয়ের ডায়েটিশিয়ান ফওজিয়া আনসারি। তিনি বলেন, “মরিঙ্গায় ৯ গুণ বেশি প্রোটিন থাকার দাবি বিতর্কিত। মরিঙ্গা অবশ্যই পুষ্টিকর এবং নিরামিষভোজীদের জন্য একটি চমৎকার উদ্ভিজ্জ প্রোটিন উৎস। দই, বিশেষ করে গ্রিক দইও প্রোটিনে সমৃদ্ধ। তবে একে অন্যের চেয়ে ৯ গুণ বেশি প্রোটিনযুক্ত বলে কোনও গবেষণা নিশ্চিত করেনি।” আনসারি আরও বলেন, ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যই সবসময় গুরুত্বপূর্ণ।প্রোটিন গ্রহণ বাড়াতে খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন পুষ্টিকর খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। আনসারি বলেন, “ডাল, বাদাম, বীজ, পনির, ডাল, সম্পূর্ণ শস্য, এবং ওটস প্রোটিনের চমৎকার উৎস এবং প্রতিটি খাবারই অনন্য স্বাস্থ্য সুবিধাসহ উল্লেখযোগ্য প্রোটিন সরবরাহ করে। বড় ধরনের খাদ্য পরিবর্তনের পরিকল্পনা থাকলে, ডায়েটিশিয়ানের সঙ্গে পরামর্শ করাই সঠিক পথ।
নাহিদা