ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১

বয়স বন্দি বোটক্সে

নুসরাত

প্রকাশিত: ২০:৩৫, ১০ নভেম্বর ২০২৪

বয়স বন্দি  বোটক্সে

.

বয়সকে ধরে রাখতে মানুষের চেষ্টার শেষ নেই। তারকা মহল তো বটেই, সাধারণ মানুষের মধ্যেও বয়সকে ধরে রাখতে এবং ত্বকের বলিরেখা, কুঞ্চন দূর করতে বোটক্স ইঞ্জেকশনের ব্যবহার বাড়ছে। এই প্রক্রিয়ার কার্যকারিতা  এবং এটি কতটুকু নিরাপদ চলুন তা জেনে নেওয়া যাক।

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পেশির সঙ্কোচন-প্রসারণের ফলে চেহারায় বলিরেখা পড়ে। হাসলে কিংবা কথা বলার সময় কপালে, চোখের কোণে গালে ভাঁজ পড়া শুরু হয়। কপালে ভাঁজ, গালে রিংকলের ক্ষেত্রে যে স্নায়ুগুলো পেশিকে উদ্দীপিত করার জন্য পেশির কুঞ্চন হয়, সেটিকে বোটক্স ইঞ্জেকশন দিয়ে প্যারালাইসড করে দেওয়া হয়। ফলে পেশি কুঞ্চিত হতে পারে না, ফ্লাট (সমান) হয়ে পড়ে থাকে। চোখের কোণের ভাঁজে, গালে বলিরেখার অংশে এই ইঞ্জেকশন দিলে আর ভাঁজ পড়ে না। ত্বক টানটান, মসৃণ এবং তরুণ লাগে।

এই বিশেষ কাজে নিয়োজিত বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, একবার বোটক্স করালে প্রভাব থাকে থেকে মাস। মাসল এরিয়াগুলো চিহ্নিত করে দশ-পনেরো মিনিটের মধ্যে প্রায় যন্ত্রণাহীনভাবেই ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। যেখানে বেশি রিংকল পড়ছে, সেখানে বেশি ইঞ্জেকশন পড়ে। প্রক্রিয়ার আগে এবং পরে ক্রিম লাগিয়ে দেওয়া হয়, তাতে করে ওই এলাকাটা অবশ থাকে। 

যৌবন ধরে রাখার এই কৌশল খুব বেশি ব্যয়বহুল না হলেও, চেহারার সম্পূর্ণ বোটক্স করাতে প্রায় বিশ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায় অনায়াসেই। শুধু সৌন্দর্য বাড়াতে কিংবা বয়স ধরে রাখতেই নয়, বোটক্সের রয়েছে রোগ সারানোর ক্ষমতাও। বোটক্সের মাইগ্রেনের জন্য একটি জাদুকরী নিরাময় রয়েছে। বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে এটি প্রভাবিত করে। মাইগ্রেনের সমস্যা প্রতিনিয়ত বড় হচ্ছে। এটি চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রমাণিত সত্য যে, বোটক্স ইঞ্জেকশনগুলো আপনার দীর্ঘস্থায়ী মাইগ্রেন কার্যকরভাবে নিরাময় করতে পারে। এই পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে সপ্তাহের জন্য ৩১টি বোটক্স ইঞ্জেকশন যা মাইগ্রেনের রোগীর মাথা এবং ঘাড়ে (১২টি নির্দিষ্ট জায়গায়) পুশ করা হয়।

বোটক্সের ফলে বয়স ধরে রাখা এবং রোগ সারাতে পারলেও এর রয়েছে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও। বারবার বোটক্স করালে ফেশিয়াল মাসলস অব এক্সপ্রেশনস আর কাজই করে না। তখন মুখের অভিব্যক্তি বোঝা যায় না। মুখটা অস্বাভাবিক দেখানোর সম্ভাবনা থাকে। যিনি বোটক্স করাবেন, তাকে এই বিষয়টি বিশদে বোঝানো হয়, তাকে অনুমতিপত্রে সই করানোর চলও আছে। তবে দীর্ঘদিন বোটক্স থেকে দূরে থাকলে মুখ আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে।

অনেক তারকা শিল্পী বা মানুষের এই পদ্ধতির প্রতি মোহ (বোটক্স ফিলিয়া) জন্মে যায়। দু’-এক মাসের মধ্যে সামান্য রেখা দেখা দিলেও তারা আবার অন্য কসমেটোলজিস্টের দ্বারস্থ হন। সমস্যার মূল কিন্তু সেখানেই।

তবে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে এখন এই পদ্ধতি নিরাপদ, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রায় নেই বললেই চলে।

ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়ে থাকেন, দীর্ঘদিন এই ট্রিটমেন্টের সঙ্গে যুক্ত দক্ষ কসমেটোলজিস্ট বা কিউটেনিয়াস সার্জনের কাছে বোটক্স করানো উচিত। তা হলে ফলাফল নিয়ে অনেকটাই  নিশ্চিন্ত থাকা যাবে। কাজেই, বোটক্স করিয়ে বয়সের সময়ের চাকা ঘোরানোর অভিপ্রায় থাকলে চোখ-কান খোলা রেখে, ভেবে-চিন্তে পদক্ষেপ নিতে হবে।

 

×