ফাইল ফটো
শীতকালে সাধারণত আমাদের সবারই ঠান্ডা, সর্দি, কাশি, জ্বর বেশি হয়ে থাকে। কারণ শিশু এবং বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। কারও সর্দি, হাঁচি, কাশি এবং গলা বসে যাওয়া বা গলাব্যথা হলে, সেটি সাধারণ ঠান্ডা, মৌসুমি ফ্লু বা কোল্ড অ্যালার্জি কিনা, এগুলো আলাদা করে বলা সবসময় খুব একটা সহজ নয়।
সাধারণ ঠাণ্ডা
সাধারণ ঠাণ্ডায় আক্রান্ত শিশুর নাক দিয়ে অনবরত পানি পড়া, শরীরের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পাওয়া বা হালকা জ্বরজ্বর ভাব, অরুচি বা খেতে অনিচ্ছা এবং সামান্য গলাব্যথা থাকতে পারে। নাক বন্ধ থাকলে শিশুর নাকে ড্রপ ব্যবহার করতে হবে। বাল্বসাকার বা পাম্প দিয়ে নাক পরিষ্কার রাখতে হবে। জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল খাওয়াতে হবে। মধু মিশ্রিত কুসুম গরম পানি ও স্যুপ খাওয়ালে কিছুটা উপশম হবে। অ্যান্টিহিস্টামিন সিরাপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
ঠাণ্ডায় অ্যালার্জি
বেশি সংবেদনশীল শিশুদের, শীত এলেই বারবার ঠান্ডার উপসর্গ দেখা দেয় অথবা প্রায় সম্পূর্ণ শীতকাল জুড়েই ঠান্ডা লেগে থাকে। যাকে কোল্ড অ্যালার্জি বা শীতকালীন সংবেদনশীলতা বলা যেতে পারে। অনেক বয়স্ক ব্যক্তিও হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন বা শীতজুড়ে অসুস্থ থাকেন। এর বেশিরভাগ হয়ে থাকে কোল্ড অ্যালার্জির কারণে। শীতকালে আর্দ্রতা কম থাকে, আবহাওয়া শুষ্ক ও বাতাস ঠান্ডা থাকে। এসবই সংবেদনশীলতার উদ্রেক করে তাই ঠান্ডা লেগে যায়। একারণে হাঁচি, কাশি, সর্দি ইত্যাদি দেখা দেয়।
অ্যালার্জিক রাইনাইটিস
শিশুবয়সে তো বটেই, বড়দের মধ্যেও এটা বেশ প্রকট। অ্যালার্জিক রাইনাইটিসে আক্রান্ত শিশুর প্রায় ৩০ শতাংশ পরবর্তীকালে অ্যাজমায় আক্রান্ত হয়। এটা মৌসুমি রোগ। অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণ শীতকাল ছাড়াও বসন্ত, গ্রীষ্ম এবং শরতের প্রথম দিকে হতে পারে। যদি কারও প্রতি বছর একই সময়ে ‘সর্দি’ হয় তবে সম্ভবত তার মৌসুমি অ্যালার্জি থাকতে পারে।
এ রোগে সাধারণত নাক চুলকানো ও সর্দি, চোখ, মুখ বা ত্বকের চুলকানি, হাঁচি, নাক বন্ধ (ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে) ও ক্লান্তি বা অবসাদ বোধ হয়।
অ্যাজমা বা হাঁপানি
হাঁপানি শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসযন্ত্রের রোগ। দীর্ঘদিন ধরে অতি সংবেদনশীলতা ও শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত কারণে ঘনঘন হাঁচি, কাশি এবং স্বাভাবিকভাবে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়াকে হাঁপানি বা অ্যাজমা বলে। শীতকালে অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীদের আক্রান্তের হার অনেক বৃদ্ধি পায়।
যে কারণে এ অ্যালার্জি, তার উৎস থেকে শিশুর সংস্পর্শ বাদ দেওয়াই রোগ প্রতিরোধের মূল উপায়।
সাধারণ চিকিৎসা
নাক-গলা পরিষ্কার রাখুন (বাল্বসাকার বা বাল্ব সিরিঞ্জ ব্যবহার করতে পারেন)।
জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল ওষুধ খাওয়াতে পারেন।
পর্যাপ্ত পানি ও খাদ্য খাওয়ান।
মনে রাখবেন, অ্যান্টিবায়টিকের কোনই প্রয়োজন নেই।
প্রতিরোধ ও সতর্কতা
শিশুকে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে।
শিশুকে স্যাঁতসেঁতে, অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশে রাখা যাবে না।
ধুলা-বালি, ধোঁয়া থেকে শিশুকে দুরে রাখতে হবে।
এসআর