ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

গহনায় সৌন্দর্য

কারিমুন্নেছা হক

প্রকাশিত: ২১:৩৬, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গহনায় সৌন্দর্য

ড্রেসের সঙ্গে মিলিয়ে ঘড়ি ও হালকা গহনা পরা তার প্রতিদিনের রুটিন

কর্মজীবী নারী শিউলী। চাকরি করছেন একটি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে। পরিপাটিভাবে চলতে বেশ পছন্দ করেন। ড্রেসের সঙ্গে মিলিয়ে ঘড়ি ও হালকা গহনা পরা তার প্রতিদিনের রুটিন। যে কেউ প্রথম দেখায় বলবে ছিমছাম সাজে শিউলী দেখতে খুব সুন্দর। শিউলী তার অফিসে যাওয়ার আগে ড্রেসের সঙ্গে মিলিয়ে পরার ক্ষেত্রে বেশি প্রাধান্য দেন ঘড়ি ও কানের দুলের দিকে। এই সাধারণ সাজেই শিউলী হয়ে ওঠে অনন্যা। ছোট্ট একটি গহনা কানের দুল অথচ নারীর মুখের সৌন্দর্য বর্ধনে এর গুরুত্ব অনেক। যে কোনো সাজ ফুটিয়ে তোলার অন্যতম অনুষঙ্গ এই কানের দুল।

এটি এমন একটি গহনা যা নারীর কাছে যুগ যুগ ধরে পছন্দের শীর্ষে। আদিকাল থেকে কিশোরী, বৃদ্ধা সবার কানেই ছোট-বড় সোনার রিং পরার বেশ প্রচলন ছিল। কিন্তু সময় পরিক্রমায় পুরনো মডেলের দুলগুলোর জায়গা দখল করেছে নানা রকম আধুনিক ডিজাইনের দুল। গোলাকার থেকে শুরু করে ঝোলানো, লম্বা ও বড় রিংয়ের মতো কানের দুলের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। প্রায় দেড় যুগ আগে থেকেই বড় আকৃতির কানের দুলের ব্যবহার শুরু হয়।

নানা রং ও আকৃতির কাঁধ ছোঁয়ানো দুলগুলো বেশি দেখা যায় তারকাদের কানে। কান থেকে কাঁধ অবধি নেমে যাওয়া একটু ডিম্বাকৃতির ঝুমকার ন্যায় ইয়ার রিংগুলো বেশ স্টাইলিশ বটে।
আদিকাল থেকে  সোনা, রুপা, লোহা, তামা দিয়ে কানের দুল তৈরি হচ্ছে। যা ঘুরেফিরে আসে সব সময়ই। তবে এসবের সঙ্গে আরও কিছু ম্যাটারিয়াল যুক্ত হয়ে গহনাটিতে এসেছে বৈচিত্র্য। বর্তমানে মেটাল, বিডস, পিতল, বাঁশ, কাঠ, হাড়গোড়, মাটি, সুতা, ধাতু, পালক, নারিকেলের মালা, ঝিনুক, শামুকের খোলসহ বিচিত্র সব উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে কানের দুল। আজকাল সোনার চেয়ে রুপা ও অন্যান্য উপাদানে তৈরি কানের দুলই ব্যাপক জনপ্রিয়।

বেণি, খোঁপা, খোলা চুল অর্থাৎ চুলের সাজ যাই হোক না কেন, সব রকম সাজের সঙ্গেই কানের দুল আনে পরিপূর্ণতা। ফ্যাশনের একাল-সেকাল পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, কানের ছোট্ট টপস থেকে শুরু করে ঝুমকা, পাশা সবই ঘুরেফিরে হাল ফ্যাশনে নানা সময় জায়গা করে নেয়।
গায়ে হলুদ থেকে বিয়ে বা যে কোনো অনুষ্ঠানে পরার জন্য ঝুমকা বা ঝোলানো দুল বেশি ব্যবহৃত হয়। মুক্তার ঝুমকা, টেরাকোটা ঝুমকা, কাশ্মীরী ঝুমকা, মুলতানি ঝুমকা, হুপ ঝুমকা জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের জন্য বাছাই করুন যেকোনো একটি। ঐতিহ্যবাহী কানপাশার চল চলে গেলেও এখনো প্রায়ই দেখা যায় উৎসব-পার্বণে।

সলিড গোল্ড বা গোল্ডে মিনার কাজ করা কানপাশা ছাড়াও রয়েছে ডায়মন্ড, ইমিটেশন, কাঠ, মুক্তা এসব ম্যাটারিয়াল দিয়ে তৈরি। তবে কনের সাজে পূর্ণতা আনে কানটানা দুল। এক্ষেত্রে সাধারণত সোনার তৈরি  কানটানা বেশি ব্যবহৃত হয়। আজকাল পুতির কম্বিনেশন, অক্সিডাইস, ইমিটেশন এবং সিটি গোল্ডের কানটানাও বেশ চলছে। পার্টি সাজে গর্জিয়াস লুক পেতেও এই দুল পরতে পারেন।

তবে কর্মক্ষেত্রে ছিমছাম লুক পেতে বেছে নিন ছোট্ট টপসগুলো। যা ওয়েস্টার্ন বা ক্যাজুয়াল সাজের সঙ্গেও বেশ মানানসই। তবে অনেকের স্কীনে এ্যালার্জির সমস্যা থাকে। তারা স্বর্ণের গহনা ছাড়া অন্য কোনো ম্যাটারিয়ালে তৈরি গহনা বেশিক্ষণ পরতে পারেন না। তারা গোল্ডের তৈরি নানা ডিজাইনের কানের দুল থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী ক্রয় করুন পছন্দের গহনাটি। অনেকে কানে ছিদ্র করতে চান না, তারা পরুন টিপ কানের দুল। এটি পরলে বোঝার উপায় থাকে না কানে ছিদ্র আছে কিনা।

আজকাল মার্কেটে নানা ডিজাইনের টিপ কানের দুল কিনতে পাওয়া যায়। আবার অনেকে একই কানে একাধিক ছিদ্র করেন। তাদের প্রয়োজনীয়তার কথা ভেবেই ডিজাইনাররা তৈরি করেছেন বিভিন্ন ডিজাইনের কানের দুল। যা নাকফুল থেকে কিছুটা বড় ও আকর্ষণীয়।
কানের দুলহীন নারীর মুখচ্ছবিতে মলিনতার তীব্র ছায়া ফুটে ওঠে। তাই এর চাহিদা যুগ যুগ ধরে সমান্তরালভাবে চলছে। হাল ফ্যাশনে নিত্যনতুন উপাদানে তৈরি কানের দুল যোগ হচ্ছে এই তালিকায়। শাড়ি হোক বা সালোয়ার কামিজ রঙের সঙ্গে মিল রেখে কানের দুল না পরলে সাজ পায় না পূর্ণতা। বর্তমানে সকল মার্কেটেই এক্সেসরিজ কর্নার রয়েছে যেখানে পাওয়া যায় নান্দনিক ডিজাইনের দুল। আবার ফ্যাশন হাউসগুলোতেও থাকে আলাদা স্টোর বিভিন্ন উপাদানে তৈরি গহনা বিক্রির জন্য। নিজেকে আকর্ষণীয় রাখতে সাধ ও সাধ্যের সঙ্গে মিল রেখে ক্রয় করুন আপনার পছন্দনীয় কানের দুল।

ছবি : বর্ণন লাইফস্টাইল

×