.
নভেম্বর মাস আসেই যেন বেড়াতে যাওয়ার বার্তা নিয়ে। ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের সারা বছরের পরীক্ষা আর পড়ালেখায় আসে সমাপ্তি। আর সেই খুশিতে ছেলেমেয়েরা ঘুরতে যাওয়ার বায়না করে বাবা-মার কাছে। কখনো যায় দাদা বা নানার বাড়ি অথবা যায় কোনো পর্যটন স্পটে। আর এ কারণেই ডিসেম্বরে পর্যটন স্পটগুলো থাকে লোকারণ্য। কিন্তু ঋতু পরিবর্তনের এ সময়ে পোশাক-পরিচ্ছদের ব্যাপারে সচেতন হতে হয়। কেননা হেমন্তের হিমেল বাতাস আর ভোরের শিশির ভেজা ঘাস শরীরে ঠান্ডা অনুভূতি আনে। এতে সহজেই অনেকে ঠান্ডাজনিত সমস্যায় ভোগেন। তাই এ সময়ে ঘর থেকে বাইরে বেরোতে যাওয়ার আগে সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে বের হতে হবে। ছোটদের জন্য নিতে হবে ফুল স্লিভের পোশাক এবং পাতলা সোয়েটার। আরেকটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন, শহরের তুলনায় গ্রামের তাপমাত্রা কম থাকে। তাই গ্রামের বাড়িতে উষ্ণতা দেয় এরকম বাড়তি পোশাক নিয়ে বেড়াতে যেতে হবে। ছোটদের পাশাপাশি বড়দের পোশাকের ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে।
নবদম্পতি তানভীর ও অনামিকা। বিয়ের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও হানিমুনে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। তারা পরিকল্পনা করেছে এবারের শীতে যাবে কোনো দর্শনীয় স্থানে। কোথায় যাবে এবং কিভাবে যাবে তা নিয়ে ভাবনার অন্ত নেই! প্রথমেই তারা সিদ্ধান্ত নিল গরম কাপড় কেনাকাটা করার। এক্ষেত্রে দুজনার আবার ভিন্ন ভিন্ন চাহিদা। তানভীর ঠান্ডা থেকে রক্ষা পেতে বরাবরই হুডি বেছে নেয়। আর পোশাকে বৈচিত্র্য আনতে হুডির পাশাপাশি পরতে পছন্দ করেন জ্যাকেট ও ফ্যাশনেবল মাফলার। তবে অনামিকার কাছে শীত মানেই আধুনিক কাটছাঁটের সোয়েটার, পঞ্চ, চাদর। শীতকালে পা অনেক ঠান্ডা থাকে অনামিকার। এ জন্য মোজা তার শীত নিবারণের অন্যতম অনুষঙ্গ। তার সংগ্রহে রয়েছে নান্দনিক কালারের বিভিন্ন মোজা।
ইতোমধ্যে তারা একটি বড় লাগেজ কিনেছে দুজনার কাপড় শেয়ার করে নিতে। পাশাপাশি অনামিকা একটু বড় সাইজের সাইট ব্যাগ নিয়েছে। কেননা শীতের সময়ে বাড়তি কিছু কসমেটিকস নিতে হয় ত্বকের যত্নে। জুতাও নিয়েছেন ¯িœকার্স এবং স্লিপার দুই ধরনেরই। যখন যেমন প্রয়োজন সেটাই পরবেন। এটা একটি সুন্দর ভ্রমণের প্রস্তুতিও বটে।
আধুনিক যুগে মানুষের মধ্যে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ভ্রমণ প্রবণতা। বছরের বিভিন্ন সময়ে সুযোগ পেলেই পর্যটকরা ছুটে যান নান্দনিক দর্শনীয় স্থানে। যারা সপরিবারে ঘুরতে ইচ্ছুক তারা শীতের সময়টাকেই বেছে নেন। গরমের হাঁসফাঁস নেই, শুধু উষ্ণ পোশাক হলেই স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়ানো যায়। তবে যে কোনো জায়গায় যাওয়ার আগে প্রয়োজন পূর্ব প্রস্তুতি। প্রস্তুতির অনুষঙ্গে থাকে নানা বিষয়। পোশাক, জুতা, ব্যাগ ও কসমেটিকস ইত্যাদি।
দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাপমাত্রায় ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। ভ্রমণস্থলের আবহাওয়া বিবেচনা করে শীতের পোশাক নিতে হবে। কোনো কোনো জায়গায় তাপমাত্রা খুবই নিম্ন থাকে। সে সব জায়গায় পর্যাপ্ত শীত পোশাক ছাড়া গেলে ঠান্ডাজনিত কারণে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শীতকালে গাঢ় রঙের মোটা তাপ নিরোধক কাপড়ের তৈরি জামা পরুন।
পোশাকের পাশাপাশি ঠান্ডা থেকে বাঁচতে আরও যেসব বিষয়ে নজর দেওয়া প্রয়োজন তার মধ্যে অন্যতম মাফলার, মোজা, গ্লাভস ও হুডি পোশাক। রোদ থেকে মুখের সৌন্দর্য রক্ষায় কাপড়ের টুপি, ক্যাপ ও রোদচশমা ব্যবহার করুন। এ ছাড়াও ভ্রমণে অবশ্যই ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে। ভ্রমণে যাবেন কিন্তু সুইমিং পুল বা সাগরের পানিতে ভিজবেন না এমন তো হতে পারে না। এ জন্য নারীদের একটু ভারি কাপরের পোশাক পরতে হবে। না হলে ভেজা কাপড় শরীরে লেগে থাকলে দৃষ্টিকটু লাগে। যত দ্রুত সম্ভব গোসলের পরে পোশাক পরিবর্তন করতে হবে।
ঘুরতে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাসার ছোট সদস্যদের পোশাক, জুতা আলাদা ব্যাগে নিতে পারেন। যে কোনো প্রয়োজনে যেন সহজেই হাতের কাছে পাওয়া যায়। শিশুদের জন্য আরামদায়ক কেডস হলে ভালো, তবে কোনোভাবেই হিল বা উঁচু জুতা ব্যবহার করবেন না। যদি শিশুকে নদী, ঝরনা বা সাগরে নিয়ে যান, তবে তাদের জন্য বাড়তি পোশাক সঙ্গে রাখবেন। দেশীয় ফ্যাশন হাউস অথবা যে কোনো সাধারণ মার্কেট থেকে ক্রয় করুন আপনার পছন্দনীয় ভ্রমণের অনুষঙ্গ। যারা এখনো পরিকল্পনা করছেন ঘুরতে যাবেন, তারা আজ থেকেই পূর্ব প্রস্তুতির কাজ শুরু করুন। পরিকল্পনার মাধ্যমে যে কোনো কাজই হয় আরামদায়ক ও স্বাচ্ছন্দ্যময়।