ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

সৌন্দর্য বাড়াতে পিয়ারসিং

প্রকাশিত: ২২:২৪, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সৌন্দর্য বাড়াতে পিয়ারসিং

শরীরের বিভিন্ন স্থান সুচ দিয়ে ছেদ করাই পিয়ারসিং

শরীরের বিভিন্ন স্থান সুচ দিয়ে ছেদ করাই পিয়ারসিং। ছেদ করা অঙ্গগুলোকে গহনা দিয়ে সাজিয়ে তোলা বর্তমান ফ্যাশনে বেশ জনপ্রিয়। নিজেকে আকর্ষণীয় করে তোলার এই পদ্ধতি দেশী-বিদেশী সিনে তারকা থেকে শুরু করে তরুণ প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের কাছেও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। শরীর ছেদ করে গহনা পরার এই প্রথা নতুন কোনো ব্যাপার নয়।

আমরা যদি পৃথিবীর প্রাচীন ইতিহাস ঘেঁটে দেখি তাহলে  জানতে পারব,  আফ্রিকা মহাদেশের উপজাতিদের মধ্যে বহু যুগ ধরে এটির প্রচলন রয়েছে। তবে এই ত্বক ছেদনের প্রবণতা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাচীন গ্রাম-বাংলার আদিবাসীদের মধ্যে নাক-কান-ভ্রুসহ দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে অলঙ্কার পরার রীতি রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক উপায়ে ছিদ্রালঙ্কারের প্রয়োগ বদলে দিতে পারে আপনার ব্যক্তিত্ব। আপনিও ছড়াতে পারেন নীলাভ উষ্ণতা।
কর্ণ ছেদন : কানের লতিতে ছেদ করা একটি সুপ্রাচীন প্রথা। আমাদের দেশের গ্রাম এবং শহরের সব মেয়েদেরই দুই কানে একটি করে অথবা একাধিক ছেদ থাকে।

এছাড়াও অনেকে কানের লতি থেকে শুরু করে পিনা (কানের লতির উপরিভাগ) পর্যন্ত একাধিক ছিদ্র করে গহনা পরে থাকে। ছেলেদের ক্ষেত্রে এক কানে আবার কখনো দুই কানেই পিয়ারসিং করতে দেখা যায়। কান পিয়ারসিংয়ের কিছু বিজ্ঞানসম্মত স্বাস্থ্যগত উপকারিতাও রয়েছে। কানের ডান ও বাম লতির সঙ্গে মস্তিষ্কের দুই পাশের দুটি গুরুত্বপূর্ণ অংশের সংযোগ থাকে। কান ফোঁড়ালে সেসব অংশ সক্রিয় হয়ে ওঠে।
নাসিকা ছেদন : আমাদের দেশীয় রীতিতে নাকের সাধারণত বা-পাশ ছিদ্র্র করা হয়ে থাকে। তবে বর্র্তমান ফ্যাশনে নাকের উভয় পাশ এবং নাকের মাঝখানের অংশেও ছেদ করার প্রচলন রয়েছে। যা সেপটাম পিয়ারসিং নামে পরিচিত। সাধারণত পশ্চিমা পোশাকের সঙ্গে সেপটাম পিয়ারসিং ভালো মানায়। 
নাভিকু-লের গহনা : নাভিকে আবেদনময় করে তুলতে অনেকেই বেছে নেয় উপযুক্ত ছিদ্রালঙ্কার। শাড়ি অথবা লেহেঙ্গার সৌন্দর্যকে অনেকাংশে আবেদনময়ী করে তুলতে পারে একটি সঠিক নাভিকু-লের গহনা। যদিও বাংলাদেশে এর প্রচলন তেমন নেই। তবে উন্নত বিশ্বের ফ্যাশনে এটির অনেক জনপ্রিয়তা রয়েছে।
ভ্রু-সজ্জায় ছিদ্রালঙ্কার : ভ্রু-যুগলকে আকর্ষণীয় করে তুলতে নারী-পুরুষ, উভয়েই নিজের পছন্দমতো ভ্রু-ছিদ্রালঙ্কার বেছে নিতে পারেন। এতে করে চোখের ভাষা এবং চোখের সৌন্দর্য উভয়ই বৃদ্ধি পাবে। একটি অথবা দুটি ভ্রুতেই ছিদ্র করে অলঙ্কার পরা যেতে পারে। হতে পারে সিলভার অথবা অ্যান্টিকের সাধারণ একটি রিং কিংবা পাথর বসানো কারুকাজ করা রিং। 
বহির্বিশ্বে নারী-পুরুষ উভয়ই শরীরের আরও অনেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ছেদক অলঙ্কার পরেন। জিভ ও ঠোঁট তার মধ্যে অন্যতম। আমাদের দেশে পার্লারগুলোতে কম খরচেই অঙ্গ ছেদন অথবা পিয়ারসিং করানো যায়। এছাড়াও ঢাকা শহরের বিভিন্ন বড় বড় শপিংমলে শুধুমাত্র অঙ্গ ছেদনের ওপর কাজ করে এমন কিছু সৌন্দর্য প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীর ছেদনের আগে বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। অ্যালার্জি, অ্যাজমা, ডায়াবেটিকস বা এমন কোনো অসুখ থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে  ছেদ করা উচিত। নইলে ছেদক-অংশ থেকে শরীরে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। শরীরের যে কোনো অংশে ছিদ্র করার পর প্রায় আট-নয় মাস পর্যন্ত বিভিন্ন অ্যান্টিসেপটিক লাগিয়ে ওই বিশেষ অংশটির যতœ নেওয়া উচিত।

অলঙ্কারের উপকরণ মরচে নিরোধক ধাতু ( যেমন- স্বর্ণ বা রূপা হলে উত্তম) হলে ভালো হয়। এসব সতর্কতা মেনে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে পিয়ারসিং করে গহনা পরিধান করে, আপনিও নিজেকে অন্যরকম সৌন্দর্যে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন। ফ্যাশন প্রতিবেদক

×