ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

বর্ষায় থাকুক যত্নে

শিউলী আহমেদ

প্রকাশিত: ২২:০৭, ১৪ জুলাই ২০২৪; আপডেট: ২২:৪১, ১৪ জুলাই ২০২৪

বর্ষায় থাকুক যত্নে

.

শুরু হয়েছে বর্ষাঋতু। প্রায় সারাদিন রুমঝুম বৃষ্টি ঝরতেই থাকে। ঘরে থাকলে বৃষ্টিপ্রিয় মানুষগুলো বৃষ্টিতে ভেজার জন্য উন্মুখ থাকে। কিন্তু দীর্ঘ সময়ের বৃষ্টি সব সময় ভালো লাগে না। তাতে ঘর স্যাঁতসেঁতে হয়, কাপড় শুকাতে সমস্যা হয়। তাছাড়া ভেজা আবহাওয়ায় অনেক সময় প্রিয় জিনিসগুলো নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু ঋতুকে তো আর চাইলেই বদলে ফেলা যায় না। বৃষ্টির সময়ে বৃষ্টি হবেই, পরিবেশ স্যাঁতসেঁতে হবেই। তাই প্রিয় জিনিসগুলো নিয়ে আমরাই একটু সাবধান হই, যতœ নেই।

ব্যাগ : ব্যাগ সাধারণত দীর্ঘদিন আলমারিতে বা কোথাও বন্দি থাকলে ফাঙ্গাস পড়ে যায়। আর বর্ষাকালে তো পরিবেশ এমনিতেই ভেজা থাকে। ব্যাগ খোলা বাতাসেই ভালো থাকে। আলমারিতে রাখলেও মাঝে মাঝে রোদ আর বাতাস লাগানো উচিত। তবে সরাসরি রোদে দেওয়া যাবে না।

এতে রং নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর বৃষ্টির পানিতে ভিজে গেলে শুকনো সুতি কাপড়ে পানি ভালো করে মুছে নিতে হবে। তারপর ফ্যানের বাতাসে রাখতে হবে। চামড়ার ব্যাগ পানিতে ভিজলে ফাঙ্গাস পড়ে যেতে পারে, সেক্ষেত্রে রোদে দেওয়া যাবে না। এতে ব্যাগ শক্ত হয়ে যাবে। বাইরের লেয়ার ফেটেও যেতে পারে। খবরের কাগজ বা টিস্যু পেপার ব্যাগের মধ্যে রেখে দিতে পারেন, এতে ভিতরে পানি গেলে তা শুষে নিবে। শুকানোর পর ট্যালকম পাউডার ছড়িয়ে দিবেন, তাতে সব আর্দ্রতা চলে যাবে। আজকাল বাজারে ব্যাগ রাখার সুন্দর প্লাস্টিকের ব্যাগ স্টোরেজ পাওয়া যায়। সেগুলোতেও ব্যাগ রাখতে পারেন। ভালো থাকবে। অথবা সুতি কাপড়ে মুড়িয়ে রাখতে পারেন। তবে বর্ষাকালে চামড়ার ব্যাগ ব্যবহার না করে র‌্যাক্সিনের ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন।

গহনা

সোনা ও রুপা : সোনার গহনার খুব একটা যত্ন না লাগলেও রূপা কিন্তু ঘামে ভিজে কালো হয়ে যায়। সোনা-রুপা বৃষ্টিতে ভিজে গেলে বাতাসে কিছুক্ষণ রেখে শুকিয়ে নিন। এরপর টিস্যু বা নরম কাপড়ে মুড়িয়ে বাক্সে ভরে রেখে দিন। তবে গহনার বাক্সে সিলিকা জেল ব্যবহার করতে পারেন, এটি বাতাসের আর্দ্রতা শুষে নেয়।

এ্যান্টিক ও মিশ্র ধাতুর গহনা : নিত্য ব্যবহার্য মেটালের গহনাগুলো স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় মরিচা ধরার প্রবণতা থাকে। তাই এগুলোকে এয়ার টাইট বাক্সে অথবা জিপলক ব্যাগে সংরক্ষণ করা যায়। এগুলো ভিজে গেলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই বাইরে থেকে এসে সঙ্গে সঙ্গেই নরম সুতি কাপড় দিয়ে মুছে, বাতাসে শুকিয়ে নিন।

কাপড়, কাঠ ও মাটির গহনা : এগুলো পানি থেকে সাবধানে রাখতে হবে। কারণ ভিজলেই মাটিরগুলো রং নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কাঠে শ্যাওলা পড়ে নষ্ট হয়ে যাবে। তবে বৃষ্টির দিনে এগুলো না পড়ার চেষ্টা করবেন। আর যদি পড়তেই হয়, তাহলে বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে খুলে নরম কাপড়, টিস্যু বা তুলায় মুড়িয়ে ব্যাগে রাখুন।

স্যাঁতসেঁতে ঘর : বর্ষাকালে জানালার পর্দা সরিয়ে ঘরে রোদ বা আলো আসতে দিবেন। বৃষ্টি না থাকলে জানালা খোলা রাখবেন। তাতে ঘরের স্যাঁতসেঁতে ভাব দূর হবে। ঘর মোছার পর বাইরের বাতাসে বা ফ্যান ছেড়ে ঘর শুকিয়ে নিবেন। আর দীর্ঘ সময় বৃষ্টি হলে চেষ্টা করবেন কাপড় কম ভেজাতে। না হয় কাপড়ে গন্ধ হয়, ঘর আরও বেশি স্যাঁতসেঁতে হয়।

পোকামাকড়ের উপদ্রব : এ সময়টা বাইরে বৃষ্টির কারণে ঘরে পিঁপড়া বা বিভিন্ন রকম পোকার উপদ্রব হয়। পাতি লেবুর রস পিঁপড়ার লাইনের ওপর ছেড়ে দিলে পিঁপড়া দূর হয়। বিছানার নিচে নিমপাতা রেখে দিতে পারেন। ঘর মোছার পানিতে কয়েক চামচ ভিনেগার মিশিয়ে নিলে পোকামাকড় দূর হবে। পুদিনা পাতা কুচি করে ঘরের কোণে রেখে দিলেও পোকামাকড় দূর হয়।

এখন গ্রীষ্মকালীন মিষ্টি ফলের গন্ধে ঘরে মাছির উপদ্রবও বাড়ে। তাই স্যাভলন পানি দিয়ে ঘর মুছে নিলে বা সেই পানি খাবার রাখার জায়গায় রেখে দিলে মাছি দূর হবে। অনেক সময় রান্নাঘরের সিংক বা ওয়াশরুমের লাইন দিয়েও পোকামাকড় আসে। তাই মাঝে মাঝে সেখানে গরম পানি ঢেলে দিতে পারেন। তাতে পোকা মরে যাবে। সর্বোপরি এ সময় ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে গুছিয়ে রাখুন। তাতে স্যাঁতসেঁতে ভাব যেমন কম হবে, তেমনি পোকার উপদ্রবও কম থাকবে।

×