
ছবিঃ সংগৃহীত
বাংলাদেশে জোরপূর্বক জমি দখলের ঘটনা একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সাধারণ মানুষের জমি জোরপূর্বক দখল করে নেয়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা কী ধরনের আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারেন—তা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশের দণ্ডবিধি (Penal Code) এবং দখল সংক্রান্ত বিভিন্ন আইন অনুযায়ী, কারও জমি বা সম্পত্তিতে অবৈধভাবে প্রবেশ বা দখল করা অপরাধ। দণ্ডবিধির ৪৪১ ধারা অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া জমিতে প্রবেশ করাকে অবৈধ অনুপ্রবেশ (Criminal Trespass) হিসেবে গণ্য করা হয়।
দখলদার যদি হুমকি, ভয়ভীতি বা জবরদস্তি করে জমি দখল করে নেয়, তাহলে দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারা অনুযায়ী সেটি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
এক্ষেত্রে প্রাথমিক করণীয়সমূহ স্থানীয় প্রশাসন বা থানায় অভিযোগ করা। জোরপূর্বক দখলের শিকার হলে, প্রথমে স্থানীয় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (GD) বা এফআইআর (FIR) করতে হবে। এতে স্পষ্টভাবে জমির বিবরণ, দখলের তারিখ, এবং অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করতে হবে। এতে কাজ না হলে, ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা থেকে সহায়তা নিতে হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি (চেয়ারম্যান, মেম্বার বা কাউন্সিলর)-এর মাধ্যমে সালিশি উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। তবে এটি বিচার নয়, বরং সমস্যা সমাধানের একটি চেষ্টা মাত্র।
এছাড়া জেলা প্রশাসক বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ করা যেতে পারে। জমি দখল একটি প্রশাসনিক বিষয় হওয়ায় ইউএনও বা ডিসির কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা যেতে পারে। তারা ভূমি অফিস, সহকারী কমিশনার (ভূমি), অথবা স্থানীয় থানা কর্তৃপক্ষকে তদন্তের নির্দেশ দিতে পারেন।
তাছাড়া সরাসরি সিভিল কোর্টে মামলা করা যেতে পারে। যদি দখলকারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপে কাজ না হয়, তবে জমির মালিকানা পুনরুদ্ধারের জন্য সিভিল কোর্টে মামলা দায়ের করা যায়। এক্ষেত্রে স্থায়ী বা অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার (injunction) আবেদন করা যেতে পারে, যাতে দখলকারী কোনো ধরনের নির্মাণ বা পরিবর্তন করতে না পারে।
সূত্রঃ https://www.facebook.com/reel/1290514605373565
আরশি