
ছবিঃ সংগৃহীত
সম্প্রতি বাংলাদেশ পুলিশের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম আদালত প্রক্রিয়ায় সমন এবং এর গুরুত্ব নিয়ে একটি বিস্তারিত ভিডিও বার্তা প্রদান করেছেন। তিনি জানান, সমন একটি আইনি নোটিশ যা আদালত কর্তৃক মামলার পক্ষ বা সাক্ষীদের কাছে পৌঁছানো হয়, যেন তারা নির্ধারিত তারিখে আদালতে উপস্থিত হয়।
কর্মকর্তা তার ভিডিও বার্তায় উদাহরণস্বরূপ একটি ঘটনা তুলে ধরেন, যেখানে এক মহিলা থানায় এসে তার স্বামীর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারির বিষয়ে জানতে চান। তিনি অভিযোগ করেছিলেন যে তার স্বামী সমন বা আদালতের ডাকা নোটিশের কথা বুঝতে পারেননি এবং "সুমন-টুমন" শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। পুলিশ কর্মকর্তা তাকে ব্যাখ্যা করে জানান, এটি আসলে সমন এবং এই আইনি প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা প্রয়োজন।
সমন হল একটি আদালত দ্বারা জারি করা নোটিশ, যা মামলার শুনানির জন্য মামলার পক্ষগুলো, আসামি বা সাক্ষীদের উপস্থিতির জন্য ডাকা হয়। এতে সাধারণত মামলার নম্বর, আদালতের নাম, বিচারকের নাম এবং শুনানির তারিখ ও সময় উল্লেখ থাকে। যখন একটি সমন জারি করা হয়, তখন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সাক্ষীকে নির্ধারিত তারিখে আদালতে উপস্থিত থাকতে হয়। যদি তারা উপস্থিত না হন, তবে তাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হতে পারে।
পুলিশ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, "অনেকে অভিযোগ করেন যে তারা সমন পাননি, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, সমনটি সাধারণত থানার মাধ্যমে পৌঁছানো হয়। পুলিশ অফিসাররা এটি প্রাপকের বাড়িতে পৌঁছে দেন এবং প্রাপক তার স্বাক্ষর দিয়ে গ্রহণ করেন। যদি প্রাপক বাড়িতে না থাকেন, তবে পুলিশ এটি পরিবারের অন্য সদস্যের কাছে দিতে পারেন অথবা বাড়ির দরজায় টাঙ্গিয়ে রাখতে পারেন।"
তিনি আরও বলেন, "এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, আপনি যে সমনটি পেয়েছেন তা গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করুন। যদি সমনটি ঠিকভাবে না পেয়ে থাকেন, তা হলে আপনাকে অবশ্যই আদালতের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।"
কর্মকর্তা জানান, "মামলার সত্যতা যাই হোক, আপনার যদি মনে হয় যে সমনটি ভুলভাবে জারি হয়েছে বা এটি মিথ্যা মামলা, তবে আপনি আদালতে নিজের প্রতিরক্ষা উপস্থাপন করতে পারেন।" তিনি বলেন, মামলায় অভিযোগের সঠিকভাবে প্রতিরোধ করতে এবং আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হলে, সমনকে যথাযথভাবে গ্রহণ করা এবং সময়মতো আদালতে হাজির হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জাহাঙ্গীর আলম আরও যোগ করেন, "আপনার যদি কোনো আইনজীবী থাকে, তাহলে তাকে সঙ্গে নিয়ে বিষয়টি ঠিকমতো পরিচালনা করুন। আপনার বিচার পেতে হলে আপনাকে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। বিচারক অথবা আদালতের কাছে আপনি যদি প্রমাণ বা যুক্তি দিতে পারেন যে আপনি এই মামলায় জড়িত ছিলেন না, তবে আপনার নাম মামলার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে।"
তিনি সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন যে আদালতের সমন বা আইনি নোটিশকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করতে হবে এবং এটি কোনোভাবেই অবহেলা করা উচিত নয়। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে যদি আদালত কোনো অভিযোগ করে, তবে তাকে আইনগতভাবে তার প্রতিরক্ষা উপস্থাপন করার সুযোগ রয়েছে এবং এটাই সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়া।
"সমন, সত্য হোক বা মিথ্যা, আপনার উচিত তা সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করা এবং সময়মতো আদালতে হাজির হওয়া। আপনি যদি সমন গ্রহণ না করেন বা সময়মতো উপস্থিত না হন, তবে আপনার জন্য আইনগত জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে," বলেন জাহাঙ্গীর আলম।
তথ্যসূত্রঃ https://www.facebook.com/share/v/1DZsfyp2Mc/
মারিয়া