
ছবি: প্রতীকী
জামালপুরে ৩২ বছর আগে এক বন্ধুকে হত্যার অপরাধে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান ও চারজনকে খালাস দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. আবুবকর ছিদ্দিক এই রায় ঘোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্ত হাফিজুর রহমান সরিষাবাড়ী উপজেলার ঢুরিয়াভিটা গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালের ২৩ মে বিকালে সরিষাবাড়ী উপজেলার ঢুরিয়াভিটা গ্রামের হাফিজুর রহমান তার বাল্যবন্ধু মোজাম্মেল হক মোজাফফরকে তার বাড়ি থেকে দাওয়াত খাওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে মোজাম্মেল হক মোজাফফর নিখোঁজ ছিলেন।
পরের দিন জামালপুর সদর উপজেলার মেস্টা ইউনিয়নের হাসিল পারিল গৌরীপুর গ্রামে কাঁচা রাস্তার উপর একটি মরদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে অজ্ঞাতপরিচয়ে দাফন করে এবং ২৫ মে জামালপুর সদর থানায় পুলিশ মামলা দায়ের করে।
মোজাম্মেল হক মোজাফফরকে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তার ভাই শাহজাহান ১৯৯৩ সালের ২৮ মে মেস্টা ইউনিয়নে লাশ পাওয়ার খবর পান এবং তিনি থানায় গিয়ে নিহতের ছবি ও জব্দ মালামাল দেখে তার ভাইকে শনাক্ত করেন।
সরিষাবাড়ী উপজেলার ঢুরিয়াভিটা গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে হাফিজুর রহমান, গোবিন্দনগর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান, সদর উপজেলার কেন্দুয়া দেওয়ানীপাড়া গ্রামের মৃত নিজার উদ্দিনের ছেলে শওকত আলী, সরিষাবাড়ী উপজেলার পাখাডুবি গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে গোলাম রব্বানী, একই এলাকার জসীম উদ্দিনের ছেলে ওমর আলী পূর্বপরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক মোজাফফরকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। ১৯৯৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
পরবর্তীতে ২০০০ সালের ১১ অক্টোবর ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় ৩১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সরিষাবাড়ী উপজেলার ঢুরিয়াভিটা গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে হাফিজুর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে দুই মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে রায় দেন অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. আবুবকর ছিদ্দিক।
রায় ঘোষণার সময় আসামি উপস্থিত না থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। বাকি চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট এ.কে.এম নাজমুল হুদা।
কাওসার/ সুরাইয়া