
ছবি: সংগৃহীত
জমি কেনার প্রক্রিয়া শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি বিষয়ও। বর্তমানে অনেকেই জমি কেনার আগেই ‘বায়না’ বা প্রাথমিক চুক্তি সম্পাদন করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে অনিয়ম ও অসতর্কতার কারণে ভবিষ্যতে দেখা দেয় নানা জটিলতা। ২০০৬ সালের পর থেকে বাংলাদেশে জমি কেনার ক্ষেত্রে ‘বায়না’ চুক্তি নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে, এই নিবন্ধনের মাধ্যমে জমি কেনাবেচার সময় প্রায় ৮০ শতাংশ ঝুঁকি দূর করা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘বায়না’ চুক্তির আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যাচাই না করলে ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা, প্রতারণা কিংবা জমি হারানোর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। তাই জমি কেনার আগে নিচের চারটি সতর্কতা মানা অত্যন্ত জরুরি:
১. জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছবি:
বায়না চুক্তির জন্য ক্রেতা ও বিক্রেতার ভোটার আইডির তিনটি কপি এবং সাম্প্রতিক রঙিন ছবি জমা দিতে হয়। ছবিতে যেন কান স্পষ্ট দেখা যায় এবং চশমা না থাকে—এটি বাধ্যতামূলক।
২. খাজনা ও খারিজের নথি:
বায়নার সঙ্গে জমির সর্বশেষ বছরের খাজনা ও খারিজ সংক্রান্ত দলিল সংযুক্ত করা আবশ্যক। এই দলিল নিশ্চিত করে যে, জমিটি বিক্রয়ের উপযোগী এবং সরকারের কাছে কোনো দেনা নেই।
৩. দলিল যাচাই:
জমির সকল কাগজপত্র, যেমন—মৌজা ম্যাপ, দাগ নম্বর, পরিমাণ, দখল, মালিকানা ইত্যাদি ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। প্রয়োজনে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে এসব নথি সংগ্রহ করে যাচাই করুন।
৪. আইনজীবীর পরামর্শ:
জমি কেনার আগে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এতে জমি সংক্রান্ত প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হয় এবং চুক্তি আরও নির্ভরযোগ্য হয়।
বিশেষ পরামর্শ:
- মৌখিক চুক্তি নয়, লিখিত ও রেজিস্ট্রার অফিসে নিবন্ধিত বায়না চুক্তি করুন
- চুক্তিপত্রে জমির বিস্তারিত তথ্য ও মূল্য উল্লেখ করুন
- অগ্রিম টাকা দেওয়ার প্রমাণ হিসেবে রসিদ সংগ্রহে রাখুন
জমি কেনা একটি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ। এটি যেন ভবিষ্যতে সমস্যার কারণ না হয়, সে জন্য প্রথম ধাপেই সতর্কতা জরুরি। বায়না চুক্তির সময় সঠিক নিয়ম মেনে চললে প্রতারণা ও আইনি জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
এসএফ