.
সবারই স্বপ্ন থাকে লেখাপড়া শেষে ভালো একটি চাকরি ও চমৎকার একটি কর্মক্ষেত্রের। স্বপ্নের চাকরি পেতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনেকে পড়াশোনাও করে থাকেন। তবে কিছু ভাবনাগত অভাবের ফলে স্বপ্নকে ধরতে পারে না। অভাবগুলো এতটাই তীব্র হয় যে, পুরোদমে বিকল করে দেয় ভেতরে পুষে রাখা লালিত স্বপ্নের চাকরির আকাক্সক্ষা। অনাকাক্সিক্ষত এসব অভাব জয় করেই আমাদের স্বপ্নের লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। ভালো ক্যারিয়ার গড়তে হলে অনেক বিষয়ই বিবেচ্য। মানুষের ক্যারিয়ার গড়ার কারিগর সে নিজেই। ক্যারিয়ার গড়ার ৯টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস নিয়ে আলোচনা করা হল-
১. শিখতে হবে যে কোনো পরিস্থিতিতে:
প্রতিনিয়ত পৃথিবীর পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন পদ্ধতিও বের হচ্ছে। যদি মনে হয় আপনার দক্ষতা অনুযায়ী বর্তমান চাকরি অনেক ভালো, তারপরও আপনাকে বর্তমান অবস্থানে থেকে সবকিছু ভালোভাবে শিখে নিতে হবে। যদি ভবিষ্যতে এর চেয়েও ভালো কিছু করতে চান সেক্ষেত্রে আপনার পূর্ব-দক্ষতা এবং জ্ঞান কাজে লাগবে।
২. শুনুন, প্রশ্ন করুন এবং শিখুন: কথায় আছে একজন ভালো শ্রোতা অনেক কিছু শিখতে পারে। তাই আপনার সহকর্মী ও সিনিয়র যা বলেন, তা শুনুন। তাদের অভিজ্ঞতা এবং উপদেশ থেকে আপনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন। আপনার কাজ সম্পর্কিত যে যে বিষয়ে সমস্যা অনুধাবন করবেন, সে সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞেস করে সমাধান জেনে নিন।
৩. বর্তমান কাজকে মূল্যায়ন করতে শিখুন: ক্যারিয়ার শুরুর সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হচ্ছে আপনার বর্তমান কাজ। কোনো কিছুই বিনাশ্রমে আসে না, যারা এটা মানে তারাই সফলকাম হয়। আপনি যদি আপনার বর্তমান কাজের সব দায়-দায়িত্ব আস্থার সঙ্গে পালন করেন, তাহলে এটাই হতে পারে আপনার নতুন বা ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গড়ার সিঁড়ি। যখন যে কাজ আপনার ওপর অর্পিত হবে তা নির্দ্বিধায় করুন। কাজের মাধ্যমেই পারেন আপনি আপনার বসের তথা প্রতিষ্ঠানের আস্থা অর্জন করতে। তাহলে ভবিষ্যতে আপনার প্রতিষ্ঠানের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদ সৃষ্টি হলে, সেই পদের জন্য যোগ্যতার নিমিত্ত আপনাকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
৪. সম্পর্ক গড়ে তুলুন: ক্যারিয়ারের পরবর্তী ধাপ অনেকটা আপনার যোগাযোগের সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করে। শতকরা ৫০%-এরও বেশি চাকরি হয় জানা শোনা ও সম্পর্কের মাধ্যমে। আপনার সম্পর্কের জাল যদি বিস্তৃত হয়, তবে সেখান থেকে আপনি নতুন নতুন সুযোগ ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ধারণা পাবেন যা আপনার ক্যারিয়ারে নতুন দ্বার উন্মোচন করতে পারে। তাই নতুন সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে এবং তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে।
৫. কাজকে গ্রহণ করুন: বর্তমান কাজকে সাদরে গ্রহণ করতে শিখুন। নিশ্চিত হোন, আপনি আপনার কাজকে গ্রহণ করেছেন নাকি বাধ্য হয়ে মেনে নিয়েছেন। যদি শেষেরটি হয় তবে আপনার সময় এবং মেধা দুটোরই অপচয় হবে। যখন একটি নতুন চাকরি শুরু করবেন, তখন আপনার কাজ, কাজের মূল্যায়ন এবং এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে আপনার সহকর্মী কিংবা ঊর্ধ্বতন কারও সঙ্গে আলাপ করে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার ভেতরের চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন হতেও পারে।
৬. নিজেকে প্রস্তুত করুন: এক মুহূর্তও অপচয় নয়। আপনার জীবন বৃত্তান্ত এখন থেকে প্রতিনিয়ত আপডেট করুন। কালকেই হয়তোবা আপনার হাতের কাছে ধরা দিতে পারে স্বপ্নের চাকরি। যদি আপনি না জানেন কীভাবে সিভি লিখে এবং কীভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে হয় তবে এখন থেকেই তা শিখতে চেষ্টা করুন।
৭. নমনীয়তা: উগ্রতা সর্বদাই খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। কোনো কাজই জোরপূর্বক করে নেয়া যায় না। আর জোরপূর্বক করে নেয়া হলেও পরবর্তীতে তার কুফল ভোগ করতেই হয়। তাই উগ্রতা নয়, নমনীয়তায় জীবন গড়াটাই যৌক্তিক।
৮. সহিষ্ণুতা: প্রবাদ আছে, ভালো জিনিস একটু দেরিতেই আসে। কোনো কাজেই তাড়াহুড়া করাটা ভালো না। ত্বরিত যে কোনো কাজের মধ্যে ভুল হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
৯. সময় সচেতনতা: প্রত্যেকটা মানুষেরই উচিত সময়ের সঠিক ব্যবহার করা। সময়ের কাজ সময়ে করতে পারলে যে কোনো ব্যক্তিই তার ক্যারিয়ারকে সফল স্থানে নিয়ে যেতে পারবে। অযথা সময় অপচয়কারী প্রয়োজনীয় সময় এসে হাঁপিয়ে ওঠে। ফলে সে তার কাজে ভুল করে। পরে করব বলে ফেলে রাখলে কোনো কাজেরই সফল সমাধান দেয়া সম্ভব নয়। তাই সময় সচেতন হয়ে উঠুন।
সংকলিত