ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১

সংসার সামলে বিসিএস-এর প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ২০:৩৯, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪; আপডেট: ২০:৫৮, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সংসার সামলে বিসিএস-এর প্রস্তুতি

.মানসূরা আক্তার মৌ

যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। যুগে যুগে নারীরা তা প্রমাণ করেছে। অনেকেই মনে করেন বিয়ের পর মেয়েদের আর লেখাপড়া হয় না। বিশেষ করে বিসিএস একটি দীর্ঘ আর কঠিন পথ, সেটা পাড়ি দেওয়া বিবাহিত আর সন্তানের মায়েদের জন্য অনেক কঠিন। অথচ নারীরা তা প্রমাণ করেছে, ইচ্ছাশক্তি থাকলে যে কোনো অবস্থায়ই অনেক কঠিন পথ পাড়ি দেওয়া যায়- এমন উদাহরণ অনেক রয়েছে।

তেমনি একজন ৪০তম বিসিএস নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারের কর্মকর্তা মানসূরা আক্তার মৌ। মৌয়ের মতে, ‘বিসিএসসহ বিভিন্ন চাকরিতে নারীরা নিজেদের মেধার স্বাক্ষর রাখছেন। আমি নিজেই ১২ দিনের বাচ্চা রেখে ভাইভার মুখোমুখি হয়েছি।’ নারীদের জন্য তার পরামর্শ-
১. আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে। কখনোই এটা ভাবা যাবে না যে আপনি ফুরিয়ে গেছেন। বরং বিশ্বাস রাখতে হবে, আপনি অবশ্যই পারবেন।
২. সন্তানের মা কিংবা গৃহিণীদের পক্ষে সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে সময় বের করা। এমন প্রার্থীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতেই হবে। তবে অবশ্যই সেটা যথাযথ উপায়ে। যেমন- রান্নার কাজ ভোরে শেষ করতে পারেন। আগের রাতে শাক-সবজি কেটে গুছিয়ে রাখতে পারেন। রান্নার সময় বইটাও পাশে রাখতে পারেন। রান্না করতে করতে কিছু ভোকাবুলারি মুখস্থ করতে পারেন।
৩. সকাল ৯টার মধ্যেই সকাল আর দুপুরের রান্না শেষ করা। যদি বাচ্চা থাকে, সে ভোরে উঠলে তার খাবারও রেডি করে ফেলতে হবে। এরপর দুপুরের আগেই টানা আড়াই বা তিন ঘণ্টা পড়াশোনার চেষ্টা করুন। রাতের রান্না থাকলে সেটাও গুছিয়ে তাড়াতাড়ি শেষ করে ফেলুন। রাতেও তিন বা চার ঘণ্টা সময় বের করতে হবে।
এই রুটিন অনেকের ক্ষেত্রে হয়তো কাজে লাগবে না, সে ক্ষেত্রে সুবিধামতো রুটিন প্রস্তুত করে প্রস্তুতি নিন। যেহেতু ঘরের অনেক কাজ থাকে আর বিসিএস, বিশেষ করে প্রিলিমিনারির পড়া অনেক রিভিশন দিতে হয়। এক্ষেত্রে আপনি ডিভাইস ব্যবহার করতে পারেন। সকালে বা রাতে জোরে জোরে পড়ে সেটা মোবাইলে রেকর্ড করবেন। এরপর নিজের অডিওগুলো সারা দিন ঘর পরিষ্কার কিংবা রান্না বা অন্য কাজের সময় নিজেই শুনলেন। ফলে কাজের মধ্যেই আপনার রিভিশন হয়ে গেল। দেখবেন এভাবে শুনলে খুব মনে থাকে।
৪. অনেক দিন ধরে পড়াশোনা থেকে দূরে থাকলে কিংবা কোচিং করার সময় না পেলে কিংবা টপিকগুলো বুঝতে সমস্যা হলে ওই বিষয় নিয়ে অনলাইন বা ইউটিউবে সার্চ দিয়ে ধারণা নিতে পারেন। অনেক টিউটরিয়াল পাবেন বিসিএসের প্রস্তুতিমূলক চ্যানেলগুলোতে।
৫. আপনি শূন্য থেকে শুরু করতে চাইলে প্রথমে এক সেট বই আর প্রশ্ন ব্যাংক কিনে ফেলুন। তারপর প্রশ্নগুলো খুব যত্ন করে কয়েকবার শেষ করুন। এরপর বইগুলো প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে শেষ করুন। তখন আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন কোনগুলো গুরুত্বপূর্ণ আর কোনগুলো নয়।
৬. বাসায় পত্রিকা রাখুন। অবসরে নিয়মিত পড়ুন। রাত ৮টার বিটিভির সংবাদ দেখুন। এক মাস পর নিজেই নিজের পরিবর্তন টের পাবেন।
৭. পড়াগুলো রিভাইস দিতে পারেন স্বামী বা সন্তানের সঙ্গে। আপনার বাচ্চার বয়স দু-তিন মাস কিংবা দুই বছর, যা-ই হোক না কেন, তাকে গল্পের ছলে চর্যাপদ বা ভাষা আন্দোলন কিংবা ইসরাইলি আগ্রাসনের কাহিনী বলুন, আপনার রিভিশনও হলো আবার বাচ্চাও গল্প শুনে মজা পেল।
৮. নিয়মিত পরীক্ষা দিতে হবে। মডেল টেস্ট কোথাও গিয়ে দেওয়া সম্ভব না হলে নিজে নিজে রোজ পরীক্ষা দিতে হবে।

চাকরি বাজার ডেস্ক

×