ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

বছরে একটি বিসিএস

চাকরি বাজার ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:৫০, ৫ জুলাই ২০২৪

বছরে একটি বিসিএস

বিসিএসের কার্যক্রম শেষ করতে পরীক্ষা ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে

বছরে একটি বিসিএসের কার্যক্রম শেষ করতে পরীক্ষা ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এর অংশ হিসেবে লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নের উত্তর ক্রমানুসারে লিখতে হবে চাকরিপ্রার্থীদের। এ ছাড়া পরীক্ষকদের খাতা মূল্যায়ন করতে হবে পিএসসিতে বসেই। পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, বিসিএসের কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা সেভাবে আলোর মুখ দেখেনি। আগের তুলনায় বর্তমানে বিসিএসের কার্যক্রম শেষ হতে সময় কম লাগলেও কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন করা যায়নি। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেশকিছু বিষয় সামনে এসেছে। এর মধ্যে লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে অধিক সময় ব্যয় হওয়া এবং পরীক্ষার্থীদের উত্তর ক্রমানুসারে না থাকা অন্যতম।
লিখিত পরীক্ষায় ক্রমানুসারে উত্তর ॥ ৪৬তম বিসিএস থেকে প্রশ্নের ক্রমানুসারে খাতায় উত্তর লেখার বাধ্যবাধকতা রাখা হচ্ছে। পরীক্ষার্থীরা চাইলে অন্য প্রশ্নের উত্তর আগে লিখতে পারবেন। তবে তাদের ক্রমানুসারে জায়গা ফাঁকা রাখতে হবে।
খাতা মূল্যায়নের নির্দিষ্ট পদ্ধতি ॥ পিএসসি কার্যালয়ে বসেই পরীক্ষকদের খাতা মূল্যায়ন করতে হবে। একেকটি দলে ১৩-১৪ জন জনবল থাকবেন এবং একটি নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর দেখার জন্য নির্দিষ্ট পরীক্ষক থাকবেন। 
নতুন পদ্ধতির সুবিধা ॥ এই পদ্ধতি চালু হলে খাতা দেখার মান বৃদ্ধি পাবে এবং সময়ও বাঁচবে। একেকজন পরীক্ষক একেকভাবে দেখার সুযোগও পাবেন না। এতে করে এক বছরে একটি বিসিএস কার্যক্রম সম্পন্ন করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয় গত ৯ মে। এতে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১০ হাজার ৬৩৮ জন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে আগামী আগস্টে। নতুন পদ্ধতি বাস্তবায়িত হলে তাদের সবার খাতা পিএসসি কার্যালয়েই দেখবেন পরীক্ষকরা।

এমন পদ্ধতি বাস্তবায়ন সম্পর্কে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘মূল্যায়নে নতুন পদ্ধতি চালু হলে খাতা দেখার মান বৃদ্ধি পাবে এবং সময়ও বাঁচবে। একই সঙ্গে একেকজন পরীক্ষক একেকভাবে দেখার সুযোগও পাবেন না। সব মিলিয়ে এক বছরে একটি বিসিএস কার্যক্রম সম্পন্ন করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। পাইলটিং হিসেবে ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার গণিত বিষয়ের খাতা পিএসসি কার্যালয়ে দেখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান। 
বিসিএসের প্রার্থী বাছাই করা হয় তিন ধাপে। ধাপগুলো হলো- প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা। প্রথম ধাপে ২০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় ধাপে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা মোট ১১০০ নম্বরের (জেনারেল ও টেকনিক্যাল ক্যাডারের জন্য) লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ২০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়। নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বছরে একটি বিসিএসের সব কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পিএসসি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ৪৭তম বিসিএস থেকে এক বছরের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করা সম্ভব হবে।

ইতোমধ্যে জট কমতে শুরু করেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকবে। গত কয়েক বছরের মতো চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর বিসিএসের নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। আগে এ ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা ছিল। এখন তা দূর হয়েছে। আর এই বিসিএস থেকেই চাকরিপ্রার্থীদের একটি ইউনিক আইডি দেওয়া হবে। এতে এক আবেদনেই একাধিক চাকরির জন্য আবেদন করা সম্ভব হবে।
প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ এবং মৌখিক পরীক্ষার নম্বর প্রদানে গুণগত পরিবর্তন এসেছে বলেও জানিয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফল মাত্র ৯ কার্যদিবস বা ১৩ দিনে প্রকাশ করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও ১৫ দিনের মধ্যেই প্রিলির ফল প্রকাশ করা হবে। আর এখন মৌখিক পরীক্ষার নম্বরও তিনটি শিটে দেওয়া হয়। এর মধ্যে একটি শিট ওএমআর, অন্যগুলো ম্যানুয়াল। ওএমআর শিট থেকে সফটওয়্যারে নম্বর ইনপুট দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ম্যানুয়ালিও মিলিয়ে দেখা হয়।   
চাকরি বাজার ডেস্ক

×