ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

রুটিন করে পড়াশোনা করেছেন সাখী

-

প্রকাশিত: ০১:১৭, ২১ জুলাই ২০২৩

রুটিন করে পড়াশোনা করেছেন সাখী

রাবেয়া আক্তার সাখী

নোয়াখালী সরকারি কলেজের প্রভাষক রাবেয়া আক্তার সাখীর জন্ম ঢাকায় হলেও শৈশবের কিছুটা সময় কেটেছে চট্টগ্রামে। সেখানেই প্রথম স্কুলযাত্রা। মা ফেরদৌসী বেগম এবং বাবা জয়নাল আবেদীন-এর দুই মেয়েকে নিয়ে বরাবরই স্বপ্ন ছিল তারা পড়াশোনা করে নিজেদের এমন জায়গায় নিয়ে যাবেন, যেখানে পরনির্ভরশীরলতা থাকবে না। নিজের একটা পরিচয় থাকবে। হয়েছেও তাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইইঅ এবং গইঅ শেষ করে হয়েছেন বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার কর্মকর্তা। আর বড় বোন চিকিৎসক (স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ)।
তিনি ছেলেবেলা থেকেই পড়াশোনা করেছেন আনন্দ নিয়ে। কোনো রকম প্রেসার বা চাপ অনুভব করেননি। রাবেয়া আক্তার সাখী বলেন, ‘সত্যি বলতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় বিসিএস নিয়ে কোনো স্বপ্ন ছিল না। লক্ষ্য ছিল বিবিএ আর এমবিএতে একটা ভালো সিজিপিএ ধরে রাখার। বিবিএতে (ব্যবস্থাপনা) ৩.৫৫ এবং এমবিএতে (মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) ৩.৭৩ ছিল। বেসরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর হতে বিসিএসের প্রতি ঝোঁক বেড়ে যায়। তখন থেকেই স্বপ্ন দেখা শুরু করি।’
এমবিএ শেষ করার পর একদিন চাচা বলছিলেন, ‘আমার ইচ্ছে মা, তুমি বিসিএস ক্যাডার হও।’ চাচার কথায় বাবাও সায় দেন। সেই থেকে শুরু স্বপ্ন পূরণের নেশা। বিসিএস যাত্রার শুরুটা বেশ কষ্টসাধ্য মনে হয়েছিল সাখীর। এতো বড় সিলেবাস, যার শুরু আছে কিন্তু শেষ বলে কিছু নেই। কিন্তু যখন প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য ভা-ারে প্রবেশ করতেন আর নতুন সব তথ্য জানার সুযোগ খুঁজতেন। তখন বিসিএস এর জন্য পড়াশোনা আত্মতৃপ্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। নিজেকে গতকালের চেয়ে বেশি জ্ঞানী মনে হতো তার। রুটিন করে টার্গেট নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। কোন বিষয়টি কোন দিন পড়বেন বা কতদিনের মধ্যে শেষ করবেন এই নেশায় পেয়ে গিয়েছিল তাকে।
রাবেয়া আক্তার সাখী নতুনদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি- পরিশ্রম, ধৈর্য, সাধনা এবং মেধার সমন্বয়ে বেরিয়ে আসে এক একজন বিসিএস ক্যাডার। তাই শব্দগুলোর তাৎপর্য ধারণ ও বহন করতে হবে। পড়াশোনার কোনো বিকল্প নেই। যত বেশি আত্মতৃপ্তি নিয়ে পড়াশোনা করা যাবে, আত্মবিশ্বাস তত গুণ বেড়ে যাবে। আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তির সাফল্য অনেকাংশেই নিশ্চিত থাকে। তবে পড়াশোনার পাশাপাশি কৌশল প্রয়োগের দক্ষতা সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে আনে। ইংরেজি গ্রামার, বাংলা ব্যাকরণ, গণিত, বিজ্ঞানে বেসিক ভালো করতে হবে।

বেসিক ভালো হলে কোনো প্রশ্নেই পরীক্ষার্থীকে আটকানো যায় না। সাম্প্রতিক খোঁজখবর এবং লিখিত পরীক্ষায় স্ট্যান্ডার্ড প্যাটার্নে লেখার জন্য যে কোনো ইংরেজি এবং বাংলা পত্রিকা পড়ার অভ্যাস প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখে। বিসিএসের ভালো প্রস্তুতি নেয়ার পরও পরীক্ষার দিন সময়ের মূল্যায়ন করতে পারার দক্ষতার ওপরও ক্যাডার হওয়া নির্ভর করে। সবশেষে বলবো, স্বপ্ন শুধু দেখার জন্য নয়, নিজের সাধ্যের সবটুকু দিয়ে জয়ের চেষ্টা করা। চেষ্টায় কোনো ত্রুটি না থাকলে স্বপ্ন জয় অবশ্যই হবে।’
পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবই ছিল তার অনুপ্রেরণা। তবে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা পেয়েছেন নিজের ইচ্ছাশক্তি থেকে। ব্যক্তির ইচ্ছা শক্তিই পারে ক্যারিয়ারে সফলতা বয়ে আনতে। সাখী একজন যোগ্য শিক্ষক হতে চান এবং সুশিক্ষিত ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তুলে দেওয়ার দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকতে চান। তিনি বলেন, ‘বর্তমান কর্মদক্ষতা এবং কর্মস্পৃহাই নির্ধারণ করে নেবে আমার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা।’
চাকরি বাজার ডেস্ক

×