
ছবি: সংগৃহীত
অ্যাডলফ হিটলারের মৃত্যু নিয়ে বহু বছর ধরে নানা জল্পনা-কল্পনা ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ঘুরে বেড়ালেও এবার এ বিষয়ে নতুন তথ্য সামনে এনেছেন জার্মানির হামবুর্গ এপেনডর্ফ বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের ফরেনসিক মেডিসিন ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ক্লাউস পুশেল। ২০ মার্চ প্রকাশিত তাঁর বই ‘দ্য টোড গেট উবের লাইশেন’–এ হিটলারের মৃত্যুর পেছনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন তিনি।
পুশেলের গবেষণা অনুযায়ী, ১৯৪৫ সালের ৩০ এপ্রিল বার্লিনে সোভিয়েত রেড আর্মির সৈন্যরা যখন চ্যান্সেলর ভবনের কাছাকাছি চলে এসেছে, তখনই হিটলার তাঁর বাংকারে আত্মহত্যা করেন। তাঁর মতে, হিটলার একযোগে সায়ানাইড ক্যাপসুল কামড়ে খেয়ে ও মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন।
১৯৯০ সালে মস্কোর সামরিক মহাফেজখানায় রক্ষিত হিটলারের মাথার খুলি ও রাশিয়ান ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করার সুযোগ পান পুশেল। সেই ভিত্তিতেই তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানান, মৃতদেহটি হিটলারেরই ছিল, দাঁতের বিশ্লেষণেও সেটি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বইটিতে একটি চাঞ্চল্যকর তথ্যও উঠে এসেছে—হিটলারের একটি অণ্ডকোষ ছিল না। পুশেল দাবি করেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আহত হওয়ার সময় কিংবা ল্যান্ডসবার্গ কারাগারে থাকাকালে এ বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
পুশেল জানান, হিটলারের মুখে পাওয়া কাচের টুকরো প্রমাণ করে তিনি সায়ানাইড ক্যাপসুল চিবিয়ে খান। এরপর দুই মিনিটের মধ্যেই নিজের মাথার ডান পাশে ৭.৬৫ ক্যালিবারের ওয়ালথার পিস্তল দিয়ে গুলি করেন তিনি। তাঁর মতে, হিটলার আত্মহনন নিশ্চিত করতে একসঙ্গে দুটি প্রাণঘাতী পদ্ধতি অবলম্বন করেন।
হিটলারের নির্দেশ ছিল, মৃত্যুর পর তাঁর দেহ যেন পুড়িয়ে ফেলা হয়। যদিও সোভিয়েত বাহিনী এসে পড়ায় দাহক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি। পরবর্তীতে কেজিবি হিটলারের দেহাবশেষ বহুবার স্থানান্তর করে। ১৯৭০ সালে ম্যাগডেবার্গে কবরস্থ করা হলেও, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙনের আগে সেটি পুড়িয়ে ফেলা হয় এবং ছাই এলবে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। কেবল হিটলারের মাথার খুলিটি সংরক্ষণের জন্য মস্কোতে নিয়ে যাওয়া হয়।
ড. পুশেল ও সাংবাদিক বেটিনা মিটেলাখার যৌথভাবে বইটি প্রকাশ করেছেন, যা হিটলারের মৃত্যুকে ঘিরে বহু পুরনো মিথ ও গুজবের অবসান ঘটাতে সহায়ক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আসিফ