
ছবি: সংগৃহীত
জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগামে সম্প্রতি এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক কর্মকর্তারা হটলাইন সংযোগে কথা বলেছেন এবং ভারত, নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পাকিস্তানের "উসকানিমূলক যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের" বিষয়ে ইসলামাবাদকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা এএনআইকে সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, "গতকাল ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক অভিযানের মহাপরিচালকরা (ডিজিএমও) হটলাইনে কথা বলেন। ভারত, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর উসকানিমূলক যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছে।"
এই কথোপকথনের বিস্তারিত সামনে এসেছে এমন এক দিনে, যখন পাকিস্তান জম্মু অঞ্চলের আন্তর্জাতিক সীমান্তে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে এবং ছয়দিন ধরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর লাগাতার গুলি চালিয়ে আসছে।
এক প্রতিরক্ষা মুখপাত্র বলেন, "২৯-৩০ এপ্রিল রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণরেখার ওপার থেকে বারামুলা ও কুপওয়ারা জেলায় এবং পারগওয়াল সেক্টরে আন্তর্জাতিক সীমান্তে ছোট অস্ত্র দিয়ে উসকানিমূলক গুলি চালিয়েছে।" তিনি জানান, ভারতীয় সেনাবাহিনী যথাযথ জবাব দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সীমান্তে এমন গুলিবিনিময় বিরল এবং পাহেলগাম হামলার পর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এটিকে উত্তেজনার নতুন ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২৬ জন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক, তাঁদের হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল এবং ইন্দাস নদী জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত, যা উভয় দেশের মধ্যে ইন্দাস নদী ব্যবস্থা থেকে পানি বণ্টনের রূপরেখা নির্ধারণ করে।
পাকিস্তান পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ভারতের বিমান সংস্থাগুলোর জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে এবং সব দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্থগিতের হুমকি দিয়েছে— যার মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ শিমলা চুক্তিও। এই চুক্তিতে ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর যুদ্ধবিরতির রেখাকেই নিয়ন্ত্রণরেখা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এই ঘোষণার পরের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনকে বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এছাড়া, বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত সর্বোচ্চ সিদ্ধান্তগ্রহণকারী সংস্থা, মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা কমিটির বৈঠক। এর আগের দিন, মঙ্গলবার, তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদি সেনাবাহিনীকে “সম্পূর্ণ অপারেশনাল স্বাধীনতা” দিয়েছেন— কবে, কোথায় ও কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে, তা নির্ধারণের জন্য।
তিনি আরও বলেন, "সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের জাতীয় প্রতিজ্ঞা অত্যন্ত স্পষ্ট" এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ওপর তাঁর "সম্পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা" রয়েছে।
শহীদ