
ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তান যেহেতু একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ, তাই কেউ চাইলেই এত সহজে দেশটিতে হামলা চালাতে পারবে না— এমন মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরীফ।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘পাক-ভারত সীমান্তে উত্তেজনা চলছে ঠিকই, তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আল্লাহ আমাদের সেনাবাহিনীকে এমন শক্তি দিয়েছেন, যা আমাদের রক্ষা করবে। পাকিস্তানকে আক্রমণ করার আগে শত্রুকে দশবার ভাবতে হবে। কারণ সবাই জানে, পাকিস্তান একটি পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক মতভেদ থাকতেই পারে, কিন্তু দেশের স্বার্থে আমাদের সবাইকে ইস্পাতের প্রাচীরের মতো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শহীদদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই পাকিস্তান আজ শক্তিশালী হয়েছে। পাকিস্তানকে পারমাণবিক শক্তিধর দেশে পরিণত করতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের ভূমিকা ঐতিহাসিক।’
এ বক্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। পুলওয়ামা হামলার পর এটিই কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় হামলা বলে জানায় ভারত।
ঘটনার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলে ভারত। প্রতিক্রিয়ায় দিল্লি একতরফাভাবে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্ত বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। জবাবে পাকিস্তানও সিমলা চুক্তি স্থগিত, আকাশসীমা বন্ধ এবং কড়া বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি পারমাণবিক হামলার জন্য প্রস্তুতির কথাও জানিয়ে দেয়।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ ও রেলমন্ত্রী মোহাম্মদ হানিফ আব্বাসি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।
এদিকে পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো সিন্ধু পানি ইস্যুতে ভারতকে সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেন, সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত।
অন্যদিকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা দিয়েছেন, ‘পেহেলগাম হামলার প্রতিটি সন্ত্রাসী ও তাদের মদতদাতাদের খুঁজে বের করে এমন শাস্তি দেওয়া হবে, যা তারা কল্পনাও করতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, সময় এসেছে সন্ত্রাসের আশ্রয়স্থল সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার।
দুই দেশের এই উত্তপ্ত অবস্থার মধ্যে মরিয়ম নওয়াজের ‘পারমাণবিক’ মন্তব্য ফের আলোচনা তৈরি করেছে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও।
এসএফ