
ছবি: সংগৃহীত
ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার কূটনৈতিক উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এই হামলার পর ভারত যখন ইসলামাবাদের প্রতি কঠোর অবস্থান নেয়, তখন পাকিস্তান পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারতীয় এয়ারলাইন্সগুলোর জন্য নিজেদের আকাশপথ বন্ধ করে দেয়।
পাকিস্তানের এই সিদ্ধান্ত সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে ভারত থেকে উত্তর আমেরিকাগামী এবং সেখান থেকে ভারতে ফেরত আসা ফ্লাইটগুলোর ওপর। বিশেষ করে দিল্লি থেকে সান ফ্রান্সিসকো, শিকাগো, নিউ ইয়র্কের মতো শহরে যাওয়া ও আসা ফ্লাইটগুলোর যাত্রা সময় বেড়ে গেছে অনেকটাই।
ভারতের ইংরেজি দৈনিক এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দিল্লি-সান ফ্রান্সিসকো রুটের ফ্লাইটের সময় বেড়ে গেছে প্রায় ৪ ঘণ্টা। আগে যেখানে এ রুটে ফ্লাইটে সময় লাগত প্রায় ১৫ ঘণ্টা, এখন তা গিয়ে ঠেকেছে ১৯ ঘণ্টার বেশি।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট Flightradar24 জানিয়েছে, পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে উড়তে গিয়ে ভারতীয় ফ্লাইটগুলোকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে রাস্তায় জ্বালানি ভরার জন্য মাঝপথে থামতে হচ্ছে। এই রিফুয়েলিংয়ের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে ইউরোপের দুটি শহর— ভিয়েনা (অস্ট্রিয়া) এবং কোপেনহেগেন (ডেনমার্ক)।
উদাহরণস্বরূপ, দিল্লি থেকে শিকাগোগামী ফ্লাইট আগে পাকিস্তানের আকাশপথ হয়ে সরাসরি যেত, যা ছিল প্রায় ১২,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং এতে সময় লাগত প্রায় ১৪ ঘণ্টা ৪৭ মিনিট। এখন একই ফ্লাইট প্রায় ১৫,০০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে, যার ফলে যাত্রা সময় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ ঘণ্টারও বেশি।
পেহেলগাম হামলার পর ভারতের পক্ষ থেকে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তোলা হয়। এর জেরে দিল্লি পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু নদীর পানিচুক্তি স্থগিত করে এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সীমিত করে ফেলে। পাকিস্তান পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়ে আন্তর্জাতিক বিমান যোগাযোগে বড় ধাক্কা দেয়।
এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ তৈরি করেছে, কারণ ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপীয় দেশগুলোর দীর্ঘ-দূরত্বের বিমানে এখন বড় ধরনের দেরি হচ্ছে এবং বিমান পরিবহন খরচও বেড়ে গেছে।
সূত্র: এনডিটিভি
ফারুক