
ছবি : সংগৃহীত
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি এক বক্তব্যে রাষ্ট্রের অতি গোপনীয় তথ্য ফাঁস করে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বিরোধী দলের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন। লেবাননের হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের ব্যবহৃত পেজার ডিভাইস বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত মোসাদ পরিচালিত একটি গোপন অভিযানের তথ্য তিনি জনসম্মুখে প্রকাশ করেন, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে অভিহিত করা হয়েছে।
গত সোমবার জেরুজালেমে অনুষ্ঠিত জিউইশ নিউজ সিন্ডিকেট কনফারেন্সে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নেতানিয়াহু হিজবুল্লাহর পেজার কমিউনিকেশন ডিভাইস নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি জানান, এসব ডিভাইস ইরানের কাছে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল এবং মোসাদ সেই তথ্য পেয়েই তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান পরিচালনা করে।
নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা জানতে পারি হিজবুল্লাহ তিনটি পেজার ডিভাইস ইরানে স্ক্যান করার জন্য পাঠিয়েছে। ফলে নির্ধারিত সময়ের তিন সপ্তাহ আগে অভিযান পরিচালনা করে স্ক্যানারসহ ডিভাইসগুলো ধ্বংস করা হয়।”
তবে প্রধানমন্ত্রীর এই বেফাঁস মন্তব্যকে কেন্দ্র করে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিরোধী দলীয় নেতা ইয়া লাপিত একে “দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ” বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এ ধরনের সংবেদনশীল তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী দেশের জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছেন।”
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালেই ‘পেজার অপারেশন’ এর পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছিল। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের ব্যবহৃত পেজার বিস্ফোরণের মাধ্যমে ইসরায়েল অভিনব কায়দায় লেবাননে হামলা চালায়। প্রথম বিস্ফোরণের ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে চালানো হয় আরও এক দফা সিরিজ বোমা হামলা, যেখানে একযোগে বিস্ফোরিত হয় রেডিও, ল্যাপটপ, গাড়ি ও অন্যান্য ওয়ারলেস ডিভাইস।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এমন স্পর্শকাতর তথ্য ফাঁস শুধুমাত্র কূটনৈতিক সম্পর্কেই চাপ তৈরি করবে না, বরং ভবিষ্যতের গোপন অভিযানগুলোকেও মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।
আঁখি