
মার্ক কার্নির
কানাডার ৪৫তম জাতীয় নির্বাচনে নাটকীয় জয় পেয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির নেতৃত্বাধীন মধ্য-বামপন্থি লিবারেল পার্টি। সোমবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কানাডা দখলের হুমকি ও বাণিজ্য যুদ্ধ। মঙ্গলবার বিজয় ভাষণে কার্নি বলেন, আমেরিকার সঙ্গে আমাদের পুরানো সম্পর্ক-যেটি ক্রমাগতভাবে একীভূত হওয়ার ওপর ভিত্তি করে গঠিত হয়েছিল-তা শেষ।
তবে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য যে সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার চেয়েছিলেন, তা অর্জন করতে পারেননি। মার্কিন নেতৃত্বাধীন উন্মুক্ত বৈশ্বিক বাণিজ্যব্যবস্থা, যেটির ওপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে কানাডা নির্ভর করে এসেছে যেটি নিখুঁত না হলেও আমাদের বহু দশক ধরে সমৃদ্ধি এনে দিয়েছে এখন সেটিও শেষ। খবর বিবিসি ও আলজাজিরা অনলাইনের।
মার্ক কার্নি আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমাদেরকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছেন যাতে আমেরিকা আমাদের দখল করতে পারে। কিন্তু এটা কখনোই ঘটবে না। তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকলেও কানাডাবাসীর ওপর তার বিশ্বাস আছে। কারণ কানাডা কেবল একটি জাতি নয়, এর চেয়েও বেশি কিছু। আমরা একসঙ্গে আছি এবং সবসময় একটি ফেডারেশন হিসেবে থাকব। আমরা নিখুঁত নই, তবে ভালোর জন্য চেষ্টা করি।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় আমাদের জমি, আমাদের সম্পদ, আমাদের পানি, আমাদের দেশ। এগুলো কোনো ফাঁকা হুমকি নয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাদের ভাঙার চেষ্টা করছেন যাতে আমেরিকা আমাদের অধিকার করতে পারে। কিন্তু তা কখনোই হবে না। নির্বাচনের আগে কার্নি ওয়াশিংটনের সঙ্গে কঠোর অবস্থানের প্রতিশ্রুতি দেন এবং বলেন, কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা কমাতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে।
ডানপন্থি কনজারভেটিভ পার্টিও নির্বাচনে প্রত্যাশার চেয়ে ভালো করেছে। তারা ৯ বছরের লিবারেল শাসনের পর পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিল। তবে কানাডায় সংখ্যালঘু সরকার সাধারণত ২ থেকে আড়াই বছরের বেশি স্থায়ী হয় না। কনজারভেটিভ নেতা পিয়েরে পয়েলিয়েভ্রে লিবারেলদের কাছে পরাজয় স্বীকার করে বলেন, তার দল সরকারকে জবাবদিহির মধ্যে রাখবে। এই ফলাফল লিবারেলদের জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ প্রত্যাবর্তন।
কারণ জানুয়ারিতে তারা ২০ পয়েন্ট পিছিয়ে ছিল। এরপর ট্রুডো পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুল্ক ও দখলের হুমকি দিয়ে নির্বাচনের কেন্দ্রে উঠে আসেন। গত সপ্তাহে ট্রাম্প বলেন, তিনি কানাডায় নির্মিত গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে পারেন, কারণ আমেরিকা সেগুলো চায় না। এর আগে তিনি বলেছিলেন, অর্থনৈতিক বলপ্রয়োগের মাধ্যমে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্যে পরিণত করা হবে।