
ছবি: সংগৃহীত
ভারতের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনা বাড়ার মধ্যে নিজেদের সামরিক প্রস্তুতি জোরদারের ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ। তিনি জানিয়েছেন, ভারত থেকে সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে ‘কৌশলগত প্রস্তুতি’ নিতে বলা হয়েছে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ইসলামাবাদে রয়টার্সকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "আমরা আমাদের বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করেছি, কারণ আমরা মনে করছি ভারতের আক্রমণ এখন আসন্ন। পরিস্থিতি অনুযায়ী কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে।"
প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা জানিয়েছেন আসিফ। তিনি বলেছেন, আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছি। তবে আমাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে তারা (সেনাবাহিনী) পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে।
এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে যখন ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নতুন করে চরমে পৌঁছেছে। গত ২২ এপ্রিল ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়। হামলার দায় দিল্লি সরাসরি ইসলামাবাদের ওপর চাপিয়েছে। পাকিস্তান যদিও এতে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এই ঘটনার জেরে ভারত সরকার ঘোষণা দিয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হচ্ছে। এই চুক্তি ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত হয় এবং এখন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে পানি ব্যবস্থাপনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ভিত্তি হিসেবে ছিল।
পাকিস্তান এই সিদ্ধান্তকে 'যুদ্ধের উস্কানি' বলে আখ্যা দিয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফ বলেন, “ভারতের বক্তব্য ক্রমেই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে। সেনাবাহিনী সরকারকে জানিয়েছে যে, সীমান্তপারে ভারতের আগ্রাসন খুব সম্ভবত আসন্ন।”
তবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ নিয়ে কেন এ আশঙ্কা তৈরি হয়েছে— সে বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি আসিফ। তবে সূত্রের দাবি, সীমান্তে সেনা মোতায়েন, গোয়েন্দা তথ্য ও কূটনৈতিক ভাষ্যের ধারাবাহিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতেই পাকিস্তান এ প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, পেহেলগাম হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক ফের যুদ্ধাবস্থার দিকে মোড় নিচ্ছে। পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতের মতো সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক উত্তেজনাও বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ফারুক