ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২

ইয়েমেনে মার্কিন হামলায় নিহত ৬৮

প্রকাশিত: ১৬:৫৩, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

ইয়েমেনে মার্কিন হামলায় নিহত ৬৮

ছবি: সংগৃহীত।

হুতি নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি আটককেন্দ্রে মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত ৬৮ জন আফ্রিকান অভিবাসী প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটির টেলিভিশন চ্যানেল আল মাসিরাহ। 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাদা প্রদেশে অবস্থিত ওই আটককেন্দ্রে হামলায় আরও ৪৭ জন অভিবাসী গুরুতর আহত হয়েছেন। অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হামলার পর আল মাসিরাহ টিভি যে গ্রাফিক ফুটেজ সম্প্রচার করেছে, তাতে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া বহু মরদেহের দৃশ্য দেখা গেছে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মার্কিন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য আসেনি।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) জানিয়েছিল, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে হুতিদের ওপর হামলা জোরদার করা হয়েছে। ১৫ মার্চ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ৮০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। সেন্টকম জানায়, এসব অভিযানে বহু হুতি যোদ্ধা ও নেতাকে হত্যা করা হয়েছে, যার মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন কর্মসূচির শীর্ষ কর্মকর্তারাও আছেন।

হুতি কর্তৃপক্ষের দাবি, মার্কিন হামলায় অসংখ্য বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। তবে তারা হুতি সদস্যদের মধ্যে হতাহতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম বলেই উল্লেখ করেছে।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, হামলার সময় সাদা প্রদেশের ওই আটককেন্দ্রে ১১৫ জন আফ্রিকান অভিবাসী অবস্থান করছিলেন।

ইয়েমেনে ১১ বছরের সংঘাতের ফলে চরম মানবিক সংকট সৃষ্টি হলেও আফ্রিকার হর্ন অব আফ্রিকা অঞ্চল থেকে অভিবাসীদের ঢল থামেনি। জীবিকার সন্ধানে সৌদি আরবে পৌঁছানোর আশায় তারা নৌকায় করে ইয়েমেনে আসছেন। তবে বাস্তবে তাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে শোষণ, আটক, নির্যাতন এবং যুদ্ধক্ষেত্র পেরিয়ে জীবন ঝুঁকির মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, ২০২৪ সালেই প্রায় ৬০ হাজার ৯০০ অভিবাসী ইয়েমেনে পাড়ি জমিয়েছে, যাদের অধিকাংশই চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়েছে।

এর আগে মাসের শুরুতে, রাস ইসা তেল টার্মিনালে মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত ৭৪ জন নিহত এবং ১৭১ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। হুতি-চালিত সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

অন্যদিকে, সেন্টকম জানায়, ওই হামলার ফলে রাস ইসার জ্বালানি গ্রহণের সক্ষমতা ধ্বংস হয়েছে, যা হুতিদের অর্থ সংগ্রহ এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল করেছে।

গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুতি নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোর ওপর ব্যাপক হামলার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে হুতিদের সম্পূর্ণ ধ্বংসের হুমকি দেন এবং ইরানকেও সতর্ক করেন, যাতে তারা হুতিদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ রাখে। যদিও ইরান বারবার এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

সূত্র: বিবিসি

সায়মা ইসলাম

×