
ছবি : সংগৃহীত
খালিস্তান আন্দোলনের সাম্প্রতিক গতিপথ ও দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরপতবন্ত সিং পান্নুনের বক্তব্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত তার ভিডিও বার্তায় তিনি ভারতের বিরুদ্ধে তীব্র হুঁশিয়ারি উচ্চারণের পাশাপাশি পাকিস্তানের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। তার এই বক্তব্য ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের জটিলতাকে আরও গভীরতর করে তুলেছে এবং উপমহাদেশে উত্তেজনার নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
পান্নুন ঘোষণা করেছেন যে ভারতের যেকোনো সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পাঞ্জাবের শিখ সম্প্রদায় পাকিস্তানের পাশে দাঁড়াবে। তার ভাষ্যমতে, “আমরা দুই কোটি শিখ পাকিস্তানের পক্ষে এক প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে আছি।” এই বক্তব্যে তিনি শুধু পাকিস্তানের প্রতি সমর্থনই জানাননি, বরং ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সংকেতও দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন যে শিখরা কখনোই পাঞ্জাবকে ভারতের সেনাবাহিনীর পাকিস্তান আক্রমণের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে দেবে না। ভারতের সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন নিয়ে তিনি কড়া সমালোচনা করে বলেন, “ভারতে বিশেষ করে শিখদের প্রতি যে দমননীতি চলছে, তা আজ গোটা বিশ্ব দেখছে।”
পান্নুন তার বক্তব্যে কাশ্মীর পরিস্থিতিকে তুলে ধরে বলেন, “এখন ১৯৬৫ বা ১৯৭১ সাল নয়, এটা ২০২৫। পরিস্থিতি পাল্টে গেছে।” এর মাধ্যমে তিনি বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন যে অতীতের মতো আর আগ্রাসন সহজ হবে না এবং বর্তমান বাস্তবতা অনেক ভিন্ন। পাকিস্তানের নাম ও ঐতিহ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “‘পাকিস্তান’ শব্দের অর্থই পবিত্রতা। আমাদের ঐতিহ্য হলো, আমরা কখনো আগ্রাসন শুরু করি না, করবোও না।” এতে তিনি একদিকে শান্তির বার্তা দিলেও অন্যদিকে আক্রমণের সম্ভাব্য জবাবের ইঙ্গিতও দিয়েছেন।
ভারতের নেতৃত্বের উদ্দেশে পান্নুনের কণ্ঠে ছিল কঠোর হুঁশিয়ারি। তিনি বলেন, “যে আক্রমণ করে, সে টেকে না - সেটা ইন্দিরা গান্ধীই হোক, নরেন্দ্র মোদি হোক বা অমিত শাহ।” এই মন্তব্যে তিনি অতীত ইতিহাসের ভয়াবহ দিক স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি আরও ঘোষণা করেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
পান্নুন ভারতের পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক হামলাকে ‘লোক দেখানো’ বলে অভিহিত করে অভিযোগ করেন যে এই হামলা ভারতের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ, যার উদ্দেশ্য হলো হিন্দু নাগরিকদের প্রাণ দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটা। তিনি দাবি করেন যে সরকার এইভাবে নিজেদের নাগরিকদেরই বলি দিচ্ছে নির্বাচনী সুবিধা আদায়ের জন্য।
আঁখি