ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২

কিমের কাছের বিমানঘাঁটিতেই যুদ্ধবিমান বাড়াচ্ছেন ট্রাম্প, কীসের ইঙ্গিত দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র?

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ২৮ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ০৬:২৮, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

কিমের কাছের বিমানঘাঁটিতেই যুদ্ধবিমান বাড়াচ্ছেন ট্রাম্প, কীসের ইঙ্গিত দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র?

ছবি: প্রতীকী

প্রথমবার ক্ষমতায় এসে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠক করে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় ফেরার পর এখনো সেই উদ্যোগ নেননি তিনি। বরং চিরাচরিত অভ্যাসে উত্তর কোরিয়ার ওপর চাপ বাড়াচ্ছেন ট্রাম্প প্রশাসন।

সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়ার ওসান বিমানঘাঁটিতে মোতায়েন করা হচ্ছে অতিরিক্ত যুদ্ধবিমান। দুই কোরিয়ার মাঝে অবস্থিত বেসামরিক এলাকা থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ঘাঁটিতে চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যে মার্কিন বিমান বাহিনীর সপ্তম বহর একটি সুপার স্কোয়াড ড্রোন ইউনিট প্রতিষ্ঠা করবে।

এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে আরও ৩১টি এফ-১৬ডি ফ্যালকন ফাইটার বিমান মোতায়ন করা হচ্ছে ওসানে। বর্তমানে সেখানে ২০টি এফ-১৬ডি বিমান রয়েছে। অর্থাৎ ১৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে যুদ্ধবিমান সংখ্যা। পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার কুনসান বিমানঘাঁটি থেকে প্রায় ১ হাজার সামরিক সদস্যকে ওসানে স্থানান্তর করা হবে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, এই সামরিক সমাবেশ শুধু ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াবে তাই নয়, এটি কৌশলগত সুবিধার দিক থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কারও কারও মতে, দক্ষিণ কোরিয়ার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবেই যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিচ্ছে। বিশেষ করে উত্তর কোরিয়ার অনিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ও দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা নৌবাহিনীর দৃঢ় অবস্থান যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি মানে শুধু উত্তর কোরিয়া ও চীন নয়, রাশিয়াকেও সতর্কবার্তা দেওয়া। ওসান বিমানঘাঁটিতে যুদ্ধবিমান সংখ্যা বাড়ানো হলে দক্ষিণ কোরিয়া এবং মিত্র জাপানও এই নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় আসবে।

ওসান ঘাঁটির কৌশলগত দুটি বড় সুবিধা রয়েছে, এখান থেকে দ্রুত প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া যায় এবং অবস্থানগত কারণে এটি উত্তর কোরিয়া, চীন ও রাশিয়ার সম্ভাব্য আগ্রাসন রোধে ভূমিকা রাখতে পারে।

ঐতিহাসিকভাবে, কোরিয়া যুদ্ধের সময় ১৯৫০ এর দশকে মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলো ওসান বিমানঘাঁটি থেকেই উত্তর কোরিয়া ও চীনা বাহিনীর বিরুদ্ধে বড় ভূমিকা রেখেছিল। স্নায়ুযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র এফ-৮৬ সাবরে ও এফ-৪ ফ্যান্টম ফাইটার মোতায়ন করেছিল এই ঘাঁটিতে। সেই ধারাবাহিকতায় ফ্রিডম ফ্ল্যাগ ও উলচি ফ্রিডম শিল্ড নামে যৌথ সামরিক মহড়ার মাধ্যমে ওসানের কৌশলগত গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তোলে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=bfFn6UlCIy0

রাকিব

×