
ছবিঃ সংগৃহীত
যেখানে শক্তি ছিল অহংকারের, আজ সেখানে নতজানু নীরবতা। ইয়েমেনের হুথিরা ইসরাইলের আয়রন ডোমকে চূর্ণ করে নিজেদের অস্তিত্বের গর্জন তুলেছে।
‘প্যালেস্টাইন-টু’ হাইপারসোনিক ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে তারা ঘোষণা দিয়েছে— "আমরা হারিনি, হারবো না।"
ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠীর কাছে এবার নতজানু হলো ইসরাইলের সামরিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) হুথি যোদ্ধারা দাবি করেছে, তারা ইসরাইলের নেভাতিম বিমানঘাঁটিতে ‘প্যালেস্টাইন-টু’ হাইপারসোনিক ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সফলভাবে আঘাত হেনেছে।
হুথি সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি গর্জে উঠে বলেছেন, "ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে আমাদের ন্যায়সঙ্গত প্রতিশোধের সামনে।"
‘প্যালেস্টাইন-টু’ ক্ষেপণাস্ত্র পৃথিবীর অন্যতম দ্রুততম অস্ত্র, যা সরাসরি পৌঁছে গেছে ইসরাইলের হৃদপিণ্ডে। হুথি মুখপাত্রের দাবি, ক্ষেপণাস্ত্রটি সফলভাবে লক্ষ্যে পৌঁছেছে, এবং ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এটিকে থামাতে ব্যর্থ হয়েছে।
এর আগে ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছিল, ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র তারা ইসরাইলের আকাশসীমায় ঢোকার আগেই প্রতিহত করেছে। তবে হুথির বক্তব্য অনুযায়ী, ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে।
একটির পর একটি বিভ্রান্তিকর বিবৃতি দিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে চাইছে তেল আবিব। তবে হুথির কাছ থেকে ছুটে আসা এই আগুন ইসরাইলের সব প্রযুক্তির মুখোশ খুলে দিচ্ছে।
ইয়েমেনের ধূলিমাখা পথ থেকে ছুটে আসা প্রতিরোধের এই আগুন জন্ম নিয়েছে ফিলিস্তিনের কফিনবন্দি শিশুদের আর্তনাদ থেকে। গাজার প্রতিটি ইটের নিচে লুকিয়ে আছে নিষ্পাপ স্বপ্নের লাশ।
বিশ্বের বাঘা বাঘা শাসকরা যখন কূটনীতির ঠান্ডা টেবিলে মুনাফার হিসাব মেলায়, তখন ইয়েমেনের হুথিরা বলে দেয়— "রক্তের ঋণ রক্তেই শোধ হবে।"
২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে হুথি গোষ্ঠী রেড সি, আরব সাগর, বাব এল-মান্দাব প্রণালী ও এডেন উপসাগরে চলাচলকারী জাহাজগুলো লক্ষ্য করে একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে।
গাজায় ইসরাইলের অব্যাহত সামরিক অভিযানে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৫১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন; নারী ও শিশুরাও বাদ পড়েনি এই নির্মমতার হাত থেকে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে হামাস-ইসরাইল যুদ্ধবিরতির সময় হুথি সাময়িকভাবে হামলা বন্ধ রেখেছিল। তবে সম্প্রতি ইসরাইল ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করায়, হুথি গোষ্ঠী আবারও আক্রমণ শুরু করে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, হুথির এই পাল্টা হামলা শুধু মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক সমীকরণই বদলাচ্ছে না, বরং ইসরাইলের দুর্ভেদ্য প্রতিরক্ষা গুহকেও প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। বিশেষ করে, হাইপারসোনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে হুথিরা যে সক্ষমতা দেখিয়েছে, তা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
ইমরান