
ছবি: সংগৃহীত
ইরানের বন্দর আব্বাসের কাছে শহিদ রাজয়ি বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত আটজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৫০ জনের বেশি। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
বিস্ফোরণের সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বন্দরের একটি বিপজ্জনক রাসায়নিক সংরক্ষণ ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড থেকেই এ বিস্ফোরণ ঘটেছে। বন্দরটির শুল্ক কার্যালয়ের বিবৃতি উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এ তথ্য জানিয়েছে।
রাষ্ট্রীয় টিভিতে সম্প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, বন্দরের এলাকা থেকে ঘন কালো ধোঁয়া উড়ছে। বহু কনটেইনার দাউ দাউ করে জ্বলতে দেখা গেছে, যেগুলো নেভাতে হেলিকপ্টারের সাহায্য নিতে হয়েছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বিস্ফোরণে হতাহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। পাশাপাশি, ‘পরিস্থিতি ও কারণ খতিয়ে দেখতে’ দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসকান্দার মোমেনিকে ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
রাজয়ি বন্দর ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে এক হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরে, বন্দর আব্বাস শহরের পশ্চিমদিকে অবস্থিত। হরমুজ প্রণালির উত্তরে অবস্থিত এই বন্দরটিকে ইরানের সবচেয়ে উন্নত কনটেইনার বন্দর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। হরমুজ প্রণালির মাধ্যমে বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ তেল পরিবাহিত হয়, যা এই এলাকার কৌলগশত গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রধান মেহরদাদ হাসানজাদে জানিয়েছেন, সংরক্ষিত কয়েকটি কনটেইনার বিস্ফোরণের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে নিকটবর্তী চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, বিস্ফোরণের শক্তি এতটাই প্রবল ছিল যে ৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। তাসনিম বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, বন্দরের অধিকাংশ ভবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে, ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত ন্যাশনাল ইরানিয়ান অয়েল প্রোডাক্টস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিস্ফোরণের সঙ্গে কোনো তেল পরিশোধনকেন্দ্র, জ্বালানি ট্যাংক, বিতরণকেন্দ্র বা পাইপলাইনের কোনো সংযোগ নেই। বন্দর আব্বাসের তেল স্থাপনাগুলো স্বাভাবিকভাবেই পরিচালিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইরানে এ ধরনের বড় বিস্ফোরণ বিরল ঘটনা। তবে কয়েক মাস আগেই পূর্বাঞ্চলীয় তাবাসে একটি কয়লাখনিতে গ্যাস লিকেজ থেকে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় ৫০ জনের বেশি নিহত হয়েছিলেন।
বিস্ফোরণের সময় ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা ওমানে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় ব্যস্ত ছিলেন বলে জানা গেছে।
এসএফ