
দেশ ছাড়তে নিষেধ করা থেকে শুরু করে ডিগ্রি শেষ করার গাইডলাইন, সবকিছুতে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন বিদেশি শিক্ষার্থীদের সহায়তা করছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন দমন নীতির মোকাবিলায়।
প্রথমে ইসরায়েল-বিরোধী বিক্ষোভে যুক্ত শিক্ষার্থীদের আটক করা হয়। এরপর সামান্য অপরাধ কিংবা গ্রেপ্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়নের টার্গেট করা হয়।
এ পরিস্থিতিতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরামর্শদাতারা চুপিচুপি বিদেশি শিক্ষার্থীদের আইনজীবী নিয়োগের এবং আইনি প্রক্রিয়া চলাকালীন নিয়মিত ক্লাস করার পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলা দুই ডজনেরও বেশি শিক্ষার্থী, অভিবাসন আইনজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তারা।
এটি শুধু অর্থনৈতিক বিষয় নয়। এমআইটি প্রেসিডেন্ট স্যালি কর্নব্লুথ বলেন, তার বিশ্ববিদ্যালয়টি ‘একটি গর্বিত মার্কিন প্রতিষ্ঠান’, তবে ‘বিদেশ থেকে আসা শিক্ষার্থী ও গবেষকরা না থাকলে আমাদের কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো।’
ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশনের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত অর্ধেকেরও বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী ভারত ও চীনের।
চলতি বছরের মার্চের শেষ দিক থেকে ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) ৪,৭০০-এর বেশি শিক্ষার্থীর নাম স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ইনফরমেশন সিস্টেম (SEVIS) থেকে মুছে দিয়েছে, প্রায়শই ‘অপরাধমূলক কার্যকলাপ’-এর অভিযোগ দেখিয়ে, জানিয়েছে আমেরিকান ইমিগ্রেশন লইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (AILA)।
এসবের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ভারতীয় শিক্ষার্থী, যারা Optional Practical Training (OPT) কর্মসূচির আওতায় কাজ করছিলেন বলে AILA’র ৩২৭টি মামলার বিশ্লেষণে দেখা গেছে।
ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন SEVIS স্ট্যাটাস হারানো শিক্ষার্থীদের দ্রুত যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “যদি আপনি আমাদের দেশে অবৈধভাবে থাকেন, আমরা আপনাকে গ্রেপ্তার করব, বিতাড়ন করব এবং আর কখনো ফেরার সুযোগ দেব না।”
তবে শুক্রবার SEVIS থেকে নাম বাতিলের সিদ্ধান্ত বদলের পর DHS তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
রয়টার্সের তথ্যমতে, SEVIS থেকে বাদ পড়া ২০০-রও বেশি শিক্ষার্থী আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ পেয়ে আপাতত প্রশাসনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা পেয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যারা ফুল-টাইম শিক্ষার্থী এবং SEVIS স্ট্যাটাস হারিয়েছেন, তাদের আইনজীবী নিয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যারা তাদের নাম মুছে ফেলার বিরুদ্ধে আইনি চ্যালেঞ্জ করেছেন, তাদের ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক বিশ্ববিদ্যালয় পরামর্শদাতা, যিনি পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছেন।
সূত্র: রয়টার্স
মুমু